বিরোধীদের দাবি, রাজ্য জুড়ে ৬২ হাজার আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতির জন্য একটু সময় দিতে হবে। আর রাজ্য পুলিশের হাতে ভার দিয়ে কোনও ভাবেই সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্ভব নয়। তাদের আপাতত কোনও সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিল না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রয়োজনে আবার সব দলকে ডেকে আলোচনা হবে বলে জানিয়ে দিল তারা।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল কমিশন। বিরোধী বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি সমস্বরেই প্রার্থী ও ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের আরও মূল জিজ্ঞাস্য, পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে? ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হবে জুলাইয়ে। বিরোধী নেতারা জানতে চেয়েছেন, বোলপুর এবং ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে ইঙ্গিত ছিল, পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে জুন-জুলাইয়ে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে, মে মাসে রমজান শুরুর আগেই ভোট-পর্ব মিটে যাবে। কমিশনের পরিকল্পনা কী? রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহ বৈঠকে বলেন, দু’মাস ধরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কমিশনের আলোচনা চলছে। এখনও দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি।
সরকারি সূত্রের খবর, মে মাসে তিন দফায় পঞ্চায়েত ভোট করতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। সে ক্ষেত্রে ১৬ মে-র মধ্যে ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে। সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী ও সুখেন্দু পানিগ্রাহী, কংগ্রেসের আখরুজ্জামান ও ঋজু ঘোষাল, বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার, সিপিআইয়ের প্রবীর দেব, আরএসপি-র সুভাষ নস্কর ও সুকুমার ঘোষ, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানি ও হরিপদ বিশ্বাসেরা এ দিনের বৈঠকে যুক্তি দিয়েছেন, পরীক্ষার মরসুম চলায় ১১ এপ্রিল পর্যন্ত কোনও কর্মসূচি নেওয়াই যাবে না। তাঁদের দাবি, ভোটের ঘোষণা যদি কয়েক দিনের মধ্যে হয়, তা হলেও বি়জ্ঞপ্তির জারির আগে ২০-২৫ দিন সময় দিতে হবে। যাতে এত আসনের প্রার্থীর কাগজপত্র তৈরি এবং প্রচারে কিছুটা সময় পাওয়া যায়।
কমিশন নির্দিষ্ট কিছু না বললেও দাঁইহাটে দলের কর্মী বৈঠকের পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলে দিয়েছেন, ‘‘অগস্টের বদলে মে-তে পঞ্চায়েত ভোট হলে বিজেপি প্রচারের সময়ই পাবে না। তেমন হলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেছেন, ‘‘যতই সময় দাও, বিরোধীরা প্রস্তুত হবে না! মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মসূচির মোকাবিলা ওরা কী ভাবে করবে!’’
শুধু বিডিও দফতরের বদলে মহকুমাশাসক এবং জেলাশাসকের দফতরেও পঞ্চায়েতের মনোনয়ন জমা নেওয়ার ব্যবস্থা রাখার দাবি করেছে বিরোধীরা। বিজেপি অনলাইন ব্যবস্থাও চেয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে নির্বাচন কমিশনার কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি। তবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর একার পক্ষে কিছু করার নেই। বৈঠকের পরে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘যে পুলিশ রামনবমী সামলাতে পারে না, প্রাণহানি হয়, তাদের দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট সম্ভব?’’ তৃণমূলের দুই প্রতিনিধি সুব্রত বক্সী ও তাপস রায় অবশ্য বৈঠকে বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোট সামলাতে রাজ্য পুলিশই যথেষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy