উলুবেড়িয়ার শাটল কক শিল্প। নিজস্ব চিত্র।
ক্রমশই রুগ্ন হয়ে পড়ছে রাজ্যের শাটল কক তৈরির কুটির শিল্প। যা বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা।
হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় তৈরি হয় শাটল কক। দেশের মধ্যে একমাত্র এখানেই হাঁসের পালক দিয়ে বিশ্বমানের শাটল কক তৈরির কুটির শিল্প রয়েছে। যা অত্যন্ত জনপ্রিয়। উলুবেড়িয়ার বাণীবন, বীরপুর যদুবেড়িয়া এবং রাজাপুর-সহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময় প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন এই পেশার সঙ্গে। কিন্তু বর্তমানে এই শিল্প ক্রমশই রুগ্ন হয়ে পড়ছে। যার ফলে সঙ্কটের মুখে এই পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষের রুটি-রুজি।
বাপ্পা অধিকারী নামে এক ব্যবসায়ী জানান, কাঁচামালের ঠিক মতো জোগান নেই। যা শাটল কক শিল্পকে ক্রমে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে তুলেছে। তার উপর জিএসটি এসে যাওয়ায় আরও সমস্যা বেড়েছে। ফলে দাম বেড়েছে শাটল ককেরও। একটি শাটল কক তৈরি করতে ষোলোটি হাঁসের পালক লাগে। আগে একটি শাটলের দাম ছিল ৬০ টাকা এখন বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা। অন্য দিকে, কম দামে চিন ও অন্যান্য দেশ থেকে প্লাস্টিকের শাটল কক এসে বাজার দখল করে নিচ্ছে। ফলে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি হাওড়ায় এসে দুয়ারে পালকের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। উলুবেড়িয়ার শাটল কক শিল্প বাঁচাতে তিনি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা। উলুবেড়িয়ার শাটল কক ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক বাসুদেব খান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের আধিকারিকরা। উন্নত মানের শাটল কক তৈরির জন্য বিশেষ প্রজাতির হাঁসের সাদা পালক প্রয়োজন। যা এ রাজ্যে জোগান ক্রমশ কমেছে। বাংলাদেশ থেকে আনতে গেলে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এ কথা অধিকারিকদের জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।” বাসুদেব আরও বলেন, “কল্যাণীতে এই বিশেষ প্রজাতির হাঁসের খামার করার উদ্যোগ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী সপ্তাহে আধিকারিকদের সঙ্গে সেখানে পরিদর্শনে যাব।” মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগে তাই নতুন আশার আলো দেখছে উলুবেড়িয়ার শাটল কক শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy