Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
West Bengal News

খুন হওয়া কর্মীর দেহ ছাড়াতে আসানসোলে অবরোধ বিজেপির, উত্তপ্ত পশ্চিম বর্ধমান

কাঁকসা থানা এলাকার সরস্বতীগঞ্জে রবিবার রাতে বিজেপির বুথ কমিটির সভা বসেছিল। সভা শেষে খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও ছিল। নৈশভোজ মেটার পর যখন বাড়ি ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা, ঠিক তখনই হামলা হয় বলে বিজেপির অভিযোগ।

নিহত বিজেপির বুথ সভাপতি সন্দীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।

নিহত বিজেপির বুথ সভাপতি সন্দীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৭
Share: Save:

তরুণ বিজেপি কর্মীর খুনকে কেন্দ্র করে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান। রবিবার রাতে কাঁকসায় খুন হয়েছেন বিজেপির বুথ সভাপতি সন্দীপ ঘোষ। শুধু রাজ্য বিজেপি নয়, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শুরু করেছে। মৃত বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে মিছিলের তোড়জোড়ও শুরু করেছিল বিজেপি। কিন্তু মৃতদেহ ছাড়া হচ্ছে না হাসপাতাল থেকে। বিজেপির রাজ্য নেতারা আসানসোলে পৌঁছনোর পরে আরও উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। এলাকায় শুরু হয়েছে অবরোধ।

Advertisement

কাঁকসা থানা এলাকার সরস্বতীগঞ্জে রবিবার রাতে বিজেপির বুথ কমিটির সভা বসেছিল। সভা শেষে খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও ছিল। নৈশভোজ মেটার পর যখন বাড়ি ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা, ঠিক তখনই হামলা হয় বলে বিজেপির অভিযোগ। গুলি করে খুন করা হয় সন্দীপকে। হামলায় জখম হন আরও দু’জন। তাঁদের মধ্যে একজন এখনও চিকিৎসাধীন।

রাজ্য বিজেপি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দায় সরব হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় টুইটারে আক্রমণ করেন তৃণমূলকে। দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বয়ান আরও চড়া। খুন হওয়া বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষের রক্তাক্ত মুখের ছবি টুইট করে কৈলাসের প্রশ্ন, ‘‘আর কত প্রাণ নেবে খুনি মমতা সরকার!’’

সইফুল নামে এক স্থানীয় মাফিয়া এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে বলে বিজেপির দাবি। সইফুল তৃণমূলের লোক বলেও বিজেপি নেতারা দাবি করছেন। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই বলে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা দাবি করছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: কী করে মিটিং করব, ওঁদের বিরুদ্ধে তো ফৌজদারি মামলা! হাইকোর্টে বলল রাজ্য

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও বাবুল সুপ্রিয়র টুইট।

সন্দীপের দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হবে— সোমবার এমনই কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বিজেপির সে পরিকল্পনা আটকে গিয়েছে প্রশাসনিক বাধায়। সন্দীপের দেহ এখনও ছাড়া হয়নি আসানসোলের হাসপাতাল থেকে। পুলিশদেহ ছাড়তে দিচ্ছে না, বিক্ষোভ আটকাতেই পুলিশ সন্দীপের দেহ আটকে রেখেছে হাসপাতালে— অভিযোগ বিজেপি নেতাদের। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখেই রাজ্য স্তরের একাধিক নেতাকে পশ্চিম বর্ধমানে পাঠিয়ে দিয়েছে উচ্চতর নেতৃত্ব। রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের একটি জনসভা হওয়ার কথা ছিল এ দিন দুর্গাপুরে। নেতৃত্বের নির্দেশে সে সভা বাতিল করে লকেট পৌঁছেছেন আসানসোলে। মেদিনীপুরে কর্মসূচি ছিল রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর। তিনিও কর্মসূচি বাতিল করে আসানসোল চলে গিয়েছেন। কলকাতা থেকে সরাসরি আসানসোল পাঠানো হয়েছে রাজ্য সম্পাদক বিজয় ওঝাকে।

কেন ছাড়া হচ্ছে না সন্দীপ ঘোষের মৃতদেহ? লকেট বললেন, ‘‘আমরা জানি না কেন ছাড়ছে না। আমাদের বুথ সভাপতি খুন হয়েছেন। তাঁর দেহ নিয়ে আমরা তাঁর গ্রামে ফিরব। পুলিশ বা হাসপাতাল দেহ আটকে রাখার কে!’’

আরও পড়ুন: সুব্রত বক্সীকে তিন ঘণ্টা জেরা সিবিআইয়ের

সায়ন্তন বসু বললেন, ‘‘দেহ ছাড়ছে না বলে আসানসোলে ইতিমধ্যেই অবরোধ শুরু হয়েছে। পুলিশ বাড়াবাড়ি করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে। প্রয়োজনে বুধবার বন্‌ধের ডাক দেওয়া হতে পারে গোটা জেলায়।’’ পরিস্থিতি অনুযায়ী সায়ন্তনকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দুর্গাপুর সিটিসেন্টারেও এ দিন বিক্ষোভ মিছিল হতে পারে বলে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.