প্রতীকী ছবি।
নির্দিষ্ট সরকারি নীতি গড়ে ওঠেনি এত দিনেও। খাতায়-কলমে ট্রান্সজেন্ডার উন্নয়ন বোর্ড গড়ে উঠলেও এখনও পর্যন্ত রূপান্তরকামীদের মূলস্রোতে পুনর্বাসন বা চাকরির মাধ্যমে ক্ষমতায়নের কাজে এগোতে পারেনি রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অধীনস্থ একটি সংস্থা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে রূপান্তরকামীদের।
নয়া অর্থবর্ষ শুরু হতেই রূপান্তরকামী মেয়ে-পুরুষদের একটি ব্যাচকে কম্পিউটারে তালিম দেওয়ার এই কাজ শুরু করবে ওয়েবেল। তালিমের সঙ্গে-সঙ্গেই চাকরিতে নিয়োগের আশ্বাস এখনই না-দিলেও শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণের পরিধি অনুযায়ী পেশাগত ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধার দরজা খুলবে বলে ওয়েবেল ইনফরমেটিক্স লিমিটেড-এর সিইও প্রদীপকুমার বসু আশাবাদী। তিনি বলছেন, ‘‘চার-পাঁচটি ব্যাচে ২৫ জন শিক্ষার্থীকে তালিম দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এই শিক্ষার্থীদের জড়ো করে কী ভাবে এগোনো যায়, তা কয়েক দিনের মধ্যেই ঠিক হবে।’’ সদ্য সমাপ্ত আর্থিক বর্ষেই অবশ্য রূপান্তরকামীদের নিয়ে তাদের প্রকল্পে হাত দিয়েছে ওয়েবেল। ওয়েবেল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে কম্পিউটার-সহ নানা ধরনের পরিকাঠামোগত সাহায্য দিয়ে এক জন রূপান্তরকামী নারী ও এক জন রূপান্তরকামী পুরুষের তালিম শুরু হয়েছে।
ঠিক কী কাজে লাগানো যাবে এই শিক্ষার্থীদের? প্রদীপবাবুর দাবি, ‘‘ওয়েবেলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রাথমিক অ-আ-ক-খ শেখালেই কিছু রূপান্তরকামী ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে কাজ করতে পারবেন। অষ্টম-নবম শ্রেণি পাশ শিক্ষার্থীরাও এই তালিম নিতে পারবেন। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি থাকলে বাড়তি সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং শিখিয়ে অন্য কিছু চাকরিতে নিযুক্ত করা যেতে পারে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নালসা রায়েই তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের সত্তাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁদের ক্ষমতায়নের বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছিল। যাবতীয় সামাজিক বৈষম্য দূর করতে অন্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণির মতো তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের চাকরি সংরক্ষণের কথাও বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে, সেই প্রস্তাব কার্যকর হয়নি। একদা এ রাজ্যে ট্রান্সজেন্ডার উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য তথা রূপান্তরকামীদের অধিকার নিয়ে সক্রিয় সমাজকর্মী রঞ্জিতা সিংহ বলছেন, ‘‘তুলনায় তামিলনাড়ু বা ওড়িশার মতো রাজ্যেও রূপান্তরকামীদের জন্য নানা ভাবে কর্মসংস্থানের দরজা খুলেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই রূপান্তরকামী পুরুষ বা মেয়েদের পক্ষে পেশাগত তালিমের পরিসরটিতেও নানা ধরনের টিটকিরি, গঞ্জনার শিকার হতে হয়। আলাদা করে কাজ শেখার সুযোগ মিললে হয়তো তাঁদের অনেকেই কিছুটা এগিয়ে যেতে পারতেন। তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সহায়তা মিললে হয়তো অনেক সমস্যার মুশকিল আসান হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy