Advertisement
E-Paper

একজোট হচ্ছেন বাংলার শ্রমিকেরা

রাজমিস্ত্রি বা জোগাড়ের কাজ তো আছেই। এ ছাড়া রংমিস্ত্রি, সোনা বা জরির কারিগর, কাপড় কলের কর্মী, পাথর খাদানের মজদুর— এ রকম নানা কাজ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকেরা যান। কিন্তু বহিরাগত হওয়ায় প্রায়ই তাঁদের লাঞ্ছনার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৫:১৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভিন্ রাজ্যে নানা রকম জুলুমের হাত থেকে বাঁচতে একজোট হচ্ছেন এ রাজ্য থেকে যাওয়া শ্রমিকেরা।

রাজমিস্ত্রি বা জোগাড়ের কাজ তো আছেই। এ ছাড়া রংমিস্ত্রি, সোনা বা জরির কারিগর, কাপড় কলের কর্মী, পাথর খাদানের মজদুর— এ রকম নানা কাজ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকেরা যান। কিন্তু বহিরাগত হওয়ায় প্রায়ই তাঁদের লাঞ্ছনার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।

গত সেপ্টেম্বরে নদিয়া থেকে যাওয়া ২৩ বছরের বাসিরুল শেখকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন মেরেছিল কয়েক জন লোক। নির্যাতনের সময়ে তাকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সেই বেঙ্গালুরুতেই হয়ে গেল ‘কর্নাটক বাঙালি মজদুর সম্মেলন’। সেখানকার সিদ্দাপুরা সরকারি স্কুলে শ্রমিকেরা জমায়েত হয়েছিলেন। নিজেদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন তাঁরা। কী ভাবে বিহিত হবে, আলোচনা হয় তা নিয়েও। বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা ছাড়াও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা সেখানে হাজির ছিলেন।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ইতিমধ্যে দাবি তুলেছেন, প্রত্যেক রাজ্যের জন্য এক জন করে ‘লিয়াজঁ অফিসার’ নিয়োগ করুক রাজ্য সরকার, যিনি সেখানে বাংলার শ্রমিকদের ভালমন্দ দেখবেন। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ নিয়ে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।

বেঙ্গালুরুর সম্মেলনের জন্য সুতো পাকানোর কাজটাও শুরু হয়েছিল অধীরের জেলা মুর্শিদাবাদেই। কয়েক মাস আগে নিরাপত্তা ও অন্য নানা দাবিতে বেলডাঙায় একটি সভা হয়। বস্তুত, কর্ণাটকে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও মালদহের লোকই বেশি। এ রকম বেশ কিছু শ্রমিক সে দিন বেলডাঙার সভায় জড়ো হয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী এবং অসরকারি সংস্থার কিছু কর্মীও। তারই রেশ ধরে ‘কর্নাটক বাঙালি কল্যান সমিতি’র ডাকে গত ৩ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুতে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মুর্শিদাবাদের আমতলা হাইস্কুলের শিক্ষক শমিক মণ্ডল জানান, নওদার শ্যামনগর থেকে এক শ্রমিক কনার্টকে কাজ করতে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন। তাঁর মৃতদেহ আনা যাচ্ছিল না। শেষে আর কালিমউল্লা নামে বেঙ্গালুরুর এক সমাজসেবী দেহ নিয়ে নওদায় আসেন। এ রাজ্যের শ্রমিক-কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে তাঁর আলাপ-পরিচয় হয়। এ রকম কিছু মানুষই সম্মেলেন ডেকেছিলেন।

সম্মেলনে শ্যামনগরের জাব্বার শেখকে সম্পাদক করে ৩০ জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ থেকে ১১ জন করে সদস্য আছেন কমিটিতে। দুই দিনাজপুরের কিছু সদস্যও রয়েছেন।

উদ্যোক্তাদের অন্যতম, কর্নাটকের আইনজীবী দর্শনা মিত্র বলেন, ‘‘শুধু বাসিরুল নয়, তাঁর সঙ্গে কাজ করতে আসা আরও কয়েক জনকে ধরে পেটানো হয়েছিল। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা সত্ত্বেও কারও শাস্তি হয়নি। ফলে, সংগঠিত হওয়া ছাড়া বাংলার শ্রমিকদের সামনে আর কোনও রাস্তা খোলা নেই।’’

west bengal Workers Labours শ্রমিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy