Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশে আসুন, ঢাকার বিমান ধরার আগে মমতাকে ডাক হাসিনার

গত বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে নবান্নে প্রস্তাব দিয়ে বলা হয়, শনিবার কলকাতা ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা দেখা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০৩:০৭
আলোচনা: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক। শনিবার শহরের এক হোটেলে। —নিজস্ব চিত্র

আলোচনা: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক। শনিবার শহরের এক হোটেলে। —নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দু’দিনের সফরসূচিতে শুধু একটি বৈঠকেরই উল্লেখ ছিল না। কারণ উভয় পক্ষের ধন্দ ছিল, আদৌ হবে তো এই বৈঠক!

গত বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে নবান্নে প্রস্তাব দিয়ে বলা হয়, শনিবার কলকাতা ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা দেখা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভাব্য এই বৈঠকের জন্যই প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের ঠাসা কর্মসূচির মাঝে ঢাকার বিমান ধরার আগে চার ঘণ্টা সময় ফাঁকা রাখা ছিল। সেই সময়েই দক্ষিণ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হল মুখ্যমন্ত্রীর। মমতাকে ঢাকা যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

হোটেলের একটি ঘরে প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ দরজার মধ্যে একেবারে একান্ত আলোচনার পরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজকের বৈঠক খুব ভাল হয়েছে। এ-পার বাংলার সঙ্গে ও-পার বাংলার বৈঠক সব সময়ই ভাল হয়। আমাদের সম্পর্ক সৌজন্যমূলক, বন্ধুত্বপূর্ণ। দুই দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা সব সময় আলোচনাকরি। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্ক কী ভাবে উন্নত করা যায়, এগুলি নিয়েই কথা হয়েছে।’’

হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখনও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম-সচিব (বাংলাদেশ-মায়ানমার) শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন। কূটনীতিকেরা বলছেন, এমন একটি বৈঠক বিদেশ মন্ত্রকও চেয়েছিল। তাই ঢাকা যখন নবান্নে প্রস্তাব পাঠায়, সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যায় সাউথ ব্লক। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলাও হাসিনা-মমতা বৈঠকের তদারকি করে গিয়েছেন। যা দেখে কৌতূহলী মহলে প্রশ্ন— তা হলে কি তিস্তার জল গড়াল? এই নদীর জলবণ্টন নিয়ে কোনও বিষয়ে সহমত হলেন দুই নেত্রী? নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে কোনও অন্তর্বর্তী চুক্তির প্রস্তাবে কি সায় মিলল? নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার অবশ্য সাফ কথা, ‘‘তিস্তা নিয়ে কোনও কথা হয়নি।’’

বাংলাদেশের তরফে কোনও বিশেষ অনুরোধ করা হয়েছিল কি— সেই প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভালবাসেন, আমিও খুব ভালবাসি। আমাদের যখনই দেখা হয়, আমরা অনেক কথা বলি। ওঁরা যথেষ্ট ভাল আছেন। ভাল করছেন। ভাল করবেন, এটা আমি বিশ্বাস করি। ওঁদের আলাদা করে চাইবার কিছু নেই।’’

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে হাসিনার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাই বেশি বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘হাসিনাজির সঙ্গে আমার সম্পর্ক একেবারে ব্যক্তিগত স্তরে। দীর্ঘ বিশ-পঁচিশ বছর ধরে। হাসিনাজির বোন রেহানা থেকে শুরু করে পরিবারের সবাইকে আমি চিনি। তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, যখন বিরোধী নেত্রী ছিলেন, তখনও তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ছিল। এটা আছে, এটা থাকবে।’’

সেই সুসম্পর্কের বার্তা দিতে মমতার জন্য নানা উপহার নিয়ে এসেছিলেন হাসিনা। মমতাও এ দিন হাসিনা ও তাঁর বোনের জন্য উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কলকাতায় একটা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান মিউজিয়াম করতে চাই। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনে শেখ মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত একটা জায়গা রয়েছে। সেটা ওরা চায় পুনরুদ্ধার করতে। আমরা সাহায্য করব।’’

হাসিনার পশ্চিমবঙ্গ সফরে তিস্তা নিয়ে একটা ঐকমত্য হতে পারে, এমন একটা আশা বাংলাদেশের মানুষের ছিল। তবে কোনও চুক্তির সম্ভাবনা যে নেই, ঢাকা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। তার পরেও হাসিনা-মমতা বৈঠক নিয়ে ও-বাংলায় কৌতূহল ছিল। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা অবশ্য এ দিন কলকাতা ছাড়ার আগে বৈঠকের বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে গোটা সফরে তিস্তা শব্দটি প্রকাশ্যে এক বারও উচ্চারণ করেননি তিনি। এর আগে স্থলচুক্তি নিয়ে সব পক্ষ সহমত হওয়ার পরেও ঠিক হয়েছিল, বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কোনও কথা বলবেন না। তবে কি এ বারও— উঠেছে প্রশ্ন।

Sheikh Hasina Mamata Banerje Bangladesh শেখ হাসিনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy