Advertisement
E-Paper

সাংবিধানিক জালে বাধ্য হয়ে জিএসটি

পাশাপাশি যে অবস্থায় কেন্দ্র নতুন কর চালু করেছে, তার দায় এমপাওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে তৎকালীন বাম জমানার অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তর উপর চাপিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪৫

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য জিএসটি মানতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু নতুন কর চালুর পর সাধারণ মানুষের যে অসুবিধা হচ্ছে, তার বিরোধিতা বজায় থাকবে বলে মঙ্গলবার বিধানসভায় জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি হল নোট বাতিল এবং জিএসটি চালু।’’

পাশাপাশি যে অবস্থায় কেন্দ্র নতুন কর চালু করেছে, তার দায় এমপাওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে তৎকালীন বাম জমানার অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তর উপর চাপিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার যুক্তি, ‘‘অমিত মিত্র এমপাওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান বেশি দিন ছিলেন না। লোকসভায় বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পর এই কমিটির কোনও মূল্য নেই। জিএসটি কাউন্সিলই সব ক্ষমতার অধিকারী। ফলে অমিতবাবুর কোনও দায় নেই।’’ এ কথা শুনে অবশ্য বামেরা বিধানসভার মধ্যেই প্রতিবাদ করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানান, জিএসটি কাউন্সিলে কার্যত একা লড়াই করেছেন অমিত মিত্র। প্রথম দিকে তামিলনাডু কিছুটা সমর্থন করলেও জয়ললিতার মৃত্যুর পর কার্যত একা হয়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ। ৩১ সদস্যের মধ্যে একা কোনও আপত্তি তুলে পাশ করানো যায় না।

তা সত্ত্বেএ কী ভাবে তিনি লড়াই চালিয়েছেন তা জানাতে এ দিন জবাবি ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর জবাবের আগেই মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে কিছু বলতে চান। কারণ, জিএসটি মেনে নেওয়ার জন্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই সরকারের সমালোচনায় মুখর ছিলেন বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী।

আরও পড়ুন: পেঁয়াজ-সহ আনাজ আগুন, কাল বৈঠক মমতার

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করেছি। কিন্তু না মানলে ১ জুলাই থেকে ট্রেজারি বন্ধ হয়ে যেত। তখন সরকারি কর্মচারীদের বেতন, উন্নয়ন প্রকল্প, সরকারের কাজকর্ম চলত কী করে? সেই কারণেই জুনের শেষে অধ্যাদেশ জারি করতে হয়েছে।’’ সুজনবাবুকে কটাক্ষ করে মমতা সভায় জানান, তৃণমূলের মন আর মুখ একই। সেই কারণে নরেন্দ্র মোদীর মধ্যরাতের অনুষ্ঠান বয়কট করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সিপিএমের অসীম দাশগুপ্তই যোগ দিয়েছিলেন। ফলে জিএসটি চালুর কৃতিত্ব যদি থেকে থাকে তা অসীমবাবুর। যা খারিজ করে বাম পরিষদীয় নেতা পরে বলেন, ‘‘অসীমবাবু যা বলে এসেছিলেন তা মানলে এত কষ্ট হত না। যা হয়েছে তা এমপাওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে অমিতবাবু এবং এনডিএ সরকারের দায়।’’

বিধানসভায় ভাষণে জিএসটি নিয়ে রাজ্যের লড়াইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন সুজনবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘আজ অর্ডিন্যান্স হয়ে থাকা একটি বিল নেহাতই আনুষ্ঠানিকতার জন্য পাশ করাতে হচ্ছে। যখন আলোচনার প্রয়োজন ছিল সরকার তখন বিধানসভা এড়িয়ে গিয়েছে। আর এখন মরা বিলে সাড়ে চার ঘন্টা আলোচনা হচ্ছে।’’

সুজনবাবুর মতে, জিএসটি নিয়ে আপাতত শুধু লাভের অঙ্কই হয়তো দেখা যাচ্ছে, কিন্তু কয়েক বছর পর যদি কোনও বিপত্তি দেখা যায় তখন রাজ্যের আর কিছু করার থাকবে না। সব ঠিক করবে জিএসটি কাউন্সিল। যা সংসদের স্ক্রুটিনির বাইরে। সুজনবাবুর আরও মত, ‘‘এক দেশ, এক কর-নীতির পিছনে আসলে হিটলারি ছায়া রয়েছে। রাজ্যের ক্ষমতা কে়ড়ে নিয়েছে এই কর।’’

যা এক প্রকার মেনে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর কথায়,‘‘আপনার কথার সঙ্গে একমত। মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মর্যাদা না রেখে যদি সব কিছু সংখ্যাধিক্যের জেরে পাশ করিয়ে নেওয়া হয় তা সমস্যা বাড়ায়।’’

GST Mamata Banerjee জিএসটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় GST Bill State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy