Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটক টানতে বন বাংলোর হাল ফেরাবে উন্নয়ন নিগম

পুজোর পর্যটন মরসুমের আগেই ফিরবে বন বাংলোর হাল। এমনই দাবি বন উন্নয়ন নিগমের। সেই সঙ্গে সংস্কার করা হচ্ছে বাংলোর সংযোগকারী রাস্তাগুলিও। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যাপারে নিগমের তরফে প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্য জুড়ে একাধিক নতুন বাংলো তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। নিগম সূত্রের খবর, পুরনো বাংলো সংস্কার ও নতুন বাংলো তৈরির কাজে খরচ ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা।

জলঢাকায় পুড়ে যাওয়ার পরে নতুন ভাবে তৈরি হওয়া বন বাংলো।

জলঢাকায় পুড়ে যাওয়ার পরে নতুন ভাবে তৈরি হওয়া বন বাংলো।

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০৩:৪৬
Share: Save:

পুজোর পর্যটন মরসুমের আগেই ফিরবে বন বাংলোর হাল। এমনই দাবি বন উন্নয়ন নিগমের। সেই সঙ্গে সংস্কার করা হচ্ছে বাংলোর সংযোগকারী রাস্তাগুলিও।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যাপারে নিগমের তরফে প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্য জুড়ে একাধিক নতুন বাংলো তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। নিগম সূত্রের খবর, পুরনো বাংলো সংস্কার ও নতুন বাংলো তৈরির কাজে খরচ ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। পাহাড়ের লাভা-লোলেগাঁও বেহাল ২৭ কিমি রাস্তার হাল ফেরাতে ইতিমধ্যে পৃথকভাবে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ই-টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে পুরানো বাংলো সাজিয়ে তোলার প্রস্তুতিও অনেকটা এগিয়েছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে নতুন বাংলো তৈরির কাজ শুরু করতে চাইছেন নিগম কর্তারা। নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ পর্যটকদের অনেকেই আগে বনাঞ্চল এলাকায় থাকার সুযোগ পেতেননা। গত চার বছরে ওই অবস্থা অনেকটা পাল্টেছে। ওই সুযোগ আরও বাড়াতে একগুছ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুজোর মরসুমের আগে ওই রাস্তা তৈরি ও পুরানো সব বাংলো সাজিয়ে তোলার কাজ হবে।”

নিগম সূত্রেই জানা গিয়েছে, কালিম্পংয়ের সবুজ গাছগাছালি ঘেরা পাহাড়ি গ্রাম লাভা, লোলেগাঁও পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। গোর্খাল্যান্ডের দাবি ঘিরে আন্দোলনের সময় লোলেগাঁওয়ের বনবাংলো আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই সেখানে রাত্রিবাসের সুযোগ ছিল না। চলতি বছরেই লোলেগাঁওয়ে ‘আরণ্যক’ বাংলো নতুন করে তৈরি করে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তারপর রাজাভাতখাওয়াতেও নতুন বাংলোর উদ্বোধন হয়েছে। চলতি জুন মাসে জলঢাকা বনবাংলোটিও নতুন চেহারা তৈরির পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেন নিগমের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ভুটান পাহাড়, ঝর্না, ঝালং নদী থেকে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র দেখার টানে ইতিমধ্যে সেখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। এ রকম সাফল্যে উৎসাহিত নিগম কর্তারা তার ভিত্তিতেই সমীক্ষার কাজে নামেন। তাতেই পর্যটক চাহিদার তালিকায় শীর্ষে থাকা এলাকাগুলি চিহিত করা হয়েছে। ওই তালিকায় সামসিং, প্যারেন, মালঙ্গি, সুলতালেখোলা বনবাংলোর নাম রয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, সামসিংয়ে নতুন ১৪টি ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। রাজাভাতখাওয়া ও লোলেগাঁওয়ে মোট ২২টি ঘর তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। কালিম্পংয়ে নিগমের শৈলাবাস বাংলো চত্বরের ফাঁকা জমিতে নতুন বাংলো তৈরি করা হবে।

প্যারেনে উন্নয়ন নিগমের বন বাংলো।

তবে কেবল উত্তরবঙ্গ নয়, বাংলোর হাল ফেরানো হবে দক্ষিণবঙ্গেও। নিগম সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়, হাওড়ার গড়চুমুকে গঙ্গার পাড়, মন্দারমনি, দুর্গাপুরের কাছে মাইথন ব্যারাজেও নতুন বাংলো তৈরির প্রাথমিক প্রস্তুতি ইতিমধ্যে অনেকটা এগিয়েছে। গড়চুমুকে জেলা পরিষদের বাংলো লিজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। গঙ্গার ধারে বাংলো তৈরির জন্য জমির বন্দোবস্ত করার জন্য সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন নিগমের চেয়ারম্যান। নতুন বাংলো হওয়ার কথা ডুয়ার্সের জয়ন্তীতেও।

তবে কেবল সরকারি উদ্যোগই নয়, বিপুল সংখ্যক পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে বেসরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন পর্যটন-ব্যবসায়ীরা। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট স্যানালের কথায়, “ ফি বছর শুধু উত্তরবঙ্গে গড়ে সাত লাখের বেশি পর্যটক আসেন। রাস্তা-বাংলো সম মিলিয়ে ওই উদ্যোগে এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে। তবে সরকারি উদ্যোগে তৈরি বাংলোয় ওই চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। বেসরকারী ভাবেও পর্যটন শিল্পের প্রসারে সার্বিক পরিকল্পনা নেওয়া দরকার।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE