Advertisement
E-Paper

উত্‌সব শেষে আশঙ্কা জমি নিয়ে

কৃষিজমিতে বাস রাখা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কৃষকেরা। আশঙ্কা ছিল, মাটিতীর্থ উত্‌সবে আসা বিপুল সংখ্যার বাসে জমি মাঠে মারা যাবে। হলও সেরকমই। সঙ্গে বহু বাস বর্ধমানে আসায় দীর্ঘ অপেক্ষায় দিন কাটল জেলার বাকি অংশে। সোমবার সাই কমপ্লেক্স লাগোয়া মাঠে মাটিতীর্থ উত্‌সবে যাত্রীদের পৌঁছে বাসগুলি নির্ধারিত চারটি পার্কিং জোনে দাঁড়িয়েছিল। যার মধ্যে তিন একরই কৃষিজমি। কোনও জমিতে ধান কাটার স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। কেউ আবার জলের অভাবে বোরো ধান বুনতে না পারায় জমি ফাঁকা রেখেছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৯
মঞ্চের পাশে চলছে লোকনৃত্য। নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চের পাশে চলছে লোকনৃত্য। নিজস্ব চিত্র।

কৃষিজমিতে বাস রাখা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কৃষকেরা। আশঙ্কা ছিল, মাটিতীর্থ উত্‌সবে আসা বিপুল সংখ্যার বাসে জমি মাঠে মারা যাবে। হলও সেরকমই। সঙ্গে বহু বাস বর্ধমানে আসায় দীর্ঘ অপেক্ষায় দিন কাটল জেলার বাকি অংশে।

সোমবার সাই কমপ্লেক্স লাগোয়া মাঠে মাটিতীর্থ উত্‌সবে যাত্রীদের পৌঁছে বাসগুলি নির্ধারিত চারটি পার্কিং জোনে দাঁড়িয়েছিল। যার মধ্যে তিন একরই কৃষিজমি। কোনও জমিতে ধান কাটার স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। কেউ আবার জলের অভাবে বোরো ধান বুনতে না পারায় জমি ফাঁকা রেখেছিলেন। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে একের পর এক বাস ঢুকতে থাকায় জমির ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ওই এলাকার চাষিরা। জেলার এক কৃষি আধিকারিকও বলেন, “বাসের মতো ভারি যান চাষজমিতে যাতায়াত করলে মাটি শক্ত হয়ে যাবে। পরে ওই জমিকে চাষযোগ্য করতে গেলে আরও অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে।” চাষিদের দাবি, বহু মানুষ আলপথে যাতায়াত করায় তালিত এলাকার বহু সর্ষে ও তিলের জমিতেও ক্ষতি হয়েছে।

বর্ধমান জেলা প্রশাসনের দাবি, এ দিন ১২টি জেলা থেকে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ এসেছিলেন। তবে যানজট সেভাবে হয়নি। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে আমরা লোক সমাগমের ব্যবস্থা করেছিলাম। কেউ দুর্ভোগ বা ভোগান্তির আশঙ্কা করেননি।” অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে দেখা গিয়েছে, নবাবহাট মোড় থেকে সাই কমপ্লেক্স পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার দু’পাশে দড়ি দিয়ে আটকে পথ চলার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। রাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য খোলাই ছিল। তবুও কিছু জায়গায় যানজট, বাস না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তালিত রেল গেট পর্যন্ত সামান্য রাস্তা যেতেও গাড়িঘোড়া পাননি অনেকে। লটবহর নিয়ে নবাবহাট রোড ধরে হাঁটতেও দেখা গিয়েছে অনেককে। প্রচুর বাস তুলে নেওয়ায় কালনা কাটোয়াতে ভুগেছেন সাধারণ মানুষ। কালনা থেকে ৫০ শতাংশেরও বেশি বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ফলে সরকারি বাস না থাকায় কালনা, মেমারিতে বহু মানুষই যাতায়াতের মাধ্যম পাননি। বেসরকারি বাসই ছিল ভরসা। তবে তা পেতেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। কালনা বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকা গৃহবধূ পৌলমী মল্লিক বলেন, “আমার বাঘনাপাড়া যাওয়ার কথা। ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করেও বাস পাই নি। বুঝতে পারিনি এমনটা হবে।”


জমিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে মাটিতীর্থ উত্‌সবে আসা নানা জেলার বাস। সোমবার নবাবহাট এলাকায় উদিত সিংহের তোলা ছবি।

হেলিপ্যাড তৈরি করা হলেও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী নির্ধারিত সময়ের আগেই সড়ক পথে উত্‌সব প্রাঙ্গণে এসে হাজির হন। মঞ্চে হাজির ছিলেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসু, মলয় ঘটক, স্বপন দেবনাথ, রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, বেচারাম মান্না প্রমুখেরা। ৫১টি প্রকল্পের শিলান্যাস ও ৫২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বহু কৃষককে সম্মান জানানো হয়। তবে এর মধ্যেই বিশৃঙ্খলা দেখা যায় উত্‌সব প্রাঙ্গণে। মঞ্চ দূরে থাকায় অনুষ্ঠান ভালভাবে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভ ছড়ায় লোকজনের মধ্যে। পুলিশের সঙ্গে বচসাও বাধে। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ওঠার পর থেকেই ফিরতি পথ ধরেন মেদিনীপুরের মতো দূরের জেলার অনেকে।

তবে তার মধ্যেও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ক্ষোভ রয়েই যায়। অনেকে টাকা হাতে পাবেন জেনে উত্‌সবে যোগ দিয়েছিলেন। তা না পাওয়ায় ক্ষোভ ছড়ায়। আবার খাবার প্যাকেট না দিয়ে কম টাকা দেওয়াতেই ক্ষুব্ধ হন অনেকে।

mati tirtha mati festival mamata bandyopadhyay burdwan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy