Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ধানের দাম বাড়ায় বিড়ম্বনা রাজ্যের

বিড়ম্বনা মূলত তিন দিক থেকে। প্রথমত, খাদ্য দফতরের ধারণা, চালকল, আড়তদার, ফড়েদের এড়িয়ে চাষিরা সরাসরি সরকারের ঘরেই ধান বেচতে চাইবেন।

খাদ্য দফতরের ধারণা, চালকল, আড়তদার, ফড়েদের এড়িয়ে চাষিরা সরাসরি সরকারের ঘরেই ধান বেচতে চাইবেন। ছবি: রয়টার্স।

খাদ্য দফতরের ধারণা, চালকল, আড়তদার, ফড়েদের এড়িয়ে চাষিরা সরাসরি সরকারের ঘরেই ধান বেচতে চাইবেন। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

এক ধাক্কায় ধানের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল-প্রতি ২০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। সহায়ক মূল্যের এই ‘অস্বাভাবিক’ বৃদ্ধি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে রাজ্য সরকারকে।

বিড়ম্বনা মূলত তিন দিক থেকে। প্রথমত, খাদ্য দফতরের ধারণা, চালকল, আড়তদার, ফড়েদের এড়িয়ে চাষিরা সরাসরি সরকারের ঘরেই ধান বেচতে চাইবেন। ফলে বিভিন্ন ব্লকের কিসান মান্ডিগুলিতে ছড়িয়ে থাকা ৩৩২টি ধান সংগ্রহ কেন্দ্রে পুজোর পর থেকেই বাড়বে চাষির ভিড়। ধান বিক্রির হুড়োহুড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা খাদ্য দফতরের একাংশের।

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলছেন, ‘‘সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে ভিড় সামলাতে প্রয়োজনে পুলিশ রাখতে হবে। চাষিরা যাতে সরকারের ঘরেই সরাসরি ধান দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হবে।’’

উৎপাদন খরচের প্রায় দেড় গুণ সহায়ক মূল্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ফলে সামনের মরসুমে প্রতি কুইন্টাল ধান কেনা হবে ১৭৫০ টাকা দরে। কুইন্টাল-পিছু ধানের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ১১৬৬ টাকা। চলতি বছরে সরকার ধান কিনছে প্রতি কুইন্টাল ১৫৫০ টাকায়।

দ্বিতীয় বিড়ম্বনা রাজ্যের বকেয়া ধান সংগ্রহকে ঘিরে। খাদ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যে প্রতি বছর ৩৫ লাখ টন ধান সংগৃহীত হয়। এ বার এ-পর্যন্ত হয়েছে ৩০ লাখ টন ধান। বাড়তি সহায়ক মূল্য ঘোষণা করায় বাকি পাঁচ লাখ টন ধান খাদ্য দফতরের হাতে আসা মুশকিল। এক কর্তার কথায়, ‘‘অনেক চাষিই এখন আর ধান বিক্রি করতে চাইবেন না। ফলে চলতি বছরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।’’

তৃতীয়ত, ধানের দাম বাড়ায় বাড়বে সব ধরনের চালের দামও। এক খাদ্যকর্তা জানান, ১০০ কেজি ধান ভাঙিয়ে ৬৮ কেজি চাল মেলে। ১০০ কেজি ধানের দাম ২০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ১০০ কেজি চালের দাম বাড়বে প্রায় ৩০০ টাকা। এর প্রভাবে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে পারে। কেন্দ্র সহায়ক মূল্য বাড়ানোয় চাষিদের ‘উৎসাহ মূল্য’ দেওয়ার চাপ বাড়ছে রাজ্যের উপরে। রাজনৈতিক কারণে সেই খাতে রাজ্যের ঘাড়েও বোঝা চাপতে পারে। খাদ্যমন্ত্রী জানান, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের বাইরে এক কোটি ৭৫ লক্ষ মানুষকে দু’টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হয়। তাতে মাসে ৩৬ হাজার টন চাল লাগে। এই খাতে বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হতে পারে রাজ্যের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Paddy Rice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE