Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ইস্তফা মঞ্জুরের দিনেও অফিসে অভিজিৎ

যাদবপুরে যাননি। কিন্তু বুধবারেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে সারা দিন অফিস করেছেন বিদায়ী উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। আর তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হল সন্ধ্যায়। আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী আপাতত কলকাতার বাইরে থাকলেও সেখান থেকেই তিনি অভিজিৎবাবুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে বার্তা পাঠিয়েছেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৫
Share: Save:

যাদবপুরে যাননি। কিন্তু বুধবারেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে সারা দিন অফিস করেছেন বিদায়ী উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। আর তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হল সন্ধ্যায়।

আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী আপাতত কলকাতার বাইরে থাকলেও সেখান থেকেই তিনি অভিজিৎবাবুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে বার্তা পাঠিয়েছেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর। পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত সহ-উপাচার্য আশিস বর্মাকে অস্থায়ী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব সামলাতে বলা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত সোমবার যাদবপুর ক্যাম্পাসে গিয়ে হাজার হাজার আন্দোলনকারীর সামনে অভিজিৎবাবুর পদত্যাগের ইচ্ছের কথা ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার রাজভবনে গিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়ে আসেন অভিজিৎবাবু। তার ২৪ ঘণ্টার মাথায় তা গ্রহণ করলেন রাজ্যপাল।

তবে বিদায় পর্বের শেষ বেলাতেও প্রশ্ন আর বিতর্কের ঢেউ তুলে দিয়ে গেলেন অভিজিৎবাবু। মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র পাঠানোর পরেও বুধবার তিনি সল্টলেক ক্যাম্পাসে অফিস করলেন কী ভাবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। ইস্তফা দেওয়ার পরের দিনই ফের তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাসে যাওয়া এবং বৈঠক-সহ নানা কাজ করার বিষয়টি নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করায় অনেকেরই প্রশ্ন, কোনও অসম্পূর্ণ কাজ তড়িঘড়ি শেষ করার জন্যই কি অভিজিৎবাবু এ দিন ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন? ছাত্র আন্দোলন যত জোরদার হয়েছে, যাদবপুর ক্যাম্পাসে অভিজিৎবাবুর উপস্থিতির হারও তত কমেছিল। এক দল পড়ুয়া তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসলেও সেই পর্বে পারতপক্ষে যাদবপুর-মুখো হননি তিনি। সেই অভিজিৎবাবু পদত্যাগপত্র পেশের পরে অফিস করতে পারেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক বেধেছে।

বুধবার সল্টলেকের অফিসে সারা দিন কী করলেন অভিজিৎবাবু?

বিদায়ী উপাচার্য এ দিন সল্টলেক ক্যাম্পাসে গিয়ে বিভিন্ন কর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। এমনকী কিছু ফাইলপত্রে তিনি স্বাক্ষরও করেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর। তিনি এ দিন ক্যাম্পাসে হাজির হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তাদের একটি বড় অংশও হতবাক! যাদবপুরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “আমি অভিজিৎবাবুর জায়গায় থাকলে কখনওই এ ভাবে অফিসে যেতাম না।” তবে রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ বলেন, “পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে পর্যন্ত উপাচার্যের পদে তো অভিজিৎবাবু ছিলেন। তাই তিনি ক্যাম্পাসে যেতেই পারেন।”

সংশ্লিষ্ট অনেকের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে প্রশ্নটা মোটেই নিয়মের নয়। প্রশ্নটা নৈতিকতা ও সম্মানবোধের। খোদ অভিজিৎবাবু কী বলছেন?

বিদায়ী উপাচার্যের কথায়, “আমি ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। কেন গিয়েছিলাম, যেতে পারি কি না, তার ব্যাখ্যা দেওয়া আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে। সেটা উচ্চশিক্ষা সচিবের কাছে জানতে চান।” উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার জানান, পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে পর্যন্ত অভিজিৎবাবুই উপাচার্য। তাই এ দিন সকালে তিনি ক্যাম্পাসে যেতেই পারেন। তবে নৈতিকতার প্রশ্ন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সচিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলমালে যে-সব উপাচার্য এর আগে পদ ছেড়েছেন, তাঁরা ইস্তফা দেওয়ার পরে সাধারণ ভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস এড়িয়েই চলেছেন। এমনই এক পদত্যাগী উপাচার্যের কথায়, “অভিজিৎবাবু ফের যাদবপুরের ক্যাম্পাসে গিয়েছেন শুনে হতভম্ব হয়ে যাচ্ছি। আমি তো ইস্তফা দেওয়ার পরে আর একটি বারও যাইনি। রেজিস্ট্রারের সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে দেখা করে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jadavpur case abhijeet chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE