Advertisement
E-Paper

সন্তান জন্মের ১৬ দিনের মাথায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু মায়ের, অসুস্থ সদ্যোজাত

কলকাতার ওই হাসপাতাল সূত্রের খবর, জ্বর নিয়েই গত ২ নভেম্বর ভর্তি হয়েছিলেন বেলুড় গিরিশ ঘোষ রোডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়াল। প্রথমে চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে কিছুটা প্লেটলেট বাড়লেও গত ৮ নভেম্বর থেকে ওই তরুণীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১০
প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়াল।

প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়াল।

সন্তান জন্ম দেওয়ার ষোলো দিনের মাথায় মৃত্যু হল মায়ের। কলকাতার মিন্টো পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রবিবার রাতে সাতাশ বছরের ওই তরুণী মায়ের ডেথ্ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার এবং মাল্টি অর্গান ফেলিওর’।

কলকাতার ওই হাসপাতাল সূত্রের খবর, জ্বর নিয়েই গত ২ নভেম্বর ভর্তি হয়েছিলেন বেলুড় গিরিশ ঘোষ রোডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়াল। প্রথমে চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে কিছুটা প্লেটলেট বাড়লেও গত ৮ নভেম্বর থেকে ওই তরুণীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। প্রিয়াঙ্কার পরিজনেরা জানান, হাওড়া পুরসভার ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অন্তঃসত্ত্বা তরুণী গত ২৫ অক্টোবর বেলুড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই ২৭ অক্টোবর ভোরে তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।

তরুণীর পরিজনেরা জানিয়েছেন, ১৭ দিন বয়েসের শিশুটিরও ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। সে-ও কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে হাসপাতালের তরফে কিছু জানা যায়নি। তবে কোন জায়গা থেকে প্রিয়াঙ্কার দেহে ডেঙ্গির জীবাণু বাসা বেঁধেছিল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

আরও পড়ুন: লালগড়ে ৭ শবর মৃত দুই সপ্তাহে

বেলুড়ের যে হাসপাতালে প্রিয়াঙ্কা সন্তান প্রসব করেন, সেখান থেকে জানা গিয়েছে, ২৯ অক্টোবর বিকেল থেকে ওই তরুণীর জ্বর এলে সেই মতো চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিন্তু জ্বর না কমায় ৩১ অক্টোবর প্রিয়াঙ্কার রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায়, প্লেটলেট দেড় লক্ষ এবং এনএস-১ পজিটিভ। পরের দিন প্লেটলেট ৯০ হাজারে নেমে যায়। ওই দিন রাতেই চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন ওই তরুণীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে হবে।

আরও পড়ুন: গুজব, গণপিটুনি রুখতে টাস্ক ফোর্স

সেই মতো পরের দিন অর্থাৎ ২ নভেম্বর প্রিয়াঙ্কা ও সদ্যোজাত সন্তানকে মিন্টো পার্কের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন বেলুড়ের ওই গৃহবধূ।

সোমবার বিকেলে প্রিয়াঙ্কার এক কাকা কানাইলাল জয়সওয়াল বলেন, ‘‘প্রসবের জন্য যখন ভর্তি হল তখন কোনও জ্বর ছিল না। বাচ্চা হওয়ার পরে মেয়েটার জ্বর এল। তারপরে সব শেষ।’’ ওই তরুণীর এক বোন পুনমের কথায়, ‘‘প্রথমেই যদি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হত, তা হলে হয়তো দিদিকে এমন ভাবে চলে যেতে হত না।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক স্বাতী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিজারের পরে জ্বর এলে অনেক সময়ই তা ইনফেকশন থেকে হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু আমরা সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করেছিলাম। ওই তরুণীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ছিল। তাই প্লেটলেট কমতে থাকায় কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি।’’

হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাচ্চা জন্ম দেওয়ার দু’ দিন পরে তাঁর জ্বর হয়। মনে হয়, যে হাসপাতালে তিনি ছিলেন, সেখানে ডেঙ্গির কোনও উৎস থাকতে পারে।’’ বেলুড়ের ওই হাসপাতালের চিকিৎসক স্বাতীদেবীর পাল্টা দাবি, ডেঙ্গি ধরা পড়ার অন্তত ৫-১০ দিন আগেই রোগীর দেহে তার জীবাণু থাকে। তাই ওই হাসপাতালে এসে ডেঙ্গি হওয়ার অভিযোগ মানতে নারাজ তিনি।

Death Dengue Woman Sick Child
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy