Advertisement
E-Paper

গরমে ট্রেনযাত্রা শেষে মৃত্যু কিশোর শ্রমিকের

রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই পীযূষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিবারের লোকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৫:১০
সোমবার রাতে মৃত্যু হয় পীযূষের।

সোমবার রাতে মৃত্যু হয় পীযূষের।

দু’দিনের রেল-যাত্রা। পথে প্রচণ্ড গরম। এই দীর্ঘ সময়ে কী পেয়েছিলেন তাঁরা? ষোলো বছরের পরিযায়ী শ্রমিক পীযূষ দাসের সঙ্গীরা জানিয়েছেন, পাঁউরুটি আর সামান্য জল ছাড়া বিশেষ কিছু মেলেনি। সেই ধকল সয়নি পীযূষের, বলছিলেন তার বাড়ির লোকেরা। সহযাত্রীদের কাছে থেকেই তাঁরা জেনেছেন, ট্রেনেই বমি করতে শুরু করে সেই কিশোর। রবিবার মালদহে ট্রেন থেকে নেমে বাসে চেপে নিজের শহর হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরে আসে সে। সেখানে কোয়রান্টিনে থাকার সময়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে পীযূষ। তাকে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই সোমবার রাতে মৃত্যু হয় পীযূষের। এ দিন মালদহে তার ময়না-তদন্ত করা হয়। পাশাপাশি করোনা টেস্টও করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।

রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই পীযূষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিবারের লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ— ডিহাইড্রেশনের পর তার ওআরএস দরকার ছিল, কিন্তু তা মেলেনি। কোয়রান্টিনে তার খিচুনি শুরু হয়, যা ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ বলেই জানান ডাক্তারেরা। পূর্ব রেলের মালদহ ডিভিশনের ডিআরএম যতীন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘খাওয়ার সমস্যা নিয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দেখা হবে।’’

এ দিনই ভিন্‌ রাজ্য থেকে বাড়ি ফেরার পথে শ্রমিক স্পেশালে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল মিজোরামের এক তরুণীর। পদাতিক এক্সপ্রেসে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক মহিলারও।

আরও পড়ুন: শহরে এক দিনে আক্রান্ত ১১৬, বদলাচ্ছে কন্টেনমেন্ট নীতি

আরও পড়ুন: ঘরবন্দি থেকে করোনা-জয় পরিবারের

গরিব পরিবারের বড় ছেলে পীযূষ বাড়ির লোকের মুখে দু’মুঠো ভাত জোগাতে ছ’মাস আগে মুম্বই গিয়েছিল। স্পেশাল ট্রেনে রবিবার রাতে মালদহে পৌঁছয়। সহযাত্রীদের একাংশ ও পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ততক্ষণে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সেই অবস্থায় বাসে করে হরিশ্চন্দ্রপুরে পৌঁছে অন্যদের সঙ্গে থানায় লাইন দেয় পীযূষ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাম নথিভুক্ত করে ভোররাতে খন্তা হাইস্কুল কোয়রান্টিনে পৌঁছনোর পরে তার খিচুনি শুরু হয়। অচেতন পীযূষকে পুলিশ হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। ঘণ্টা দেড়েক বাদে তাকে মালদহে রেফার করা হয়। সেখানেই রাতে মারা যায় পীযূষ।

বাবা প্রদীপ দাসও দিল্লিতে শ্রমিক। তিনি এখনও ফিরতে পারেননি। পীযূষের মামা গাবুয়া দাস, কাকা বচ্চন দাসেরা বলেন, ‘‘গোটা যাত্রাপথে পাউরুটি, জল ছাড়া কিছু মেলেনি। ঠিক ভাবে খাবার পেলে ওকে এ ভাবে মরতে হত না।’’ হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিএমওএইচ সাগর বসাকও একই কথা বলেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেঘোরে মরতে হল ছেলেটাকে।’’

Migrant Workers West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy