মাল্যদান: কার্ল মার্ক্সের জন্ম দ্বিশতবার্ষিকী পালন। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
বিজেপির কৌশল বুঝতে তিন বছর আগেই তাঁদের ভুল হয়েছিল বলে মেনে নিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁদের দলের ব্যর্থতা যে তার পরেও অব্যাহত, তা-ও খোলাখুলি স্বীকার করে নিয়ে বাংলায় কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, বামেদের ব্যর্থতার জন্যই পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন নিজেকে বিজেপির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে তুলে ধরতে পারছেন। যা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে ইয়েচুরির অভিমত।
কার্ল মার্ক্সের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী পালন শুক্রবার থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করল সিপিএম। কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সেই অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন ইয়েচুরি। দলের মতাদর্শগত লড়াই ও আর্থিক উদারনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথা বলতে গিয়েই ইয়েচুরি টেনে আনেন বিজেপির বিপদের প্রসঙ্গ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে গুজরাত মডেলের কথা বলেছিল। গুজরাত কেন উন্নয়নের আদর্শ মডেল নয়, সেটা বোঝাতে আমরা তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। অসীমবাবু (দাশগুপ্ত) গুজরাতের শিল্প, কৃষি বা মানবোন্নয়ন নিয়ে নানা তথ্য বার করেছিলেন। কিন্তু গুজরাতকে ব্যবহারের পিছনে বিজেপির আসল উদ্দেশ্যটা বুঝিনি।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের মতে, গুজরাতকে সামনে রেখে বিজেপি হিন্দুত্বের তাস খেলেছিল। যার জেরে লোকসভায় ২৬ বছর পরে নরেন্দ্র মোদীর দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা রেখেই উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় ৩২৫টা আসন ঘরে তুলেছে তারা।
এই সূত্রেই বাংলার পরিস্থিতির কথা এসেছে এ দিন ইয়েচুরির বক্তব্যে। তাঁর সাফ কথা, স্থানীয় বিষয়ে আরও বেশি আন্দোলন গড়ে তুলতে বামেরা পারেনি বলেই দক্ষিণপন্থী শক্তি আরও সুযোগ পেয়েছে। এক দিকে বিজেপি ও অন্য দিকে তৃণমূল, দু’পক্ষই নিজেদের স্বার্থে মৌলবাদী রাজনীতিতে মদত দিচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘মার্ক্সকে স্মরণই শুধু নয়। আরও সক্রিয়
হয়ে, আরও বেশি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলে এই রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে।’’
সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও সরব হন পদ্ম-ঘাস ফুলের প্রতিযোগিতা নিয়ে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দিল্লির শাসক দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে রাজ্যের শাসক দল। কে বেশি হিন্দু, প্রতিযোগিতা চলছে! দক্ষিণপন্থী রাজনীতি মানুষে-মানুষে বিভেদ ঘটিয়ে দিচ্ছে।’’ নানা প্রশ্নে রাস্তায় নেমে মিছিল-সমাবেশ যে চলবে, আগামী ক’দিন কলকাতার কর্মসূচি জানিয়ে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন বিমানবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy