Advertisement
E-Paper

ছুটি বাতিলের নির্দেশ জারি, বন্‌ধ রুখতে কঠোর নবান্ন

বুধবারের প্রস্তাবিত বনধ নিয়ে সোমবার পৃথক দু’টি জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। একটি মামলা দায়ের করেছে ‘অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি ফোরাম’। অন্যটি দায়ের করেছেন হাইকোর্টের এক আইনজীবী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৬

বিজেপি’র ডাকা বন্‌ধের মোকাবিলা করতে প্রশাসনিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করল রাজ্য সরকার। বুধবার বন্‌ধের দিন আইনশৃঙ্খলা, পরিবহণ, সরকারি কার্যালয়ে হাজিরা-সহ সব বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতিতে গঠিত মন্ত্রী এবং আমলাদের নিয়ে গঠিত কমিটি। সোমবার নবান্নে বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা। কালক্ষেপ না করে সরকারি কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশিকা দিয়েছে অর্থ দফতরও। এমনকি বন্‌ধের পরের দিন ছুটি মঞ্জুর না হওয়ার নির্দেশিকাও এই প্রথম দেওয়া হল বলে জানাচ্ছেন অর্থ দফতরের কর্তারা।

এদিকে বুধবারের প্রস্তাবিত বনধ নিয়ে সোমবার পৃথক দু’টি জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। একটি মামলা দায়ের করেছে ‘অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি ফোরাম’। অন্যটি দায়ের করেছেন হাইকোর্টের এক আইনজীবী। মাইনরিটি ফোরমের পক্ষে আইনজীবী ইদ্রিস আলি জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা হাইকোর্ট অনেক আগেই যে কোনও বনধকে বেআইনি ও অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। আগামিকালের বনধ প্রত্যাহার করতে বিজেপি এবং আরএসএস-কে নির্দেশ দিক আদালত। প্রয়োজনে বনধের উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হোক। রাজ্য জুড়ে যে সব জায়গায় গোলমালের আশঙ্কা থাকবে, সেখানে সেনা মোতায়েন করার জন্য আদালত রাজ্যকে নির্দেশ দিক। অন্য মামলার আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার জানান, পুজোর মরসুমে বনধ হলে ব্যবসায়ী তো বটেই সাধারণ মানুষ ও দিনমজুরেরা দুর্ভোগে পড়বেন।

সরকারি সূত্রের খবর, মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এলাকায় এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট জেলার মন্ত্রীরা নজর রাখবেন। অশান্তি রুখতে পুলিশকে সতর্কতামূলক সব ধরনের পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী তথা মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে উন্নয়নে বহু দিন পরে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। জনগনের আস্থা যখন পেল না তখন বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। এখন চারদিকে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হচ্ছে, হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষা চলছে। জনগন সতর্ক আছে। আমরা সতর্ক আছি, প্রশাসনও থাকবে। সরকারি পরিবহণ এবং বেসরকারি সংগঠনগুলিকেও বলা হচ্ছে, তারা বাস, ট্যাক্সি চালাবে। প্রশাসনিক দিক থেকে মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া, কোনও জায়গায় বিজেপি বা তাদের শাখা সংগঠনগুলি হুমকি বা উস্কানি দিলে প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিগত দিনে সচল রেখেছেন বাংলা, ২৬ তারিখেও সচল রাখুন।’’ একইভাবে শাসকদলের তরফে কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে বনধের বিরুদ্ধে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চালাতে বলা হয়েছে। কর্মীদের উদ্দেশে নির্দেশ, কোনও অবস্থাতেই স্বাভাবিক জনজীবন বন্ধ করা যাবে না।

প্রতি বার বন্‌ধের মতো এ দিন অর্থ দফতর নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, উপযুক্ত এবং আপৎকালীন কোনও কারণ ছাড়া ওই দিন কোনও কর্মীর ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর সে দিনের বেতন কাটা হবে এবং গোটা কর্মজীবনের থেকে একদিন কেটে নেওয়া (ডায়েস নন) হবে। বন্‌ধের দিন অর্ধদিবসের ছুটিও মঞ্জুর হবে না। সোমবার পর্যন্ত যাঁরা ছুটিতে রয়েছেন, তাঁদের আজ, মঙ্গলবার কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ, বন্‌ধের আগের দিন মঙ্গলবার এবং পরের দিন বৃহস্পতিবার ছুটি দেওয়া হবে না।

বন্‌ধের দিন ভোর পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা থেকে কন্ট্রোল রুম চালু রাখবে পরিবহণ দফতর। ওই দিন কলকাতায় অতিরিক্ত ৫০০ বাস রাস্তায় নামানো হবে। ফেরি ৩৫ এর পরিবর্তে ওই দিন থাকবে ৫০টি। সংখ্যা দ্বিগুণ করে প্রায় ৮০টি ট্রাম চালানো হবে। উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম অতিরিক্ত বাস নিজেদের ডিপোয় মজুত রাখবে। বন্‌ধ সংক্রান্ত কোনও গোলমালে বেসরকারি বাসের গাড়ি কাচ ভাঙলে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আরও বড় ক্ষতির ক্ষেত্রে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেতে পারে। বেসরকারি কোনও বাস বা মিনিবাস উপযুক্ত কারণ ছাড়া রাস্তায় না নামলে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে পারমিট বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিবরণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

Strike BJP Nabanna Islampur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy