পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত শনিবার বিকেলে ঘোষণা হতে কিছুটা স্বস্তি মিলেছিল। পাক রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউয়ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী ও বাড়ির অন্যদের সেই স্বস্তি অবশ্য ফের উদ্বেগে বদলে গেল রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আকাশে ড্রোনের দেখা মেলার খবরে। রাতে রজনী বলেন, “আর কিছু বলতে পারছি না।”
রজনী এ দিন সন্ধ্যায় বলেছিলেন, “দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির কথা শুনেছি। মনে হচ্ছে, এ বার স্বামীর মুক্তির প্রক্রিয়া এগোতে পারে।” তাঁর সংযোজন: “কত দিন হয়ে গেল! মানুষটার গলা পর্যন্ত শুনিনি। কোনও খবর পাইনি। চাইছি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে। মুখ্যমন্ত্রী যদি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে স্বামীর মুক্তির ব্যাপারে কথা বলেন, ভাল হয়।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিষয়টি দ্রুত মীমাংসা করবে বলে গত সোমবার আশা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি দেখছেন। রাজ্য সরকারের কর্তারাও নজর রাখছেন। শনিবার সন্ধ্যায় কল্যাণও বলেছিলেন, “সংঘর্ষবিরতি হওয়ায় পূর্ণমকে ছাড়ানোর ব্যাপারে তৎপরতার জন্য বিএসএফের ডিজি-র সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টি জানাবেন।” মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পূর্ণমের পরিবারের সাক্ষাৎ করানোর চেষ্টা করবেন বলেও জানান কল্যাণ।
পঞ্জাবের পঠানকোটের ফিরোজপুরে কর্মরত পূর্ণম। কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হানার পরের দিন, অর্থাৎ, ২৩ এপ্রিল ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে গাছের তলায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় সে দেশের রেঞ্জার্স তাঁকে ধরে। বিএসএফের চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি মুক্তি পাননি। কয়েক দিন পরে রাজস্থানে এক পাক রেঞ্জার ধরা পড়ায় পূর্ণমের আত্মীয়েরা ভেবেছিলেন, মুক্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। হয়নি। তার মধ্যেই দু’দেশের যুদ্ধের আবহ তাঁদের চিন্তা বাড়ায়। হিমাচলের কাংড়ায় বিএসএফের সদর দফতরে গিয়ে পূর্ণমকে দ্রুত ফেরানোর ব্যাপারে আর্জি জানিয়েছেন রজনী। স্বামীর কর্মস্থলেও যান। বিএসএফের তরফে তাঁকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পূর্ণমকে মুক্ত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপ চেয়ে ইতিমধ্যেই আর্জি জানিয়েছে ‘অল বেঙ্গল সিটিজেনস ফোরাম’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন। সংগঠনের সভাপতি শৈলেন পর্বত জানান, শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইমেলে ওই আর্জি জানানো হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)