মায়াপুরে মানুষের ঢল। রবিবার। ছবি: নিজস্ব চিত্র
গুমোট ভাব কিছুটা যেন কাটল।
বড়দিনের হাত ধরে ভিড়ের দেখা মিলল নবদ্বীপ, মায়াপুর, বেথুয়াডহরি, হাজারদুয়ারি, সবুজ দ্বীপের মতো নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু এলাকায়। বছরের শেষ রবিবারের এই ভিড়টা দেখে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, অন্য বছর ডিসেম্বর পড়তে না পড়তেই পিকনিক পার্টি ও পর্যটকদের ভিড় সামাল দিতে তাঁরা হিমশিম খেতেন। কিন্তু এ বার নোট বাতিলের গেরোয় ব্যবসা শিকেয় ওঠার জোগাড় হয়েছিল। তাঁরা তাকিয়ে ছিলেন এই বড়দিনের দিকে। সেই বড়দিন তাঁদের একেবারেই নিরাশ করেনি।
তবে ভিড় যে আগের বছরগুলোর মতো হয়নি তা মানছেন সকলেই। মুর্শিদাবাদের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘একেবারে না হওয়ার থেকে কিছু তো ভাল। সামনে নতুন বছর। আশা করছি, আস্তে আস্তে এ বার ভিড় বাড়বে।’’
এ দিন সকাল থেকে পিকনিক দলের ভিড় ছিল জঙ্গিপুর সবুজ দ্বীপে। তবে শব্দ দূষণের আশঙ্কায় ডিজে নিয়ে আসা সাতটি পিকনিক দলকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, ভিড় এমনিতেই এ বার কম হচ্ছে। কিন্তু ভিড় বাড়াতে সবুজ দ্বীপের নিয়ম-কানুনের সঙ্গে আপস করা যাবে না। ডিজে-র দৌরাত্ম্যে অন্য লোকজনের বড় অসুবিধায় পড়তে হয়। সেই কারণে ওই সাতটি দলকে এ দিন ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সবুজ দ্বীপে লোক টানতে এ বছর টয় ট্রেন-সহ বেশ কিছু ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সেই নিরিখে এ দিন ভিড় হয়নি বলেই দাবি জঙ্গিপুর পুর কর্তৃপক্ষের।
পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলছেন, ‘‘নোটের গুঁতোয় এ বার সব হিসেব গুলিয়ে গেল। রবিবার বিকেল পর্যন্ত সাকুল্যে ২৮টি পিকনিকের দল এসেছে। তবে নতুন বছর থেকে ভিড় বাড়তে পারেই বলেই মনে হচ্ছে।’’ গত বছর বড়দিনে যত সংখ্যক পর্যটক হাজারদুয়ারি প্রাসাদ ও সংগ্রহশালা দেখতে ভিড় করেছিলেন, এ বছর তার অর্ধেক পর্যটকেরও দেখা মেলেনি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘এ বছর মতিঝিল প্রকৃতি তীর্থে অন্তত হাজার পঁচিশেক পর্যটকের ভিড় হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু সব মিলিয়ে এ দিন পর্যটক এসেছিলেন প্রায় ১৫ হাজার।’’ লালবাগ পর্যটন সহায়তা কেন্দ্রের কর্ণধার স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত বছর ২৫ ডিসেম্বর যা ভিড় হয়েছিল, সেই তুলনায় এ বছর ভিড় নেই বললেই চলে। নোট বাতিলের কারণেই এমন দশা।’’
তবে সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বড়দিনে ভাল ভিড় দেখা গেল মায়াপুরে। সকাল থেকেই মায়াপুরের ইস্কন মন্দির চত্বরে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়েছে হাজারও মানুষের ভিড়। যার ধাক্কায় গঙ্গার পশ্চিম পাড়ের নবদ্বীপেও সামাল সামাল রব। ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাসের কথায়, “মায়াপুরে এমন ভিড় বহু দিন হয়নি। আমাদের সব ঘর আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি।” একই ছবি মায়াপুরের হোটেলেও। যদিও নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “ভিড় দেখে ভাল লাগছে। কিন্তু ছুটির দিনে বেড়াতে আসা লোকের সংখ্যা দিয়ে কি আর দেড় মাসের ক্ষতির হিসাব কষা যায়?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy