Advertisement
E-Paper

শব্দ-দাপট ৯০ পার হলে সাজা এ বারেও

কালীপুজোয় এ বার বহাল থাকল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকাই। অর্থাৎ, ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের বাজি রাজ্যে নিষিদ্ধ। বাজির শব্দমাত্রা নিয়ে মামলার জেরে পর্ষদের ২০১৩ সালের নির্দেশিকা বাতিল করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০১:০২

কালীপুজোয় এ বার বহাল থাকল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকাই। অর্থাৎ, ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের বাজি রাজ্যে নিষিদ্ধ।

বাজির শব্দমাত্রা নিয়ে মামলার জেরে পর্ষদের ২০১৩ সালের নির্দেশিকা বাতিল করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। তাঁদের নির্দেশ ছিল, শব্দমাত্রা নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষা করে নতুন করে নির্দেশিকা জারি করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা রিপোর্ট না করলেও একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশে ৯০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা বেঁধে নির্দেশিকা জারি করে পর্ষদ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের হয়েছিল। সোমবার মামলাটির শুনানি হলেও ৯০ ডেসিবেলের নির্দেশিকা খারিজ করেনি পরিবেশ আদালত।

এ দিন পরিবেশ আদালত জানায়, আজ, মঙ্গলবার কালীপুজো। তার ২৪ ঘণ্টা আগে নির্দেশিকা খারিজ করলে বাজির শব্দমাত্রা নিয়ে বিভ্রান্তি হতে পারে। নতুন করে নির্দেশিকা জারির সময় ও পরিকাঠামো প্রশাসনের হাতে নেই। বিশেষজ্ঞ কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ছাড়া শব্দমাত্রা জারি করায় এ দিন আদালতের অসন্তোষের মুখে পড়েছে পর্ষদ। পরিবেশ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পর্ষদ পরিবেশ আইনের অপব্যবহার করছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি না করে কীসের ভিত্তিতে ৯০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা ধার্য করা হল, পর্ষদের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়েছে ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। তিন সপ্তাহের মধ্যে পর্ষদকে এ ব্যাপারে হলফনামা জমা দিতেও বলা হয়েছে।

আগামী ২১ ডিসেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানি। এ দিন আদালতের নির্দেশের পরে সারা বাংলা আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, ‘‘আজ আমাদের নৈতিক জয় হল।’’

সরকারি নিয়ম কী?

১) ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দবাজি নিষিদ্ধ। অর্থাৎ, চকোলেট বোমা-দোদমা ফাটানো যাবে না।

২) ‘সাইলেন্স জোন’-এ শব্দ বা আতস, কোনও বাজিই ফাটানো যাবে না। অর্থাৎ হাসপাতাল, নার্সিংহোম, গ্রন্থাগার, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাগোয়া চত্বরে বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ।

৩) রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা, শব্দ তৈরি করে এমন কোনও বাজি ফাটানো যাবে না।

সরকারি এই নিয়ম ভাঙলে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে পারেন। মাটি হতে পারে কালীপুজোর আনন্দ।

শব্দবাজির বিরুদ্ধে

শব্দবাজি নিয়ে সচেতনতার বাড়াতে পথে নেমেছে পুলিশ-প্রশাসন। সংবাদমাধ্যমে শব্দবাজি বয়কটের আর্জি জানানোর পাশাপাশি এলাকাগত ভাবে প্রচারও চলছে। পথে নেমেছেন বিভিন্ন কাউন্সিলরেরা। কলকাতা পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা নিজের এলাকায় ঘুরে শব্দবাজি না ফাটানোর কথা বলছেন। কালীপুজোর দিনেও একই ভাবে সক্রিয় থাকবেন বলে জানান তিনি। কলকাতা পুলিশের সব থানাই শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রচার করছে। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা রণপা নৃত্যশিল্পীদের এনে শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রচার করেছে। প্রচারে নেমেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম (৯৮৩১৩১৮২৬৫, ৯৮৩৬৬৬৯৪৩৩) খুলবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সবুজ মঞ্চ’ও। কালীপুজোর রাতে নজরদারির জন্য শহরে ঘুরবে তাদের দু’টি দল।

চিন্তা কোথায়?

বাজি ব্যবসায়ীদের মামলার জেরে এ বার বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল নাকি ৯০ ডেসিবেল— তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। রাজ্যে শব্দমাত্রা কত, তা বুঝতে পারছিল না পুলিশও। তাই শব্দবাজি নিয়ে ধরপাকড়ও হয়নি। বাজি ব্যবসায়ী সংগঠনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অন্তত ২০০ টন শব্দবাজি ক্রেতাদের হাতে পৌঁছে গিয়েছে।’’ ওই শব্দবাজি এ বার পুলিশ-প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের ঘুম কাড়তে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই লালবাজার জানিয়েছে, কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই শব্দবাজি ঠেকাতে মোটরবাইক ও অটোয় অলিগলিতে টহল দেবে পুলিশ। অভিযোগ জানাতে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে (২২১৪৩২৩০, ২২১৪৩০২৪) ফোন করা যেতে পারে। কালীপুজো ও দীপাবলীতে শব্দবাজি নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য থাকছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের টোল-ফ্রি নম্বর (১৮০০৩৪৫৩৩৯০)। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলছেন, ‘‘সাধারণ মানুষের বেশির ভাগই শব্দবাজি পছন্দ করেন না। এটা আমাদের ভরসার জায়গা।’’

banned 90 decibel Fireworks State Pollution Control Board kalipuja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy