কোনও কোনও পুরসভা জুড়ে যাচ্ছে সংলগ্ন কর্পোরেশনের সঙ্গে। তাই আলাদা ভাবে ভোট নয়। কলকাতা-সহ রাজ্যের ৯৫টি পুরসভার নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিলে একসঙ্গেই করতে চায় রাজ্য সরকার। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে পুর দফতর। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় শুক্রবার ওই চিঠির কথা জানিয়ে বলেন, “রাজ্যের প্রস্তাব নিয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
পুর দফতর সূত্রের খবর, চলতি বছরের জুলাইয়েই রাজ্যের ১৭টি পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ওই সব পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করেছে সরকার। নবান্ন ঠিক করেছে, এর মধ্যে সাতটি পুরসভাকে নতুন চারটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকি ১০টি পুরসভার নির্বাচন হবে। এ ছাড়া আগামী বছরের ১৬ জুন কলকাতা পুরসভার নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অন্য ৮৪টি পুরসভার মেয়াদও শেষ হচ্ছে মে-জুনে। সব মিলিয়ে ৯৫টি পুরসভার একসঙ্গে নির্বাচন করতে চাইছে সরকার।
কমিশনের এক মুখপাত্র জানান, সরকারের চিঠিতে যে-প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, সরকারের প্রস্তাব নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়ার পরে বিষয়টি জানানো হবে কলকাতা হাইকোর্টকে। হাইকোর্ট যা নির্দেশ দেবে, তা মেনে চলবে কমিশন।
রাজ্য সরকারের প্রস্তাব হাইকোর্টে জানানো হবে কেন?
এর ব্যাখ্যা দিয়ে কমিশনের এক মুখপাত্র জানান, গত জুলাইয়ে মেয়াদ শেষ হওয়া ১৭টি পুরসভায় নির্বাচন করার আর্জি নিয়ে তাঁরা আদালতে গিয়েছিলেন। আদালত নির্দেশ দেয়, ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ওই সব পুরসভার মধ্যে ১০টিতে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে। এই অবস্থায় সরকার একসঙ্গে পুরভোটের যে-প্রস্তাব দিয়েছে, তা মানতে গেলে ওই ১০টি পুরসভার নির্বাচনও পিছিয়ে দিতে হয়। এবং সেটা আদালতের অনুমতিসাপেক্ষ। কারণ, এপ্রিলে ভোট করলে ওই ১০টি পুরসভার ক্ষেত্রে আদালতের দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে যায়। তাই সরকারের প্রস্তাব নিয়ে কী করা হবে, জানতে চাওয়া হবে কোর্টের কাছেই।
গত বছর ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত বেধেছিল। এবং সেই সংঘাতও আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তখন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মীরা পাণ্ডে। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্ধারিত সময়ের মাস ছয়েক পরে, গত বছরের জুলাইয়ে পঞ্চায়েতের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচন মিটতে না মিটতেই পুরভোট নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধ বাধে কমিশনের। ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় কমিশন। সংঘাতের সাম্প্রতিক এই দু’টি দৃষ্টান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ বার সরকারের চিঠির ব্যাপারে আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy