Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

মারের মুখেও মনোনয়ন, তৃণমূলের ঠিক পরেই বিজেপি

প্রাথমিক এই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করেই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, ‘‘মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে এত গেল গেল রব উঠছে! বাধা দেওয়া হলে বিজেপি এত মনোনয়ন দিল কী করে?’’

উত্তপ্ত: কালনা ব্লক অফিসের সামনে গোলমাল সামলাতে পুলিশের লাঠি। বুধবার। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

উত্তপ্ত: কালনা ব্লক অফিসের সামনে গোলমাল সামলাতে পুলিশের লাঠি। বুধবার। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৯
Share: Save:

ভোট বা প্রচার এখনও শুরুই হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়েই ধুন্ধুমার চলছে জেলায় জেলায়! কিন্তু শাসক দলের বিরুদ্ধে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার বিস্তর অভিযোগের মধ্যেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যে ইঙ্গিত মিলছে গ্রামবাংলায় বিজেপির উত্থানের!

নানা জেলায় গত দু’দিনে তৃণমূলের সঙ্গে অধিকাংশ সংঘর্ষ হয়েছে বিজেপির। প্রথম দু’দিন মনোনয়নপত্র জমা পড়ার যে হিসেব কমিশন সূত্রে পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে শাসক তৃণমূলের পরে রয়েছে বিজেপিই। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে প্রথম দু’দিনে তৃণমূল জমা দিয়েছে ১৭৫৮টি মনোনয়ন, বিজেপি দিয়েছে ১১৩৭টি। সেখানে বাম ৪১০ এবং কংগ্রেস ১২৩। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে তৃণমূলের মনোনয়ন জমা হয়েছে ৩৫৮ এবং বিজেপির ১৬৪। বাম সেখানে ৫৬। জেলা পরিষদ স্তরে আবার বিজেপি-ই দু’দিনে এগিয়ে! তারা দিয়েছে ১৪টি মনোনয়ন। বাম ও কংগ্রেস দিয়েছে ১০টি করে। আর তৃণমূল সেখানে ৬টি! তবে শাসক দল অবশ্য অনেক জেলায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার মূল প্রক্রিয়া এখনও শুরু করেনি। তাই এই পরিসংখ্যান থেকে তৃণমূল চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয়।

প্রাথমিক এই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করেই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, ‘‘মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে এত গেল গেল রব উঠছে! বাধা দেওয়া হলে বিজেপি এত মনোনয়ন দিল কী করে?’’

আরও পড়ুন: কার কথা যে শুনি!​

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের আবার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এর ব্যাখ্যা তো তৃণমূলকে দিতে হবে! বেশ কিছু জায়গায় বিজেপির উপরে যে হামলা হচ্ছে, দেখাই যাচ্ছে। কিন্তু একই সঙ্গে অনেক জায়গায় তাদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়াও হচ্ছে। বিরোধীদের মধ্যে তাই তারা এগিয়ে।’’ তবে মনোনয়ন জমা এবং প্রত্যাহারের সময়সীমা ফুরনোর আগে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে যে কিছুই বলা যায় না, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন সূর্যবাবু।

এমতাবস্থায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, বাংলায় প্রধান বিরোধী শক্তি এখন তাঁরাই। তৃণমূল যে মনোনয়ন জোর করে তুলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে, তা তাঁরা জানেন। তাই প্রস্তুত হয়েই তাঁরা নেমেছেন। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘আমরা তো বলেছি, ওরা মারলে আমরাও পাল্টা দেব!’’

এই চাপানউতোরের মধ্যেই এ দিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিমান বসু, ক্ষিতি গোস্বামী, নরেন চট্টোপাধ্যায়, মনোজ ভট্টাচার্যেরা। বিরোধীদের কথা শোনার জন্য যে রাজ্যপালকে কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল! পার্থবাবুর অভিযোগ, ‘‘কোনও তথ্য যাচাই না করে একক ভাবে অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে রাজভবন! মনে হচ্ছে, কোনও রাজনৈতিক দলের শাখা সংগঠনের প্রধান এ সব কাজ করছেন!’’ রাজ্যপালের ডাকে আজ, বৃহস্পতিবার রাজভবনে গিয়ে তাঁদের প্রতিনিধিদল ‘প্রকৃত তথ্য’ দিয়ে ত্রিপাঠীকে ‘সতর্ক’ থাকতে বলবে বলেও পার্থবাবু জানিয়েছেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু অবশ্য পার্থবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে বলেছেন, ‘‘প্রশাসন নির্বিকার, কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ! তাই আমরাই তো রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চাইছি। অতি সক্রিয় বলা যাবে কী করে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE