Advertisement
E-Paper

পাঠক টানতে সদস্য ‘ফি’ মকুব সরকারি গ্রন্থাগারে

আগামী ১ মার্চ থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি গ্রন্থগারে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে বলে গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে খবর। রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার দফতরের অতিরিক্ত সচিব গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এবিষয়ে সমস্ত জেলা ও মহকুমা, টাউন ও গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২৮

টেলিভিশন আর মোবাইলের দাপটে বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ পড়ুয়া গ্রন্থাগারমুখী হচ্ছে না বলে প্রায়ই শোনা যায়। শহরে তো বটেই, গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলিতেও পাঠক ও সদস্য সংখ্যা ক্রমশ কমছে বলে অভিযোগ। যদিও গ্রন্থাগারগুলির আধুনিকীকরণ এবং পছন্দের বই কিনে পাঠকদের টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই পথ ধরে এবার স্কুল- কলেজের পড়ুয়া থেকে সাধারণ পাঠককে গ্রন্থাগারমুখী করে তুলতে এবং সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে গ্রন্থাগারের সদস্য চাঁদা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।

আগামী ১ মার্চ থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি গ্রন্থগারে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে বলে গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে খবর। রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার দফতরের অতিরিক্ত সচিব গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এবিষয়ে সমস্ত জেলা ও মহকুমা, টাউন ও গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। এ ছাড়া গ্রন্থাগার দফতরের উদ্যোগে চলতি বছর থেকে শুরু হচ্ছে ‘বই ধরো, বই পড়ো’ প্রকল্প। নতুন এই প্রকল্পে জেলা, মহকুমা, টাউন ও গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলিতে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত গ্রন্থগার মিলিয়ে চলতি বছরে মোট সদস্য সংখ্যা দেড় কোটিতে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রায় প্রতিটি জেলাকে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎ পান বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারের বার্ষিক সদস্য ‘ফি’ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রন্থাগার দফতর। আগামী ১ মার্চ থেকে ওই নিয়ম চালু হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য ‘বই ধরো, বই পড়ো’ প্রকল্প চালু করে আরও বেশি মানুষকে গ্রন্থাগারের সদস্য করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’ তবে অনেকেরই প্রশ্ন, এখন সহজেই মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপে বা গুগলের মাধ্যমে বই পড়ার সুযোগ রয়েছে। তাই এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণ পাঠককে কতটা গ্রন্থাগারমুখী করবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।

রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারের সদস্য ফি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে গ্রন্থাগারের সদস্য হতে আগ্রহ বাড়বে। গ্রন্থাগার থেকে পড়ার জন্য বাড়িতে বই নেওয়ার ক্ষেত্রে জমা টাকার পরিমাণ ৫০০ টাকা করা হয়েছে। কারণ, গ্রন্থাগার থেকে অনেকে দামি বই বাড়ি নিয়ে যান। তাই এই ব্যবস্থা। এতে সদস্যদের অসুবিধা হবে না। বই ফেরত দিলে টাকাও ফেরত পাবেন সদস্য। ’

পশ্চিমবঙ্গ সাধারণ গ্রন্থাগার কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারের বার্ষিক চাঁদা থেকে অফিস চালানোর দৈনন্দিন খরচ উঠত। এ বার সেই টাকা কোথা থেকে আসবে তা স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া এককালীন ৫০০ টাকা জমা দেওয়াটা অনেক পাঠকের পক্ষে সম্ভব নয়। আশা করি, সরকার পুরো বিষয়টি ভেবে দেখবে।’’

গ্রন্থগার দফতর সূত্রে খবর, দফতরের অধীনে রাজ্যে ২৪৮০টি গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে ২৪৬০ টি সরকার পোষিত, ১৩ টি সরকারি ও ৭টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়। পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ১২১টি গ্রন্থাগার রয়েছে। গ্রন্থাগারে শিশু সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে স্কুলপড়ুয়াদের কাছে যাওয়া হবে।

এ ছাড়া কলেজ পড়ুয়া, সাদারণ পাঠককে গ্রন্থাগারের সদস্য হওয়ার জন্য প্রচার চালানো ও ফর্ম দেওয়া হবে। সাংসদ, বিধায়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের গ্রন্থাগারের ‘গ্লোবাল মেম্বারশিপ কার্ড’ দেওয়া হবে। ওই কার্ড ব্যবহার করে রাজ্যে যে কোনও জায়গায় সরকারি গ্রন্থাগার থেকে বই নিতে পারবেন তাঁরা।

West Bengal Public Library Network library Member Fees
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy