এ যেন ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। মাধ্যমিকে ভাল ফল করার পর, নতুন মোবাইল পেয়েছিলেন বেহালা শীলপাড়ার বাসিন্দা স্রোতশ্রী রায়। তার পর সারা ক্ষণ মোবাইল নিয়ে কখনও ফেসবুক, কখনও হোয়াটস্অ্যাপ। কখনও আবার অন্য কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মগ্ন হয়ে থাকত সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস-এর এই কৃতী ছাত্রী। এমনকি মোবাইলের সঙ্গে ১২ ঘণ্টাও কেটে যেত কখনও কখনও। টেস্ট পরীক্ষার ফল যথারীতি খারাপ। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো। সেই মোবাইলকে জীবন থেকে আলাদা করতেই একে বারে সেরার সেরা সে। উচ্চমাধ্যমিকে পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯ নম্বর!
তার এই মোবাইলের প্রতি আসক্তির কথা নিজেই জানালেন স্রোতশ্রী। কী ভাবে পড়াশোনার মাঝে মোবাইল প্রতিবন্ধক হয়ে উঠেছিল, সেই অভিজ্ঞতাও শেয়ার করলেন। বাবা-মা দু’জনেই শিক্ষক। স্রোতশ্রীর ইচ্ছা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করার। নিজের ফল জানার পর স্রোতশ্রী বলছে, “মোবাইলের জন্য আমার টেস্টের ফল ভাল হয়নি। তার পর মোবাইল থেকে দূরেই থাকতাম। ভাল লাগছে, আমি ৪৯৯ পেয়েছি পাঁচশোর মধ্যে। সব ক’টা পরীক্ষা দিতে পারলে আরও ভাল লাগত।”
মাধ্যমিকে জেলার জয়জয়কার। তবে উচ্চ মাধ্যমিকে কলকাতার ছাত্রছাত্রীরা এ বার ভাল ফল করেছে। এ বছর শেষ তিনটি পরীক্ষা না হওয়ায় মেধাতালিকা প্রকাশ হয়নি। স্রোতশ্রী ছাড়াও আরও তিন জন পেয়েছে ৪৯৯ নম্বর। তার মধ্যে রয়েছে বাঁকুড়ার বড়জোরা হাইস্কুলের গৌরব মণ্ডল। বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলের অর্পণ মণ্ডল এবং হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের ঐকিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে গৌরব মণ্ডলের। বাবা প্রাক্তন সেনাকর্মী। ছেলের সাফল্যের খবর শুনে উচ্ছ্বসিত তার মা শিপ্রা দেবীও। ক্রিকেট খেলতে ভালবাসে গৌরব। তার সাফল্যের খবর পেয়ে একের পর এক ফোন আসতে শুরু করেছে গৌরবের কাছে। ফুল-মিষ্টিতে ভরে গিয়েছে ঘর। সেই ব্যস্ততার ফাঁকেই গৌরব বলল, “আমি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। মন দিয়ে আগামী দিনে পড়তে চাই।”