Advertisement
E-Paper

‘কাঁটা’ সরিয়ে বসবে তারকাঁটা

গত কয়েক বছরে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে তার ফল টের পেয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও স্থানীয় গ্রামগুলো। এ বার সেই সমস্যা মিটতে চলেছে।

সুস্মিত হালদার ও সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৫৫

বিএসএফ চাইলে পাখিও নাকি কাঁটাতার পেরোতে পারে না। সীমান্তে এটা বেশ চালু প্রবাদ। কিন্তু যেখানে কাঁটাতারই নেই?

গত কয়েক বছরে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে তার ফল টের পেয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও স্থানীয় গ্রামগুলো। এ বার সেই সমস্যা মিটতে চলেছে।

বিএসএফ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তে এত দিন যে এলাকা উন্মুক্ত ছিল, সেখানে কাঁটাতার বসবে। তৈরি হবে সীমান্তের রাস্তা। আঁধার সীমান্তে জ্বলবে আলোও। জেলা পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জমি কেনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ও সীমান্তে সুরক্ষা আরও বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ বলে দাবি বিএসএফ কর্তাদের। জমির ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। বিএসএফের কৃষ্ণনগরের ডিআইজি বি এল মিনা বলেন, “সবার সঙ্গে সুষ্ঠু আলোচনার পরেই জমি কেনা হচ্ছে।’’

নদিয়ায় ২২২ কিলোমিটার জুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। তার মধ্যে নদী সীমান্ত ১৭.৫ কিলোমিটার। আর স্থলসীমান্তে ১০.২০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থেকে ভগবানগোলা পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে সীমান্ত। সামান্য কিছু অংশে কাঁটাতার রয়েছে। বাকি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে নদী। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চোরাপাচার ও দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ।

বিএসএফের এক কর্তা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশে একের পর এক যা ঘটছে, তার আঁচ লাগছে এ পার বাংলাতেও। ফলে কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছে না। আর সেই কারণে‌ই যত দ্রুত সম্ভব এই কাজ শেষ করতে হবে। দ্রুত জমি কেনার জন্য জেলা পরিষদ তৈরি করেছে ‘ল্যান্ড পারচেজ সেল’। নদিয়ায় প্রায় ১৩৭ একর জমি কেনা হবে। মুর্শিদাবাদে সমস্যাটা অন্য রকম। সেখানে নদী থাকায় কাঁটাতার তৈরিতে সমস্যা রয়েছে। তবে যে এলাকায় ভাঙনের প্রবণতা কমেছে, সেখানে বেশ কয়েক বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জমি কিনে তৈরি হয়েছে রাস্তা। এখন সেই রাস্তার পাশ দিয়েই কাঁটাতার তৈরির চেষ্টা চলছে। নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চাপড়ার উত্তর রাঙিয়াপোতা, মহখোলা, কৃষ্ণগঞ্জের বিজয়পুর ও গেদে, করিমপুরের গান্ধিনা, দহখোলা, বারুইপাড়া, ফুলবাড়ি, হাঁসখালির রামনগর, শালবেড়িয়া, উলাশী, রানাঘাটের বরণবেড়িয়া, কালুপুর ও শ্রীরামপুর মৌজা থেকে জমি কেনা হবে। তবে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ রাঙিয়াপোতা, মলুয়াপাড়া সহ উত্তর রাঙিয়াপোতা মৌজার একটা অংশের চাষিরা সহমত হতে পারেননি। ‘জিরো পয়েন্ট’ থেকে ঠিক কতটা ভিতর দিয়ে কাঁটাতার যাবে তা নিয়েই এই এলাকার লোকজনের কিছুটা আপত্তি রয়েছে।

জমি নিয়ে মতান্তর নতুন কিছু নয়। এক সময় সীমান্তের জমি নিয়ে বিবাদ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। বিষয়টি থমকে থাকলেও দেশের সুরক্ষার কারণে ফের নতুন করে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কৃষ্ণগঞ্জের মাটিয়ারি-বানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “দেশের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা জমি দিতে রাজি হয়েছি। তা ছাড়া আলোচনার সময়ে বিএসএফও আমাদের শর্ত মেনে নিয়েছে।”

কৃষ্ণগঞ্জে ব্লকের ইচ্ছুক চাষিদের শতক পিছু ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা ও চাপড়া ব্লকে শতক পিছু ভিটে জমি ৯০ হাজার ও আউশ জমি ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শেখর সেন বলেন, “জমি কেনার ব্যাপারে কোনও কোনও এলাকায় কিছু সমস্যা আছে। আলোচনার মাধ্যমে তাও মিটিয়ে ফেলা হবে।”

Krishnanagar BSF Border বিএসএফ কৃষ্ণনগর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy