Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোট-প্রচারের গন্ধ! কেন্দ্রীয় উৎসব বাতিল রাজ্যে

জাতীয় যুব সংসদ উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছেও যথারীতি চিঠি পাঠিয়েছিল। আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে জাতীয় সেবা প্রকল্প (এনএসএস)-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ। 

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪০
Share: Save:

প্রতিযোগিতামূলক উৎসবের আয়োজন করছে কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রক। উৎসবের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। প্রতিযোগিতার বিষয় ‘জনধন যোজনা’ ‘বেটি বাঁচাও’-এর মতো কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প। কিন্তু ভোট-প্রচারের ‘অভিসন্ধি’ দেখে পশ্চিমবঙ্গের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই যুব সংসদ উৎসব-প্রতিযোগিতা বাতিল করে দিল রাজ্য সরকার।

জাতীয় যুব সংসদ উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছেও যথারীতি চিঠি পাঠিয়েছিল। আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে জাতীয় সেবা প্রকল্প (এনএসএস)-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ।

‘‘ওই উৎসব, প্রতিযোগিতা আমরা মানব না। কেননা এটা ভোটের প্রচার ছাড়া আর কিছু নয়। সরকারি টাকায় পড়ুয়াদের মগজ ধোলাই করে বিজেপি আর মোদীর প্রচার হবে? এটা আমরা কোনও মতেই হতে দেবো না। যুব সংসদ আমরাও করি। কিন্তু তার মধ্যে রাজনীতি থাকে না,’’ বলছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: রাহুলের টুইটে সুভাষ-মৃত্যুদিন!

জেলা স্তর থেকে আজ, বৃহস্পতিবার উৎসব শুরু হওয়ার কথা। জেলা স্তরের সেরাদের রাজ্য স্তরে এবং রাজ্য স্তরের সেরাদের জাতীয় স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ রয়েছে। জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা দিল্লিতে হওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্যের তরফে বুধবার সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা যেন ওই উৎসবে যোগ না-দেয়। বলা হয়, এটা ‘রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত’। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরে দরবার করেও রাজ্যের সম্মতি জোগাড় করা যায়নি। তবে বিষয়টিকে এখানেই শেষ করে দিতে রাজি নয় জাতীয় সেবা প্রকল্পের আঞ্চলিক দফতর।

এনএসএসের আঞ্চলিক অধিকর্ত্রী সরিতা পটেল বলেন, ‘‘বড়জোর আর এক দিন অপেক্ষা করব। রাজ্য তার পরেও কলেজগুলিকে শামিল হতে না-দিলে নেহরু যুব কেন্দ্র সংগঠনের মাধ্যমে বাংলায় এই উৎসব করব।’’ এটা দিল্লির নির্দেশ বলে জানিয়েছেন সরিতা। মঙ্গলবার তিনি বিকাশ ভবনে যান। তাঁকে জানানো হয়, ফাইল শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবুর কাছে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তিনিই নেবেন।

এই উৎসবের বিষয়ে ইউজিসি-র সচিব রজনীশ জৈন ১৪ জানুয়ারি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের চিঠি দেন। দু’দিন পরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকও সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনএসএসের আহ্বায়কদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে উৎসব-প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে বলে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানান, রাজ্য সরকারকে কিছু না-জানিয়ে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠানোয় তাঁরা মুশকিলে পড়েন। তাঁদের তরফেই রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়।

রাজ্যের আপত্তি কেন? পার্থবাবু কেন্দ্রের রাজনীতি, আরও নির্দিষ্ট ভাবে ভোট-প্রচারের অভিসন্ধির কথা বললেও সরিতা বলছেন, ‘‘আমাকে বলা হয়, উৎসবের প্রচারে মোদীর ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে প্রতিযোগিতার বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে। সেই জন্য সরকার রুষ্ট হতে পারে।’’ অথচ এই দু’টি ছাড়াও প্রতিযোগিতার আরও বিষয় রয়েছে বলে সরিতার দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE