অস্ত্রসজ্জা: বুধবার রায়গঞ্জের রাস্তায় দুষ্কৃতীরা।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র তোলা ঘিরে আরও এক বার রণক্ষেত্র হল রায়গঞ্জ। বিজেপির প্রার্থীদের মার ও তাঁদের দলের উপরে বোমা-বন্দুক নিয়ে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সকাল সাড়ে ১১টা। রায়গঞ্জের বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র তুলতে ও জমা দিতে যাচ্ছিলেন বিজেপির ১৮ জন প্রার্থী। সেই দলে ছিলেন এক মহিলাও। অভিযোগ, কলেজপাড়া মোড়ে চড়াও হয় তৃণমূলের লোকজন। মারধরের ধাক্কায় ফিরতে বাধ্য হন বিজেপি প্রার্থীরা। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিজেপি। পুলিশের থেকে আশ্বাস পেয়ে আড়াইটে নাগাদ দলের শতাধিক নেতা-কর্মীকে নিয়ে ফের বিডিও অফিসের দিকে রওনা হন ওই ১৮ জন।
বিডিও অফিসে সকাল থেকেই ছিল পুলিশ পাহারা। বিজেপির অভিযোগ, এ বার সেই অফিস থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে, হাসপাতাল মোড়ের কাছে তাঁদের পথ আটকায় মুখে কাপড় বাঁধা দুষ্কৃতীরা। কারও হাতে ওয়ান শটার, ৯ এমএম পিস্তল, কারও হাতে বোমা। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা বোমা মারে, শূন্যে ছ’সাত রাউন্ড গুলি চালায়। তাড়া খেয়ে বিজেপির নেতা-কর্মীরা দলের জেলা কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। তখন বিজেপির এক নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ।
বিডিও অফিসের এত কাছে ধুন্ধুমার হল, তবু কেন সেখানে পুলিশ ছিল না? জেলার এসপি শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘বিডিও অফিসের ১০০ মিটারের মধ্যে নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, খবর পেয়েই পুলিশ গিয়েছে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের দেখা মেলেনি।
হিংসা: বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা ও জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁদের উপর বোমা-বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা।
অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। বুধবার রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বিজেপিকেই দায়ী করে বলেন, ‘‘বাইরের লোক আনিয়ে নিজেদের অফিসে ভাঙচুর করে সহানুভূতি আদায়ের জন্য ছবি তোলানো হচ্ছে কি না, তদন্ত করতে হবে।’’ পুলিশ পরে তিন জনকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, সকলেই বিহারের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: কার কথা যে শুনি!
অমলের দাবি, ‘‘রায়গঞ্জবাসী গুলি-বোমার রাজনীতি পছন্দ করেন না।’’ রায়গঞ্জবাসীরা বলছেন, বছরখানেক আগে আদিবাসীদের মিছিলকে ঘিরে বা সম্প্রতি দুর্ঘটনায় এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর পরে শহর রণক্ষেত্র উঠেছিল। কেন বারবার এমন হচ্ছে, প্রশাসন তা দেখুক। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাম অভিযোগ করেছেন, ‘‘তৃণমূলের কয়েক জন নেতা আড়াল থেকে সব ঘটিয়ে এখন নাটকীয় বিবৃতি দিচ্ছেন।’’ তিনি জানান, ৭ এপ্রিল বিজেপি দল বেঁধে মনোনয়ন দিতে যাবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই দিন যা হবে, দেখা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy