পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে আক্রান্ত বিজেপি-কর্মী। (ডান দিকে) কাঁকসার রাজবাঁধে প্রহৃত তৃণমূলকর্মী। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে অশান্তি অব্যাহত। শাসক দলের তাণ্ডবের পাশাপাশিই জোরালো হচ্ছে বিজেপির প্রতিরোধও।
তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে এ বারের পঞ্চায়েত ভোট-পর্বে প্রথম প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল মালদহের কালিয়াচকে। বাঁকুড়ার রানিবাঁধে বুধবার মৃত্যু হয়েছে বিজেপি প্রার্থী অজিত মুর্মুর (৪০)। পুলিশের সামনেই তৃণমূল আশ্রিত সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা তাঁর উপরে চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ।
ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম, দাঁতন, কেশপুর, কোচবিহারের শীতলখুচি, মালবাজার, রানিগঞ্জ, ময়ূরেশ্বর, পুরুলিয়ার কাশীপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় এ দিনও বিজেপির উপরে হামলার অভিযোগ এসেছে। কিন্তু তার পাশাপাশিই পাল্টা বিজেপির তাণ্ডবের অভিযোগ এসেছে উত্তরবঙ্গের চালসা, বর্ধমানের কালনা-১, কাঁকসা এবং পুরুলিয়ার হুড়ায়। বিজেপি অশান্তি করছে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল! গঙ্গারামপুর ও কোচবিহারে আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকেরাও।
অশান্তির এই বাতাবরণে জোট বেঁধে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার ডাক আসছে বিরোধী শিবির থেকে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন বলেছেন, ‘‘আগে বুথ দখল হতো, এখন বিডিও দফতর দখল হচ্ছে! দুষ্কৃতীরা শিবির করে বসে থাকছে। আমাদের দলের প্রার্থীদের বলছি, দলবদ্ধ ভাবে মনোনয়ন জমা দিতে যান।’’ বিজেপির নাম না করে সূর্যবাবুর আরও আহ্বান, যেখানে যারাই আক্রান্ত, সকলে মিলে সেখানে প্রতিবাদ হওয়া উচিত। তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সূর্যবাবুকে বলছি, আসুন, কর্মীদের নিয়ে পথে নামুন। আমরাও আছি। বাস্তবে তো আমরাই লড়ছি! আপনাদের তো দেখা যাচ্ছে না! কিন্তু চলুন, বিডিও দফতরে একসঙ্গে যাই, ঘেরাও করি!’’
আরও পড়ুন: মনোনয়নপত্র তোলাকে ঘিরে বোমা-গুলি, রণক্ষেত্র রায়গঞ্জ
বামেরা ঠিক করেছে, মনোনয়ন-পর্বে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আগামী ৬-৭ এপ্রিল কমিশনের দফতরের কাছে লাগাতার ধর্না দেওয়া হবে। আর বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার। তৃণমূলের অভিযোগ, ভোট বানচাল করতেই বিজেপি-র এই উদ্যোগ। অভিযোগ নস্যাৎ করে দিলীপবাবু এবং মুকুল রায় জানান, ‘‘অবাধ ভোট করিয়ে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে চাই বলেই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হবে।’’ কমিশনেও এ দিন কিছু প্রার্থীকে নিয়ে দরবার করতে গিয়েছিলেন মুকুলবাবুরা।
পোলবা, নারায়ণগড়, সন্দেশখালি, ডায়মন্ড হারবার-সহ নানা জায়গায় হামলা হয়েছে সিপিএমের উপরেও। বাঁকুড়ায় বিডিও দফতরের সামনেই সিপিএমের মহিলা প্রার্থী রীতা বাউড়িকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয়েছে। কিছু জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেছে বামেরা। কিন্তু প্রতিরোধে যে হেতু এগিয়ে রয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল, তাই তৃণমূলের আক্রমণের নিশানাও মূলত তাদের দিকেই। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘যারা গোলমাল করছে, তারা রাজভবনের ছাতার তলায় আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে। যে ভাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শ্মশানে পাঠাব বলছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কমিশনকে চিঠি দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy