Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ঝক্কি কম, আগ্রহ বাড়ছে জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে

শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে লাফিয়ে। সঙ্গে রয়েছে জল পেতে সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে চাষের ঝক্কি আর খরচে লাগাম টানতে কাঁকসা ব্লকের চাষিদের বড় অংশই ঝুঁকেছেন ‘জিরো টিলেজ’ বা বিনা কর্ষণ পদ্ধতির চাষে। ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই জেলার বর্ধমান সদর মহকুমা, জামালপুর, খণ্ডঘোষ, মেমারি-সহ বেশ কয়েকটি এই পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে।

জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে জমিতে চলছে বীজ রোপনের কাজ। কাঁকসার বিরুডিহায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে জমিতে চলছে বীজ রোপনের কাজ। কাঁকসার বিরুডিহায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ০৬:৪৭
Share: Save:

শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে লাফিয়ে। সঙ্গে রয়েছে জল পেতে সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে চাষের ঝক্কি আর খরচে লাগাম টানতে কাঁকসা ব্লকের চাষিদের বড় অংশই ঝুঁকেছেন ‘জিরো টিলেজ’ বা বিনা কর্ষণ পদ্ধতির চাষে।

ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই জেলার বর্ধমান সদর মহকুমা, জামালপুর, খণ্ডঘোষ, মেমারি-সহ বেশ কয়েকটি এই পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে। কিন্তু কাঁকসায় পরীক্ষামূলক ভাবে এই পদ্ধতিতে চাষ শুরু হলেও তাতে চাষিরা তেমন উৎসাহ পাচ্ছিলেন বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। কিন্তু এ বার ঠিক উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে এই এলাকায়। কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ব্লকের প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে চাষ হয়েছে।

কিন্তু আচমকা জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে চাষের দিকে ঝুঁকছেন কেন চাষিরা? কৃষি আধিকারিকেরা জানান, সাধারণত জমি ও বীজতলা তৈরি, চারা বড় হলে তা সার দিয়ে পোঁতার জন্য প্রচুর লোক লাগে। তা ছাড়া সার ও জলেরও প্রয়োজন হয় প্রচলিত পদ্ধতির চাষে। উল্টো দিকে জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে চাষ করলে এ সবের দরকার পড়ে না বলে জানান চাষিরা। বর্ষা আসার দিন পনেরো আগে থেকে এই পদ্ধতিতে চাষের কাজ শুরু হয়। সরাসরি যন্ত্রের সাহায্যে একটি সারিতে সার ও ধানের বীজ ফেলা হয়। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, এই পদ্ধতিতে চাষ করলে জলের খুব বেশি দরকার পড়ে না।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে দু’টি জিরো টিলেজ যন্ত্র রয়েছে। চাষিরা দফতরে যোগাযোগ করলে যন্ত্র দু’টি বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বনকাটি, আমলাজোড়া, গোপালপুর-সহ বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকায় এই পদ্ধতিতে চাষ হয়ে গিয়েছে। বনকাটির তেলিপাড়া গ্রামের পার্থ গাঙ্গোপাধ্যায় এ বছর প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে এই পদ্ধতিতে ধান চাষ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বর্ষায় চাষের সময় মাঠে কাজ করার জন্য লোক পেতে সমস্যায় পড়তে হয়। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে আর চিন্তা থাকে না।’’ একই মত বিরুডিহার সূর্যনারায়ণ কোনার, জীবন লাহার মতো চাষিদের। এই পদ্ধতিতে চাষের ফলে রবি শস্যের মরসুমও বেশ খানিকটা আগে শুরু হতে পারে বলে আশা চাষিদের একাংশের।

কাঁকসা ব্লক সহ-কৃষি অধিকর্তা অনির্বাণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘জিরো টিলেজে চাষিদের উৎসাহ বাড়াতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এর সুফল বোঝানো হচ্ছে। আশা করা যায়, দিন কয়েকের মধ্যে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষ করা সম্ভব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Zero Tillage System Popular Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE