প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরোবে আগামী ২৩ মে। তার ঠিক তিন দিনের মাথায়, ২৬ মে রাজ্য বেতন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে নবান্নের ইঙ্গিত, বেতন কমিশনের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়তে চলেছে। যদিও প্রশাসনিক মহলের কানাঘুষো, ভোটের ফলাফল এ-দিক ও-দিক হলে ওই কমিশনের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা বলা মুশকিল। তাই কমিশনের ভবিতব্য নিয়ে কর্মীদের মনে আশা ও সংশয়ের দোলাচল চলছে বলে নবান্নের খবর।
ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে, এই মর্মে ২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর রাজ্য বেতন কমিশন গড়া হয়েছিল। তার পর থেকে কয়েক দফায় তাদের মেয়াদ বেড়েছে। গত সাড়ে তিন বছরে কর্মী সংগঠনের ৪৫০টি দাবিপত্রের শুনানি শেষ করে সরকারের ঘরে পাঠিয়েছে কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মীদের দাবিদাওয়া শোনার পরে ৫১টি দফতরের বক্তব্য জানার কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত ২৫টি দফতর বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বক্তব্য পেশ করেছে। সপ্তাহে একটি করে দফতরের শুনানি হওয়ায় বাকি ২৬টি দফতরের বক্তব্য শুনতে আরও অন্তত ছ’মাস লাগতে পারে। এখানেই শেষ নয়, কর্মী সংগঠনের বাইরেও ৯০০ জন দাবিপত্র পেশ করেছেন। সেই সব আবেদনও শুনতে হবে কমিশনকে। এ রাজ্যে বহু সরকারি কর্মীর সংগঠন করা নিষিদ্ধ। যেমন পুলিশকর্মী, যেমন আবগারি দফতরের কর্মী। ওই সব বিভাগের কেউ কেউ ব্যক্তিগত ভাবে আবেদন করেছেন। তার পরে রয়েছে সরকারের অধীন ৭৮টি সংস্থার বেতন বৃদ্ধির শুনানি। সব মিলিয়ে কমিশনের এখন অনেক কাজ বাকি বলে জানান কমিশনের এক কর্তা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সেই কাজ শেষ করতেই লোকসভা ভোটের পরে বেতন কমিশনের মেয়াদ ফের এক দফা বাড়ানোর ব্যাপারে জল্পনা চলছে নবান্নে। ভোটের মরসুমে রাজনীতির ময়দানেও বেতন কমিশন নিয়ে চর্চা অব্যাহত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রায় প্রতিটি জনসভায় নিয়ম করে রাজ্য কর্মীদের বকেয়া বেতন কমিশন এবং ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে খোঁটা দিচ্ছেন। একই ভাবে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন বাম ও কংগ্রেসের নেতানেত্রীরাও।
এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে রাজ্যের অর্থ দফতর। তবে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে অর্থ দফতর যে-দাবি জানিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ সালে বর্তমান হারে কর্মীদের বেতন দিতে বছরে ৪২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে। বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে তা বেড়ে হবে ৫২ হাজার ৬৪ কোটি। অর্থ দফতর বেতন কমিশনের কাছে ২০১৯-২০ সালে বেতন বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করায় আশার আলো দেখেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৈরি বেতন কমিশন ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেও সুপারিশ পেশ করতে পারেনি।
কমিশন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের হারে বেতন বাড়াতে হলে রাজ্যকে বছরে বাড়তি ১১ হাজার কোটি টাকার ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ি ভাড়ার টাকা আপাতত না-দিলে খরচ হতে পারে ৭০০০ কোটি। নবান্নকে তা জানিয়েও রেখেছে কমিশন। কিন্তু আবার যদি মেয়াদ বাড়ে, তা হলে কমিশনের রিপোর্ট লেখার তাড়া থাকবে না বলেই জানিয়েছেন এক কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy