ফাইল চিত্র।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকা তৃতীয় সর্বদল বৈঠকের মুখে বুধবার ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল কালিম্পং শহর ও লাগোয়া এলাকা। সকালে শহরে মোর্চার মিছিলের পরে সুপার মার্কেটের কাছে এনবিএসটিসি-র অফিসে আগুন ধরানো হয়। সেখানে পুলিশ বাধা দিলে মিছিল থেকেই অনেকে ১০ মাইল এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের কার্যালয় পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তা রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। একই সঙ্গে, মিছিল পাল্টা মিছিলে তপ্ত হল পাহাড়ের রাজনীতিও।
মোর্চার দাবি, তৃণমূল দফতরে আগুন ধরানোয় তাদের কেউ জড়িত নন। মোর্চার কালিম্পং জেলা সভাপতি রামকুমার ভুজেল বলেন, ‘‘মোর্চার মিছিল ছিল শান্তিপূর্ণ। পুলিশই মিছিলে হামলা করেছে। তাতেই গোলমাল বাধে। পুলিশের গুলিতে আমাদের তিন জন জখম হয়েছেন।’’ কিন্তু মোর্চা সমর্থকেরা কেন খুকুরি নিয়ে মিছিলে গিয়েছিলেন? ভুজেলের দাবি, ‘‘অস্ত্র হিসেবে নয়। এটা গোর্খাদের সংস্কৃতির একটা অঙ্গ।’’
প্রশাসন জানিয়েছে, মোর্চার সমর্থকদের হামলাতেই ৬ পুলিশকর্মী আহত। চার জনকে লাঠি-বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়েছে। ইট-পাথরেও ফেটে গিয়েছে দু’জনের মাথা ও মুখ। পুলিশের দাবি, এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা কেবল কাঁদানে গ্যাস ও রবারের বুলেট ছুড়েছে।
মোর্চার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জিএনএলএফ এবং জাপ-ও। প্রশ্ন, মুখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বললেও মোর্চা কেন হিংসাত্মক ঘটনায় জড়াচ্ছে? জিএনএলএফের মন ঘিসিঙ্গ এ দিন দার্জিলিঙের ক্লাবসাইড রোডের জনসভায় প্রশ্ন তুলেছেন, আন্দোলনের স্পষ্ট রূপরেখা কেন ঘোষণা করছে না মোর্চা? তাঁর কথায়, ‘‘আমার তো মনে হচ্ছে গুরুঙ্গদের কোনও গোপন কর্মসূচি রয়েছে।’’ সেই সঙ্গেই মন জানান, ষষ্ঠ তফসিল নিয়ে আলোচনার আর অবকাশ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘যে দিন সংসদে ষষ্ঠ তফসিলের প্রস্তাব গৃহীত হলো না, সে দিনই তা বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’ মনের দাবি, আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে হবে। একই দাবি জাপেরও। হরকাবাহাদুর ছেত্রীও জানান, আন্দোলন কোন পথে যাবে, তা স্থির না করে হিংসার আশ্রয় নিলে আমজনতা দূরে সরে যাবে।
একে তো জিএনএলএফের সভায় ভিড় হয়েছে। তার উপরে মন ও হরকাবাহাদুর খোলাখুলি মোর্চার সমালোচনাও করেছেন। সেই চাপের মুখে পড়ে গুরুঙ্গের মুখে কট্টরপন্থীদের স্বরই শোনা গিয়েছে। চকবাজারে বিশাল সমাবেশে গুরুঙ্গ বলেছেন, ‘‘আমরা কী চাই, তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। গোর্খাল্যান্ডের দাবি ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে বৈঠকে যাব না।’’
তবে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ চেয়ে আছেন, দলের কট্টরপন্থীদের চাপ থেকে বেরিয়ে গুরুঙ্গ বন্ধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কি না, তার উপরেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy