Advertisement
E-Paper

দোষীদের দ্রুত শাস্তি হোক, চায় ব্রাহ্মণবাড়

আড়াই মাসে আগের ভয়াবহ স্মৃতি আজও ভোলেনি বিস্ফোরণের গ্রাম। গত ৬ মে রাতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে পিংলার ব্রাহ্মণবাড় গ্রামে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১২ জনের। পরে কলকাতার হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরদিনই পুলিশের জালে ধরা পড়ে ওই কারখানার অন্যতম মালিক রঞ্জন মাইতি। মঙ্গলবার রাতে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে সিআইডি গ্রেফতার করে পিংলা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সুরজ শেখকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৩

আড়াই মাসে আগের ভয়াবহ স্মৃতি আজও ভোলেনি বিস্ফোরণের গ্রাম।

গত ৬ মে রাতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে পিংলার ব্রাহ্মণবাড় গ্রামে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১২ জনের। পরে কলকাতার হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরদিনই পুলিশের জালে ধরা পড়ে ওই কারখানার অন্যতম মালিক রঞ্জন মাইতি। মঙ্গলবার রাতে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে সিআইডি গ্রেফতার করে পিংলা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সুরজ শেখকে। সুরজকে গ্রেফতার করার খবর পৌঁছতেই শোরগোল পড়ে যায় গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে ন’জন নাবালক-সহ ১৩ জনের খুনে মূল অভিযুক্ত রঞ্জন মাইতির ভাই নিমাই মাইতি এখনও পলাতক। রঞ্জনের পাঁচ ভাইও পলাতক। তাঁদেরও অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।

ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা পিংলায় যান। ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু শ্রমিকদের মুর্শিদাবাদ থেকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ওই বাজি কারখানায় নিয়ে আসত সুরজ। কারখানার মূল কারিগর রামপদ মাইতি ও রঞ্জন ওই সব শিশুদের কারখানায় কাজে লাগাত। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই শিশুশ্রমিকদের রাতের অন্ধকারে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়ে আসা হত। ওই শিশুদের কারও সঙ্গে গ্রামবাসীদের মেলামেশা করতেও দেওয়া হত না। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ ওই শিশুদের সঙ্গে কথা বললে রঞ্জন ও তাঁর পরিবারের লোকেরা তাদের বকাবকি করত। ব্রাহ্মণবাড়ের বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, ওই শিশুদের যাঁরা বিপদে ফেলল, তাঁরা কেন এখনও ধরা পড়ল না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার পরে সুরজের নাম শুনলেও সুরজকে তাঁরা কখনও দেখেনি। এ দিন টেলিভিশনে তাঁর ছবি দেখেও চিনতে পারেনি গ্রামবাসীরা। বুধবার ওই গ্রামের বাসিন্দা সনাতন টুডু বলছিলেন, “আমরা সুরজের নাম পরে জেনেছি। রাতের অন্ধকারে ওই শিশু শ্রমিকদের আনা হত। তাই সুরজকে টিভিতে দেখেও চিনতে পারছি না। কিন্তু এমন অমানবিক কাজের সঙ্গে যুক্ত সুরজের শাস্তি হোক। সিআইডির আরও অনেক আগেই সুরজকে গ্রেফতার করা উচিৎ ছিল।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, ঘটনার পর থেকেই পলাতক নিমাই। গ্রামে তাঁকে দেখাও যায়নি। তবে মাইতি পরিবারের মহিলারা বাড়িতেই থাকেন। গ্রামবাসীর একাংশের ধারণা, গভীর রাতে নিমাইও নিজের বাড়িতে যাতায়াত করে। এ দিন গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, “শেখ সুরজে গ্রেফতার করা অবশ্যই সিআইডির সাফল্য। কিন্তু রঞ্জনের বাড়ির লোকেরা গ্রামে ফিরে তাঁদের হুমকি দিচ্ছে। তাঁরা বলছে, জেল থেকে রঞ্জন বের হলে দেখে নেবে।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘আমাদের বিশ্বাস নিমাই মাঝে-মধ্যেই রাতে বাড়িতে আসে। সিআইডির অবিলম্বে রঞ্জনের বাকি ভাইদের গ্রেফতার করা উচিত। বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হলে তবেই তো গ্রামে শান্তি ফিরবে।”

ব্রাহ্মণবাড় গ্রামে এখনও রয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। রঞ্জন মাইতির দু’টি বাড়িও ঘিরে রেখেছে পুলিশ। চলে পুলিশি টহলদারিও। প্রশাসনের দাবি, বর্তমানে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে ব্রাহ্মণবাড়। তবে বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত রঞ্জনের ভাইদের কেউ এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা।

blast accused Village mrushidabad CID police factory
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy