Advertisement
E-Paper

ঘূর্ণিঘোর কাটিয়ে অবশেষে বাংলার উঠোনে স্বস্তির শীত

সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের চোখরাঙানি যতই থাক, বাংলার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে শীত! কলকাতার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ধারেকাছে ঘোরাফেরা করলেও বিভিন্ন জেলায় পারদ নেমে গিয়েছে অনেকটাই। রবিবার শ্রীনিকেতন ও আসানসোলে তো সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১০ ডিগ্রির নীচে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৩
উষ্ণ অভ্যর্থনা। রবিবার কলকাতায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

উষ্ণ অভ্যর্থনা। রবিবার কলকাতায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

অতিথি তুমি আসবে কবে— আকুলতা শোনা যাচ্ছিল বাংলায়। এবং অবশেষে স্বস্তির খবর শীত-প্রত্যাশীদের কাছে!

সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের চোখরাঙানি যতই থাক, বাংলার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে শীত! কলকাতার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ধারেকাছে ঘোরাফেরা করলেও বিভিন্ন জেলায় পারদ নেমে গিয়েছে অনেকটাই। রবিবার শ্রীনিকেতন ও আসানসোলে তো সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১০ ডিগ্রির নীচে! কলকাতা-সহ সারা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে পুরোদস্তুর শীতের মেজাজ। হিমেল হাওয়া বইছে। আলমারি থেকে নেমে পড়েছে সোয়েটার, চাদর, মাফলারও।

এ-সব লক্ষণ বা ইঙ্গিত দেখে আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, বর্ষা দেরি করলেও শীত এ বার প্রায় সময় মেনেই অতিথি হতে চাইছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বলা যায়, চৌকাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছে শীত। ঘরে ঢোকা শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’ হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড-বিহারে ইতিমধ্যেই জাঁকিয়ে বসেছে শীত। পটনায় রাতের তাপমাত্রা তো স্বাভাবিকের নীচে রয়েছেই। গাঢ় কুয়াশার জন্য রোদের দেখাও মিলছে না। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ১২ ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছে! আজ, সোমবারেও সেখানে একই পরিস্থিতি থাকবে।

শীতের পথে মূর্তিমান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঘূর্ণিঝড়। তা, সেই শত্রুরও শক্তি কমে যাওয়ায় শীতের আগমনি শোনা যাচ্ছে হিম-হাওয়ায়। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদা’ এ দিন চেন্নাই থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থান করছিল। সোমবার বিকেলে চেন্নাইয়ের কাছাকাছি কোনও জায়গায় তার আছড়ে পড়ার কথা। তবে স্থলভূমির দিকে আসার পথেই শক্তি হারিয়ে ‘অতিপ্রবল’ খেতাব খুইয়ে ফেলবে সে। সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণতে হবে ভারদা। ‘‘চেন্নাইয়ের দিকে সরে যাওয়ায় এ রাজ্যে ওই ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব পড়বে না,’’ আশ্বাস দিচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস।

হাওয়া দফতরের খাতায় রাজ্যে বর্ষার ঢোকার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ রয়েছে। কিন্তু শীত আসার কোনও নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট নেই। সাধারণত ডিসেম্বর পড়লেই শীত গুটি গুটি পায়ে বাংলায় ঢোকে এবং একটু একটু করে থিতু হয়। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নামে। এ বার ডিসেম্বরের গোড়াতেই পরপর দু’টি ঘূর্ণিঝড় ‘নাডা’ এবং ‘ভারদা’ কাঁটা ছড়িয়ে দিয়েছিল শীতের রাস্তায়। আবহবিদদের একাংশ জানিয়েছিলেন, ভারদা ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে ছুটে এলে জোলো হাওয়ার প্রভাবে বাংলায় শীতের দফারফা হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ দক্ষিণ ভারতের দিকে সরতে থাকায় তার প্রভাব বাংলায় পড়েনি। ফলে আকাশ পরিষ্কারই আছে। শীতের বাহন হয়ে লাগাতার বয়ে আসছে উত্তুরে হাওয়াও। এক আবহবিদের ব্যাখ্যা, হিমেল উত্তুরে হাওয়া তো রয়েছেই। তার উপরে আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় দিনের বেলা চড়া রোদে ভূপৃষ্ঠ গরম হচ্ছে এবং সূর্যাস্তের পরে দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হচ্ছে মাটি। ফলে দিন ও রাতে তাপমাত্রার ফারাকও বাড়ছে। তাতেই শীত অনুভূত হচ্ছে আরও স্পষ্ট, আরও আশাপ্রদ ভাবে।

হাওয়া অফিসের খবর, জেলাগুলি তো বটেই, কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শনিবারেই স্বাভাবিকের নীচে নেমে গিয়েছিল। এ দিন তার থেকে সামান্যই বেড়েছে। তবে স্বাভাবিকের গণ্ডি ছাড়ায়নি। ফলে শীতের আগমনি স্পষ্ট। আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা জানান, আগামী দিন দুয়েক তাপমাত্রা একই রকম থাকবে। আপাতত পারদের উত্থানের লক্ষণ নেই। ‘‘সোমবার ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভূমিতে ঢুকে যাওয়ার পরে সুস্পষ্ট ভাবে বলা যাবে, শীত থিতু হল কি না,’’ মন্তব্য গণেশবাবুর।

Winter Depression
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy