জীবদ্দশায় রেকর্ড সময় দলের রাজ্য সম্পাদকের পদে ছিলেন অশোক ঘোষ। তাঁর অবর্তমানে তদারকি নেতৃত্ব দিয়েই দল চলছে। শেষ পর্যন্ত অশোকবাবুর মৃত্যুর এক বছরের মাথায় রদবদল শুরু হল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতৃত্বে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে দলের অবস্থা যতই কাহিল হোক না কেন, জেলায় পরিবর্তনের পরে রাজ্য সম্পাদকের পদে কে আসবেন, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা কিছু কম নেই!
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ফব-র কোন্দল দীর্ঘদিনের। অশোকবাবু বারংবার ধামাচাপা দিয়েও সমস্যা একেবারে মেটাতে পারেননি। এ বার জেলা কাউন্সিল অধিবেশনে প্রাক্তন বিধায়ক হরিপদ বিশ্বাস জেলা সম্পাদকের পদ ছেড়ে দেওয়ায় ওই দায়িত্বে এসেছেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। তুলনায় তরুণ নেতা, বারাসতের কাউন্সিলর সঞ্জীববাবুর জন্য পদ ছেড়ে দেওয়াকে সুস্থ নজির বলে উল্লেখ করে দেবব্রত বিশ্বাস, হাফিজ আলম সৈরানিরা হরিপদবাবুকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেন। কিন্তু তাতেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী সরল দেবের অনুগামীদের অভিযোগ, জেলা কাউন্সিলে তাঁদের প্রতিনিধিই করা হয়নি। ক্ষোভে তাঁরা ফব ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। হরিবাবুদের যুক্তি, ওই নেতা-কর্মীদের সদস্যপদই নবীকরণ হয়নি। তাঁদের কী ভাবে প্রতিনিধি করা যেত? তবুও আলোচনা করে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা হবে বলে তাঁর বক্তব্য।
দলের মধ্যে বিবাদের জেরে রবিবার জেলা কাউন্সিল ডেকেও নতুন কমিটি গড়া যায়নি কলকাতা জেলায়। স্বয়ং সাধারণ সম্পাদক দেবব্রতবাবু দায়িত্ব নিয়েছেন তিন মাসের মধ্যে বিশেষ কাউন্সিল ডেকে কমিটি গঠন করার। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ভূমিকার জন্যই যে কলকাতায় সমস্যা এত তীব্র হয়েছে, তা নিয়ে দেবব্রতবাবু ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলেও ফ ব সূত্রের খবর। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে অবশ্য পরিবর্তন করা গিয়েছে। বিধায়ক উদয়ন গুহ তৃণমূলে চলে যাওয়ার পরে কোচবিহারে ফ ব-র জেলা সম্পাদক হয়েছিলেন অক্ষয় ঠাকুর। তাঁর জায়গায় এ দিন নতুন জেলা সম্পাদক হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী আর জেলা সভাপতি প্রাক্তন বিধায়ক দীপক সরকার।
এই প্রক্রিয়া চলতে চলতেই দলের মধ্যে সকলের নজর এখন বৈদ্যবাটিতে ১৮-১৯ মার্চের রাজ্য কাউন্সিলের দিকে। ফ ব-র একাংশেই দাবি উঠেছে, রাজ্য সম্পাদকের ভার এমন কাউকে দেওয়া যাবে না, যে পথে দলের নিয়ন্ত্রণ বকলমে তৃণমূলের হাতে চলে যেতে পারে! ঐকমত্য না হলে শেষ পর্যন্ত বর্তমান সাধারণ সম্পাদককে রাজ্য স্তরে দলের ভার নিতে হয় কি না, তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy