Advertisement
E-Paper

চরের মাঝে চলত কঙ্কাল কারবার

গোপনে এলাকার বিভিন্ন শ্মশান ও কবর থেকে মৃতদেহ এনে হাড় থেকে মাংস আলাদা করে তারা। তার পর হাড় পরিষ্কার করে পাচার করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, আলাদা-আলাদা হাড় বিক্রি হয়, আবার গোটা নড়কঙ্কালও বেচা হয়। সে ক্ষেত্রে দেহ বিশেষ রাসায়নিক-ভর্তি ড্রামে ভিজিয়ে‌ রেখে কঙ্কাল তৈরি করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৬

বর্ষার ভরা গঙ্গায় ঘন অন্ধকার চিরে একটা আলোর রেখা লক্ষ্য করে ছুটছিল নৌকাটা। তাতে‌ আরোহী পুলিশ অফিসারেরা। চরের কাছে বাঁধা অন্য একটি নৌকার টিমটিমে আলোর কাছে যেতেই পচা মাংসের বিকট গন্ধে গা গুলিয়ে উঠল সকলের। বোঝা গেল, সূত্রের খবর নির্ভুল! ওই নৌকাতেই চলছে অবৈধ কঙ্কাল পাচার কারবারিদের কাজকর্ম!

গোপনে এলাকার বিভিন্ন শ্মশান ও কবর থেকে মৃতদেহ এনে হাড় থেকে মাংস আলাদা করে তারা। তার পর হাড় পরিষ্কার করে পাচার করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, আলাদা-আলাদা হাড় বিক্রি হয়, আবার গোটা নড়কঙ্কালও বেচা হয়। সে ক্ষেত্রে দেহ বিশেষ রাসায়নিক-ভর্তি ড্রামে ভিজিয়ে‌ রেখে কঙ্কাল তৈরি করা হয়।

মাস আটেক আগে বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে এই রকমই এক কঙ্কাল তৈরির ডেরায় হানা দিয়ে পুলিশ উদ্ধার করেছিল ২২টি নরকঙ্কাল-সহ প্রচুর হাড়গোড়। তবে কঙ্কাল কারবারিদের সে বার ধরতে পারেনি পূর্বস্থলী থানার পুলিশ। পলাতক দুই পাচারকারী তাপস পাল ওরফে তপসা ও কার্তিক ঘোষকে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে ধরেছে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনটি মড়ার খুলি, ৩৮টি পাঁজর, ৬টি হিপবোন, ৪টি ব্যাকবোন ও ৪টি কাঁধের হাড়। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, সবই মানুষের দেহের হাড়। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ সেগুলি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পূর্বস্থলীতে তাড়া খেয়ে তারা ব্যবসা সরিয়ে এনেছিল গঙ্গার ও পাড়ে মায়াপুর-নবদ্বীপে। প্রাচীন মায়াপুর সংলগ্ন ছাড়িগঙ্গার নির্জন চরে কয়েক মাসেই ফুলেফেঁপে উঠেছিল কঙ্কাল কারবার। নবদ্বীপের উত্তর প্রান্তে নদী ভাঙনের ফলে বেশ কয়েক বছর আগে জেগে উঠেছিল সেই চর। মানুষের আনাগোনা খুব কম ছিল। তপসাদের এ কাজে সাহায্য করত এলাকার কিছু ছেলে। ধৃতদের বুধবার নবদ্বীপ আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নবদ্বীপ লাগোয়া পূর্বস্থলীতে কঙ্কাল পাচার চক্র বহুদিন ধরেই সক্রিয়। এক সময়ে ওই এলাকার কঙ্কাল পাচার চক্রের অন্যতম চাঁই হিসাবে উঠে এসেছিল মুক্তি বিশ্বাসের নাম। কয়েক বছর হল তিনি মারা গিয়েছেন। এখন যারা ওই এলাকায় কারবার চালায় তারা অধিকাংশই মুক্তি বিশ্বাসের শাগরেদ। তাপস পাল ওরফে তপসা এবং তার ভাই মনোজ ওরফে গপসা তাদের অন্যতম।

ব্যান্ডেল-কাটোয়া রেলপথের মেড়তলা ষ্টেশন সংলগ্ন গঙ্গার অপর পারে দেবনগর ঘাটে তপসা এবং বেলের হল্ট ষ্টেশন লাগোয়া গঙ্গার অপর পাড়ে যজ্ঞেশ্বর পুর ঘাটে গপসার ঘাঁটি। ওই এলাকার প্রায় সব কটি ঘাটেই ছড়ানো আছে চক্রের লোকজন।

Illegal Skeleton Trade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy