Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অভিজিৎ ঢুকতেই ছাত্রভোটের বৈঠকে কক্ষত্যাগ, ফের অনশন

তাঁর বিরোধিতায় নেমে এক পড়ুয়া সমাবর্তনের মঞ্চে আচার্য-রাজ্যপালের এগিয়ে দেওয়া পদক-শংসাপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি উপস্থিত থাকায় এ বার ছাত্র সংসদের নির্বাচন কমিটির বৈঠকে গিয়েও সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে বৈঠক বয়কট করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্র-প্রতিনিধি। তাঁর ইস্তফার দাবিতে পড়ুয়ারা সোমবার ফের অনশন শুরু করেছেন। রাত থেকেই ক্যাম্পাসে অবস্থানে বসেছেন এক দল পড়ুয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৬
Share: Save:

তাঁর বিরোধিতায় নেমে এক পড়ুয়া সমাবর্তনের মঞ্চে আচার্য-রাজ্যপালের এগিয়ে দেওয়া পদক-শংসাপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি উপস্থিত থাকায় এ বার ছাত্র সংসদের নির্বাচন কমিটির বৈঠকে গিয়েও সেখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে বৈঠক বয়কট করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্র-প্রতিনিধি। তাঁর ইস্তফার দাবিতে পড়ুয়ারা সোমবার ফের অনশন শুরু করেছেন। রাত থেকেই ক্যাম্পাসে অবস্থানে বসেছেন এক দল পড়ুয়া।

তিনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী কিন্তু অবিচলিত। বলছেন, “বিধিসম্মত ভাবে উপাচার্যই হলেন ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রধান। তাঁকে বাদ দিলে এই প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থাকবে।” অভিজিৎবাবু জানান, ভবিষ্যতেও তিনি ছাত্র সংসদের নির্বাচন কমিটির বৈঠকে থাকার চেষ্টা করবেন। ছাত্রছাত্রীরা যে-ভাবে বারবার তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তাতে তিনি অসম্মানিত নন। বরং পড়ুয়াদেরই আচরণের সমালোচনা করেছেন তিনি। উপাচার্য বলেন, “এখন যে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন ভাবে রাজনীতির শিকার হচ্ছে, তাদের মধ্যে রাজনীতি ঢুকে পড়ছে, সেটা ঠিক নয়।” অনশনের কথা অবশ্য তাঁর জানা নেই বলে জানান উপাচার্য।

স্বাভাবিকতা ফেরাতে শুক্রবার সব পক্ষের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসতে পারেন বলে আগেই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি সোমবারেও বলেন, “ওই দিন বেলা ১২টার পরে বিকাশ ভবনে থাকব। যাদবপুরের কেউ চাইলে আমার কাছে আসতে পারেন। কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।” কিন্তু অভিজিৎবাবুকে উপাচার্যের পদ থেকে না-সরিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে।

সম্ভব যে নয়, এ দিন ফের তার প্রমাণ মিলেছে। যাদবপুরে ছাত্রভোট হবে ২৮ জানুয়ারি। ২১ জানুয়ারি দু’টি বিভাগের নির্বাচন হবে। গত মাসে নির্বাচন নিয়ে দু’টি বৈঠক হয়। তখন উপাচার্য ছিলেন না। সহ-উপাচার্য বৈঠক পরিচালনা করেন। ওই দু’দিন ছাত্রছাত্রীরাও বৈঠকে ছিলেন। এ দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ ফের নির্বাচন কমিটির বৈঠক বসে। কিন্তু উপাচার্যও ঢুকতেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান কলা, বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার ছাত্র সংসদের নেতারা। এসএফআই, ডিএসএফ, ফ্যাস-সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠক ছেড়ে চলে যান। টিএমসিপি-র প্রতিনিধি অবশ্য বৈঠকে ছিলেন।

কলা শাখার ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা গীতশ্রী সরকার জানান, উপাচার্য থাকলে তাঁরা যে বৈঠকে থাকবেন না, লিখিত ভাবে আগেই নির্বাচন কমিটিকে তা জানানো হয়েছিল। উপাচার্যকে বাদ দিয়ে ফের বৈঠকের দাবি জানান পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, উপাচার্যের জন্য যাবতীয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নির্বাচনে গোলমাল হলে তার জন্য অভিজিৎবাবুই দায়ী হবেন। এই মর্মে নির্বাচন কমিটিকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না বলেও দাবি ছাত্রছাত্রীদের।

অভিজিৎবাবু অবশ্য বলেন, “নির্বাচন কমিটির অন্যান্য শরিক অর্থাৎ শিক্ষক, আধিকারিক, পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এ দিনের বৈঠকে ছিলেন। একটি ছাত্র সংগঠনের (টিএমসিপি) প্রতিনিধিও ছিলেন। তা হলে বৈঠক করতে বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সমস্যা হওয়ার কারণ কী?” তাঁর মন্তব্য, গণতান্ত্রিক পদ্ধতির বিরুদ্ধে যাওয়ার অধিকার সকলের আছে। আর পড়ুয়াদের বক্তব্য, তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যাচ্ছেন না। তাঁরা উপাচার্যেরই বিরুদ্ধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE