: বিজেপি-র দাবি, কোনও কারণ ছাড়াই নন্দীগ্রামে বিরোধী দলনেতার অফিসে হামলা করেছে পুলিশ। তারা এই কাজ করেছে তৃণমূলের নির্দেশে। তবে গেরুয়া শিবিরের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তবে রাজ্যপালের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী তাঁর কাছে যান কিনা, সেদিকেই নজর রাজনীতির কারবারিদের।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অফিসে পুলিশি হানায় মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব রাজ্যপালের। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধায়ক কার্যালয়ে পুলিশ কেন? এমনই প্রশ্ন তুলে মুখ্যসচিবের কাছে জবাব চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রবিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। সঙ্গে রাজ্যপাল লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতার নন্দীগ্রামের কার্যালয়ে পুলিশ হানা দিয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগের, তাই আমি মুখ্যসচিবের কাছে এ বিষয়ে জবাব চেয়েছি।’ তাঁর পোস্ট করা ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ নন্দীগ্রামের শুভেন্দুর বিধায়ক কার্যালয়ে থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। কার্যালয়ের দায়িত্ব থাকা ওই ব্যক্তি পুলিশকে বলছেন, এই কার্যালয় থেকে কোনও দলীয় কাজ হয় না। কেবল মাত্র বিধায়ক পরিষেবার কাজ হয়।
রবিবার বিরোধী দলনেতাও অভিযোগের সুরে টুইট করেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি লেখেন, ‘কোনও পূর্ব সূচনা না দিয়ে, কোনও সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই এবং ম্যাজিস্ট্রেটের অনুপস্থিতিতে, আচমকা মমতার পুলিশ (পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ) আমার নন্দীগ্রামের বিধায়ক কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করেছে।মমতার সরকারের পুলিশের এই জঘন্য অপব্যবহার বিরোধী দলনেতার প্রতি এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের প্রমাণ।’ বিজেপি-র দাবি, কোনও কারণ ছাড়াই নন্দীগ্রামে বিরোধী দলনেতার অফিসে হামলা করেছে পুলিশ। তাঁরা এই কাজ করেছেন তৃণমূলের নির্দেশে। তবে গেরুয়া শিবিরের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
তৃণমূলের দাবি, ওই অফিসটি আসলে বিধায়ক কার্যালয় নয়। ওই বাড়িটি থেকেই তিনি নন্দীগ্রামে ভোটার হয়েছেন। আর তিনি যদি কোনও অপরাধ না-ই করে থাকবেন তাহলে এত ভয় কিসের?
নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পাল বলেন, ‘‘কেন এই পুলিশি হানা তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে বিরোধী দলনেতাকে হেনস্থা করতেই যে তাঁদের এই পরিকল্পনা তা আমাদের কাছে স্পষ্ট। কারণ ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তৃণমূলের বহু নেতা সিবিআইয়ের ঘেরাটোপে রয়েছেন। তাই পাল্টা চাপ দিতেই এই কৌশল বলে আমরা মনে করি।’’
কোনো পূর্ব সূচনা না দিয়ে, কোনো সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই এবং ম্যাজিস্ট্রেটের অনুপস্থিতিতে, আচমকা মমতা পুলিশ (পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ) আমার নন্দীগ্রামের বিধায়ক কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে।
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) May 15, 2022
মমতা সরকারের পুলিশের এই জঘন্য অপব্যবহার বিরোধী দলনেতার প্রতি এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের প্রমাণ। pic.twitter.com/AlMXs05uC5
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে. বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রামের এক রাজনৈতিক নেতার স্ত্রী ভুয়ো কাগজের ভিত্তিতে একটি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে চাকরি করছে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জমা হয় পুলিশের কাছে। সেই মামলার তদন্ত চলাকালীন পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে কয়েকজন এই মামলার অভিযোগকারীদের হুমকি দিচ্ছে। যারা হুমকি দিচ্ছে তাদের ধরতে গ্রামে অভিযান চালাতেই ওই অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিতে নন্দীগ্রামের ওই বাড়িতে এসে গা ঢাকা দেয়। আমরা নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালাই। সেই সময় ওই বাড়িতে ছিলেন অনুপম দত্ত নামের এক ব্যক্তি। তাঁকে আমরা ঘরগুলি খুলে দিতে বলি। উনি তিনটে ঘর খুলে দেখান। তবে সব ঘর আমাদের দেখতে দেওয়া হয়নি। গোটা ঘটনার ভিডিওগ্রাফি রয়েছে। কেউ দেখতে চাইলে তাঁরা পুলিশের কাছে এসে সেই ভিডিও দেখতেই পারেন। তবে অভিযুক্তদের না পেয়ে পুলিশ কিছু সময় পরেই ফিরে আসে।’’
এই অবস্থায় রাজ্যপালের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী তাঁর কাছে যান কিনা, সেদিকেই নজর রাজনীতির কারবারিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy