বসতবাড়ি বন্ধক রেখে এভারেস্টে দ্বিতীয় বারের জন্য গিয়েছিলেন এক জন। অন্য জনও বহু কষ্টে অভিযানের টাকা জোগাড় করেন। তাই দেরিতে যাত্রা শুরু করেও লক্ষ্যে না পৌঁছে পিছনে ফিরে তাকাতে চাননি রানাঘাটের রুম্পা দাস ও সুব্রত ঘোষ। বৃহস্পতিবার অনেকটা দেরিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের শীর্ষে পৌঁছন ওই দুই স্কুলশিক্ষক। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, রুম্পা এ দিন সন্ধ্যায় ক্যাম্প ৪-এ নেমে এসেছেন। তবে সুব্রতকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। বেসক্যাম্প সূত্রে জানা গিয়েছে, শীর্ষ ছুঁয়ে সাউথ সামিট ও হিলারি স্টেপের মাঝে কোথাও রয়েছেন সুব্রত। তাঁর সঙ্গের অক্সিজেনও সম্ভবত ফুরিয়েছে। শুক্রবার কোনও দলের শীর্ষে যাওয়ার কথা না থাকায় সাহায্য কতটা মিলবে, তা নিয়েও চিন্তা বেড়েছে।
রুম্পা রানাঘাটের কুপার্স ক্যাম্পের স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকা। রানাঘাট ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুব্রত বাগদার কাপাসাটি মিলনবিথী হাইস্কুলের শিক্ষক। ১০ মে নেপালের দিকে বেসক্যাম্প থেকে উপরের ক্যাম্পে উঠে আসেন তাঁরা। সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যায় খারাপ আবহাওয়ার ফলে সামিট বা শীর্ষবিন্দুর উদ্দেশে তাঁদের বার হতে দেরি হয়। তাই বৃহস্পতিবার শীর্ষে পৌঁছন দুপুর দু’টোয়। যা অনেকটাই দেরি।
কৃষ্ণনগরের পর্বতারোহণ ক্লাবের সদস্য, বছর চুয়াল্লিশের রুম্পা ২০২১ সালে প্রথম এভারেস্ট অভিযান গেলেও কোভিডের কারণে মাঝপথ থেকে ফেরেন। এ বার খরচ জোগাতে বসতবাড়ি বন্ধক রাখেন রুম্পা। এ দিন নামার সময়ে তাঁর শেরপাদের সাহায্য লেগেছে বলে শোনা গিয়েছে। বেশ কিছু ছ’হাজারি শৃঙ্গের অভিজ্ঞতা থাকলেও রুম্পা ও সুব্রত কোনও আট হাজারি শৃঙ্গে সফল অভিযান করেননি। এ ক্ষেত্রে কেন দেরি দেখেও ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন না, প্রশ্ন উঠছে।
পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায় বলছেন, ‘‘কখন ফিরতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। দেরি হয়ে গিয়েছে বুঝে আগেই ফেরা উচিত ছিল।’’ পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাসের কথায়, ‘‘প্রবল হাওয়ার জন্য বুধবার রাতে ‘সামিট পুশ’ শুরু করতেই চার ঘণ্টা দেরি করেছে ওরা। সেটাই ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)