Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক কে, ভাঙা হাটেও লড়াই বর্ধমানে

নানা মত ঘিরে জটিলতার মধ্যেই আজ, সোমবার বৈঠকে বসছে বর্ধমান জেলা কমিটি। বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, জেলা কমিটি শেষ পর্যন্ত যে নাম ঠিক করবে, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সেই নামই যাবে সিলমোহরের জন্য।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন সুজন চক্রবর্তী। রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব একমত হয়ে পরবর্তী জেলা সম্পাদক বেছে নেওয়া হল শমীক লাহিড়ীকে। পশ্চিম মেদিনীপুর ভেঙে নতুন জেলা হল ঝাড়গ্রাম। রাজ্য ও অবিভক্ত জেলা নেতৃত্বের সহমতের ভিত্তিতেই নতুন জেলা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পেলেন ডহরেশ্বর সেন। সাম্প্রতিক কালের এই প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়ে যাচ্ছে বর্ধমানে গিয়ে। নতুন পশ্চিম বর্ধমান জেলার সম্পাদক বাছাই করতে গিয়ে এখনও ত্রিধাবিভক্ত সিপিএম!

আরও পড়ুন: ক্ষমতার বাসনা ছাড়ুন, ডাক বিমানের

নানা মত ঘিরে জটিলতার মধ্যেই আজ, সোমবার বৈঠকে বসছে বর্ধমান জেলা কমিটি। বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, জেলা কমিটি শেষ পর্যন্ত যে নাম ঠিক করবে, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সেই নামই যাবে সিলমোহরের জন্য। অর্থাৎ আলিমুদ্দিনের ইচ্ছায় নতুন জেলার সম্পাদক মনোনয়নের প্রায় উল্টো প্রক্রিয়াই ঘটতে চলেছে বর্ধমানে। দলের মধ্যেই একাংশ বলছেন, সিপিএম ক্ষমতায় থাকাকালীন বর্ধমান জেলা ছিল দোর্দণ্ডপ্রতাপ। সংগঠন এখন ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও বর্ধমানের সেই মেজাজ বিশেষ বদলায়নি! সোশ্যাল মিডিয়ায় রসিকতাপূর্ণ পোস্টের জন্য তারা তরুণী কর্মীকে সটান বহিষ্কার করে দিতে পারে। বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিরুদ্ধে তারা আলিমুদ্দিনের চোখে চোখ রেখে লড়ে যেতে পারে! ওই অংশের মতে, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে জেলা সম্পাদক বাছাই ঘিরেও।

সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্যই রাজ্য-জেলা মতান্তরকে বড় করে দেখাতে রাজি নন। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব কারও নাম চাপিয়ে দেয়নি। কোথাও দেওয়াও হয় না। কয়েক জনের নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলা কমিটির মত নিয়ে জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। সেটাই তো সুস্থ প্রক্রিয়া!’’ যদিও দলের একটি সূত্রের বক্তব্য, বর্ধমান শিল্পাঞ্চলের নতুন জেলার জন্য সূর্যবাবুদের পছন্দের নাম প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। আর অমল হালদার, অচিন্ত্য মল্লিকেরা চান প্রাক্তন বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়কে। বংশগোপাল ও গৌরাঙ্গবাবু দু’জনেই রাজ্য কমিটির সদস্য। তার বাইরে ‘কালো ঘোড়া’ হিসাবে আলোচনায় আছে পার্থ মুখোপাধ্যায়ের নাম। দলের এক সূত্রের বক্তব্য, পার্থবাবু আসানসোল শিল্পাঞ্চলে কাজ করে এলেও এখন তাঁকে পূর্ব বর্ধমানে সরিয়ে নিয়ে আসা যায় কি না, সেই সম্ভাবনাও জেলা নেতৃত্বের ঘরোয়া আলোচনায় উঠেছে।

বিধানসভা ভোটের প্রচারে আসানসোলে রাহুল গাঁধীর সভায় উপস্থিত হয়ে বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছিলেন বংশগোপালবাবু। পাণ্ডবেশ্বরের সিটু নেতা গৌরাঙ্গবাবু তুলনায় অবিভক্ত জেলা নেতৃত্বের ‘কাছের লোক’। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘দু’জনেই নিজেদের শেষ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এই ভাবে তুল্যমূল্য বিচার হতে থাকলে মুশকিল!’’ বিচারের শেষে রায়ের অপেক্ষা এখন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE