রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে রুক্ষ মাটিতে ফল ও সব্জি চাষের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। ঠিক হয়েছে, প্রথম ধাপে অন্তত ১৫ হাজার কৃষক পরিবারকে এর আওতায় নিয়ে আসা হবে। আনা হবে জমিহীন কৃষকদেরও। পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য স্তরে একটি কমিটি গড়া হয়েছে।
বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর—এই চার জেলা এবং বর্ধমানের আসানসোল-দুর্গাপুর অঞ্চলের কিছু অংশে মাটি রুক্ষ, বৃষ্টিপাত কম। চাষবাসও কম হয়। জলের অভাবে বহু চাষ মার খায়। এই অঞ্চলগুলিতেই কম জলে উন্নত মানের বীজ, চারা ও সারের সাহায্যে সব্জি ও ফল চাষ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্যের উদ্যানপালন দফতর। এই প্রকল্পের জন্য রাজ্যের কৃষি, সেচ, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন ও অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরকেও জুড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সম্প্রতি মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। সেখানেই ঠিক হয়েছে, জেলা সভাধিপতি ও জেলাশাসকদের মাথায় রেখে জেলা স্তরেও একটি করে কমিটি গড়া হবে। উদ্যানপালন দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এমন অনেক ফসল আছে, বাঁধাধরা মরসুমের আগেই যার চাষ করতে পারলে বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষ্য, সেই চাষই। পাশাপাশি, মরসুমি ফল ও সব্জির চাষও করা হবে। রফতানিযোগ্য কিছু ফল ও সব্জি চাষের জন্য কোনও কোনও এলাকা চিহ্নিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই সব জায়গায় জৈব সারে চাষ হবে। এই ধরনের চাষে উৎসাহ দিতে কৃষক পরিবারগুলিকে বেশি ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার। দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। করা হবে বিপণনের ব্যবস্থাও।
রাজ্যের উদ্যানপালনমন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা জানান, আম, পেয়ারা, বিশেষ ধরনের মুসাম্বি লেবু, বড় কুল এবং মরসুমি সব ধরনের সব্জির চাষই যাতে করা যায়, তার পরিকল্পনা হচ্ছে। ধাপে ধাপে পরীক্ষামূলক ভাবে জেলাগুলিতে ওই চাষ ছড়িয়ে দেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই সব অঞ্চলে মাটির উর্বরতা কম, জলের অভাব রয়েছে। তাই কোথায়, কোন ফল ও সব্জির চাষ করা যায়, ঠিক হবে কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে।’’
সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করার কাজ শুরু হবে। বেছে নেওয়া হবে কৃষক পরিবারগুলিকেও। প্রথম ধাপে প্রকল্পের কাজ চলবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। খরচ হবে ৭০ কোটি টাকা। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির মোট ১৮,৯০০ হেক্টর জমিকে ফল ও সব্জি চাষের আওতায় আনার চেষ্টা হবে। এর মধ্যে ফল চাষের জন্য ১৬,২০০ হেক্টর এবং সব্জি চাষের জন্য ২,৭০০ হেক্টর জমি চিহ্নিত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy