Advertisement
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
আশঙ্কায় তাঁতশিল্পীরা

তাঁতহাটে অন্য শিল্পকেও ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত

অনুমোদন মিলেছে গত বছর। সম্প্রতি কাজও শুরু হয়েছে। হাওড়ার উদয়নারাযণপুরে তাঁতশিল্পীদের জন্য ওই হাট তৈরির কাজ শেষ হলেই স্থানীয় তাঁতশিল্পীরা উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী হস্তচালিত তাঁত বিভাগ (হ্যান্ডলুম)।

উদয়নারায়ণপুরে তৈরি হচ্ছে তাঁদের হাট। — সুব্রত জানা

উদয়নারায়ণপুরে তৈরি হচ্ছে তাঁদের হাট। — সুব্রত জানা

মনিরুল ইসলাম
উদয়নারায়ণপুর শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

অনুমোদন মিলেছে গত বছর। সম্প্রতি কাজও শুরু হয়েছে। হাওড়ার উদয়নারাযণপুরে তাঁতশিল্পীদের জন্য ওই হাট তৈরির কাজ শেষ হলেই স্থানীয় তাঁতশিল্পীরা উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী হস্তচালিত তাঁত বিভাগ (হ্যান্ডলুম)। যদিও ওই হাটে আদৌ তাঁরা ঘর পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে তাঁতশিল্পীদের মধ্যে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গজা, হরালি, সিংটি-সহ বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে চার হাজার মতো নথিভুক্ত তাঁতশিল্পী রয়েছেন। তাঁরা দশটি তন্তুবায় সমবায় সমিতির সদস্য। এ ছাড়া হরালিতে একটি হস্তচালিত তাঁতের ক্লাস্টার রয়েছে। সেখানে নথিভুক্ত কিছু তাঁতশিল্পীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উন্নতমানের পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁতশিল্পীরা এখনও কাঁচামাল পাওয়া থেকে ও উৎপাদিত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে মূলত নির্ভরশীল হুগলির রাজবলহাটের উপর। অনেক শিল্পীকে আবার মহাজনরাই কাঁচামাল (সুতো, রং) সরবরাহ করেন। শিল্পীরা মাল তৈরি করে মহাজনদের কাছেই বিক্রি করেন। শিল্পীদের লাভ বলতে শুধুই মজুরি।

কিন্তু রাজবলহাট যাতায়াত সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এখানকার তাঁতশিল্পীদের সমস্যার কথা ভেবে প্রশাসন এখানে তাঁতহাট তৈরির পরিকল্পনা করে। হ্যান্ডলুম সূত্রে খবর, উদয়নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পূর্ত দফতরের প্রায় পৌনে দু’বিঘা জমিতে তিনতলা ভবনের এই তাঁতহাট তৈরি হচ্ছে। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। কাজ করছে উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতি। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁতহাটে কেনাকাটার জন্য বাজার থাকছে। কাঁচামাল পাওয়ার ক্ষেত্রেও এখানে তাঁতশিল্পীরা সুবিধা পাবেন বলে জানান দফতরের জেলা আধিকারিক দেবাশিস ভট্টাচার্য। স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘তাঁতহাট হলে এলাকার তাঁতশিল্পের নতুন সময় শুরু হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, তাঁতশিল্পীদের পাশাপাশি যাঁরা কাঁচামাল বিক্রি করতে চান তাঁরাও ঘর পাবেন। এ ছাড়া তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা যদি ঘর চান তা হলে ঘর থাকলে তাঁদের দেওয়া হবে। ফলে এখানে একটা তাঁতের বাজার তৈরি হবে। এখানকার তাঁতশিল্পীদের আর নিজেদের পণ্য বিক্রির জন্য রাজবলহাট ছুটতে হবে না। এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের খরচের সাশ্রয় হবে।

প্রশাসনে এ হেন দাবির পরেও তাঁতহাটে ঘর পাওয়া নিয়ে সন্দিহান বহু তাঁথশিল্পীই। কিন্তু কেন?

প্রশাসন সূত্রের খবর, হাটে শ’খানেক ঘর থাকছে। থাকছে কমিউনিটি হল ও গেস্টরুম। প্রতিদিনের কেনাকাটার পাশপাশি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট দিনে হাট বসানোর ব্যবস্থাও থাকবে। সেইসঙ্গে অন্য ব্যবসায় জড়িতদেরও ঘর দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁতশিল্পীরা। তাঁদের অভিযোগ, অনেক নথিভুক্ত তাঁতশিল্পীরা ব্যক্তিগতভাবে আবেদন করেছিলেন ঘরের জন্য। কিন্তু তাঁদের ঘর দেওয়া হয়নি। পরে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এতে আশ্বস্ত হতে পারেননি বহু শিল্পী। তাঁদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁতহাট হলে অন্য ব্যবসায় জড়িতদের ঘর দেওয়া হবে কেন?

এ বিষয়ে সমীরবাবু বলেন, ‘‘এতে বঞ্চিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, তন্তুবায় সমবায় সমিতি তো ঘর পাবে। তাঁতশিল্পীরা সেখান থেকেই উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। আর অনেক লোক জড়িত আছেন এমন শিল্প যদি এখান থেকে কিছু সুবিধা পায় তাতে ক্ষতি কী। নিয়ম মেনে আবেদন করলে তাঁতশিল্পীরা অবশ্যই ঘর পাবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

tanter haat Weavers state government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy