খরিদ্দারদের অধিকাংশই ইউরোপ প্রবাসী বাঙালি দম্পতি। নিঃসন্তান।
সিআইডি’র প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, চোরাই শিশুদের এমন অন্তত দশটি অনাবাসী দম্পতির কাছে চড়া দামে বেচে দিয়েছে পাচারচক্র। ক্রেতাদের অনেকেই দাম মিটিয়েছেন বিদেশি মুদ্রায়। চক্রের অন্যতম মাথা সন্দেহে ধৃত চিকিৎসক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হেফাজত থেকে যার কিছুটা উদ্ধার হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। পার্থবাবু মহাত্মা গাঁধী রোডের শ্রীকৃষ্ণ নার্সিংহোমের মালিক।
সিআইডি সূত্রের খবর: সংশ্লিষ্ট প্রবাসীরা ‘সময় মতো’ পশ্চিমবঙ্গে এসে বাচ্চা নিয়ে বিদেশে ফিরে গিয়েছেন। যাওয়ার আগে তাঁরা অবশ্য বাচ্চাদের দত্তক নিয়েছেন আইনি পথে। কী রকম?
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এখানেও পাচারচক্রের হাতযশ। ১৯৫৬-র ‘দ্য হিন্দু অ্যাডপশনস অ্যান্ড মেনটেন্যান্স অ্যাক্ট (হামা) অনুযায়ী দত্তক গ্রহণের সময়ে অনেক ক্ষেত্রে শিশুর জন্মদাত্রী হিসেবে তারা কোর্টে ভুয়ো মহিলাকে হাজির করিয়েছে। আইন মোতাবেক দত্তক প্রক্রিয়া সাঙ্গ হওয়ায় শিশুর পাসপোর্ট হয়ে গিয়েছে সহজে। পালক মা-বাবা যে দেশে থাকেন, সেখানকার ভিসা পেতেও অসুবিধে হয়নি। দত্তক সন্তান ও তার পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে দম্পতিরা দিব্যি বিমানে উঠে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।
তদন্তে প্রকাশ, পার্থবাবুও এই কারবারের সূত্রে ক’বার বিদেশ ভ্রমণ করে এসেছেন। তবে সেটা খদ্দের জোগাড় করতে, নাকি কোনও শিশুকে বিদেশে চালানের পথ মসৃণ করতে, সিআইডি সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নয়। এক গোয়েন্দার কথায়, ‘‘পার্থের বিদেশযাত্রা সংক্রান্ত তথ্য পেতে ওঁর পাসপোর্ট-সহ বিভিন্ন নথি যাচাই করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, কোন কোন প্রবাসী দম্পতিকে শিশু বিক্রি করা হয়েছে, শিশুটিকে কোত্থেকে চুরি করা হয়েছিল ইত্যাদি।’’ কিছু দম্পতি সোনার গিনি, গয়না দিয়েও বাচ্চা কিনেছেন বলে ওঁদের অনুমান।
এ দিকে গোয়েন্দারা পার্থের কাছে বেশ কিছু মার্কিন ডলার, ইউরো ও হংকং ডলার পেয়েছেন। সিআইডি সূত্রের খবর: জেরার মুখে পার্থ যুক্তি দিয়েছেন, বিদেশে তিনি যত বিদেশি মুদ্রা নিয়ে গিয়েছিলেন, সব খরচ হয়নি, দেশে ফিরে সেগুলো ভাঙানোও হয়নি। যদিও গোয়েন্দাদের মতে, উনি ডাহা মিথ্যে বলছেন। ওগুলো সব বাচ্চা বেচেই পাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy