লোকসভা নির্বাচনের আগে কটকে গিয়ে রাজনাথ সিংহ দাবি করেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত সমস্ত ফাইল জনসমক্ষে আনবে কেন্দ্রীয় সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সুভাষ সংক্রান্ত ৬৪টি ফাইল প্রকাশের পরে তা নিয়ে কেন্দ্রের উপরে চাপ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সুভাষ সংক্রান্ত কিছু ফাইল গোপন রাখার ক্ষেত্রে পূর্বসূরিদের মতোই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার যুক্তি দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
মমতা আজ যে ভাবে রাজ্যের হাতে থাকা ফাইল প্রকাশ করে কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলেছেন তাতে অস্বস্তিতে বিজেপি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একাধিক কর্তা ও শীর্ষ বিজেপি নেতারা মেনে নিচ্ছেন, এখন কেন্দ্রের হাতে থাকা সব ফাইল প্রকাশের জন্য আরও বেশি দাবি উঠবে।
সম্প্রতি কেন্দ্রের হাতে থাকা সুভাষচন্দ্র সংক্রান্ত কিছু ফাইল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এখন প্রায় আশিটি ফাইল সরকারের কাছে রয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর কথায়, ‘‘সুভাষ সংক্রান্ত অধিকাংশ নথি জনসমক্ষে আনা হয়েছে। সেগুলি জাতীয় সংরক্ষণাগারে রাখা আছে। তবে কিছু নথি এখনও সর্বসমক্ষে আনা হয়নি। সেগুলির বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’’
বিজেপি আজ দলীয় স্তরেও বিষয়টি মোকাবিলায় আসরে নেমেছে। বিজেপি মুখপাত্র এম জে আকবর বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ছাড়া আর কোনও প্রধানমন্ত্রী সুভাষ সংক্রান্ত ফাইলের রহস্য উন্মোচনে এই পর্যায়ের সক্রিয়তা দেখাননি। তিনি বসু পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটিও গড়েছেন।’’ বিজেপি শিবিরের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আজ যে ফাইলগুলি প্রকাশ্যে এনেছে সেগুলির সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জড়িত নয়। তাই রাজ্য সেগুলি প্রকাশ করতে পেরেছে। বিজেপির সিদ্ধার্থনাথ সিংহের মতে, ‘‘কেন্দ্রের কাছে যে ফাইলগুলি রয়েছে সেগুলির সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে। তাই সব দিক মেপেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে চাইছে সরকার।’’
বিজেপির কিছু নেতা অবশ্য সব ফাইল প্রকাশের পক্ষে সওয়াল করেছেন। সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কথায়, ‘‘আমি ইতিমধ্যেই সরকারকে বলে রেখেছি, এ বছরের শেষের মধ্যে সমস্ত ফাইল প্রকাশ্যে না এলে আদালতের দ্বারস্থ হবো। নরেন্দ্র মোদী সরকারেরও উচিত সমস্ত ফাইল প্রকাশ্যে আনা।’’
সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্ক নিয়ে চর্চা হয়েছে বিস্তর। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে লন্ডনে ক্ষমতা দখল করে লেবার পার্টি। স্বামীর যুক্তি, এখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই। ব্রিটেনেও লেবার পার্টি ক্ষমতায় নেই। ফলে, সুভাষ সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশ হলে ভারতের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। তাঁর দাবি, ‘‘ওই ফাইল প্রকাশ্যে এলে কেবল জওহরলাল নেহরু তথা কংগ্রেসের সম্মানহানি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy