Advertisement
E-Paper

কার্যালয়ের দখল নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলে সংঘর্ষ

টক্করটা অধীর চৌধুরী আর মান্নান হোসেনের। দলীয় কার্যালয় দখল ও পাল্টা দখল নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষে যা সামনে এল বহরমপুরে। শনিবার দুপুরে দু’দলের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সদর শহর লাগোয়া উত্তরপাড়া মোড়। জখম হয়েছেন পাঁচ জন। কোনও গ্রেফতার না হলেও এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। ২০০৯ সালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া উত্তরপাড়া মোড়ে খাস জায়গায় কংগ্রেসের বহরমপুর ব্লক কার্যালয় তৈরি করা হয়। গত শুক্রবার রাতে ওই কার্যালয়ের তালা ভেঙে জবরদখল করে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
কংগ্রেস পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতির দেহরক্ষী স্বাগত মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীর হাতাহাতি। বহরমপুর উত্তরপাড়া মোড়ে শনিবার গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

কংগ্রেস পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতির দেহরক্ষী স্বাগত মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীর হাতাহাতি। বহরমপুর উত্তরপাড়া মোড়ে শনিবার গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

টক্করটা অধীর চৌধুরী আর মান্নান হোসেনের। দলীয় কার্যালয় দখল ও পাল্টা দখল নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষে যা সামনে এল বহরমপুরে। শনিবার দুপুরে দু’দলের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সদর শহর লাগোয়া উত্তরপাড়া মোড়। জখম হয়েছেন পাঁচ জন। কোনও গ্রেফতার না হলেও এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে।

২০০৯ সালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া উত্তরপাড়া মোড়ে খাস জায়গায় কংগ্রেসের বহরমপুর ব্লক কার্যালয় তৈরি করা হয়। গত শুক্রবার রাতে ওই কার্যালয়ের তালা ভেঙে জবরদখল করে তৃণমূল। মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের যুক্তি, “সেই সময় যাঁরা ওই এলাকার কংগ্রেসকর্মী ছিলেন তাঁরাই অর্থ ও শ্রম দিয়ে ওই কার্যালয় করেছিলেন। সম্প্রতি তাঁরা সবাই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন। তাঁরা ওই কার্যালয় থেকে কাজ করতে চাইছেন।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের ওই কার্যালয়ের একাংশ কর্মী বাস্তবিকই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁরাই কার্যালয়ে তালা ঝোলান শুক্রবার। কংগ্রেসের অন্য কর্মীরা রাতেই ফের ওই কার্যালয়ের দখল নেন। শনিবার সকালে তৃণমূলের লোকজন ওই কার্যালয়ের তালা ভাঙেন ফের। এই খবর পেয়ে এদিন দুপুরে কংগ্রেসের দখলে থাকা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার ও বহরমপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি অতীশ সিংহের নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা উত্তরপাড়া মোড়ে গিয়ে তালা ভেঙে কার্যালয় পুর্নদখল করতে যান। সেই সময় তৃণমূলের লোকজন তাঁদের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ।

তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের বাড়ি থেকে কিলোমিটার খানেক দূরে ওই কার্যালয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, মান্নান হোসেনের নেতৃত্বেই জবরদখলের রাজনীতি চলছে। বস্তুত দীর্ঘ দিন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কংগ্রেস করলেও অধীর ও মান্নানের মধ্যে একটা টানাপোড়েন ছিলই। অধীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর আবু হেনাকে মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি পদে বসালে সেই দূরত্ব আরও বাড়ে। লোকসভা ভোটে মান্নান হেরে যাওয়ার পর বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। মান্নানের ছেলে সৌমিক হোসেন যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি পদ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন প্রথমে। পরে মান্নান তৃণমূলে যোগ দিলে তাঁকে মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি করা হয়। বিরোধ এখন আর অন্দরে নয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে ডোমকলের জনকল্যাণ ময়দানে এক জনসভায় এসে খোদ অধীর চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভায় মান্নানও ‘তোলাবাজ’ আখ্যা দিয়ে অধীরকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী প্রকাশ্যে কখনও মান্নানের নামে বিরূপ মন্তব্য করেননি। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে মান্নানের নাম উহ্য রেখে তিনি বলেন “রাজনৈতিক কার্যালয় দখলের রাজনীতি কোনও দিনই ছিল না মুর্শিদাবাদে। এগুলো নব্য আমদানি। এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।” অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, “পুলিশের সহযোগিতায় দুষ্কৃতী দিয়ে অন্য দলের দফতর দখল তৃণমূলের সংস্কৃতি।” অধীরের এই মন্তব্যের পর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “এ কী কথা শুনি আজ মুর্শিদাবাদের অধীরেশ্বরের মুখে!

ওঁরই সংস্কৃতি হচ্ছে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা। এই সংস্কৃতির জনক, নায়ক তো তিনিই।”

এ দিন দু’পক্ষের মোট ৫ জন আহত হন। এর মধ্যে দু’জনকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গুরুতর জখম দু’জনের মধ্যে এক জন হলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদারের দেহরক্ষী স্বাগত মণ্ডল। অন্যজন কংগ্রেস কর্মী সমীরণ দাস। শিলাদিত্য বলেন, “দুষ্কৃতীদের আক্রমণ থেকে আমাকে রক্ষা করতে গিয়ে স্বাগত গুরুতর জখম হয়েছেন।”

মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট রয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও কোনও গ্রেফতার করা যায়নি। এদিনই দলীয় ওই কার্যালয় ‘সিল’ করে দিয়ে সেখান থেকে ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেন বহরমপুর সদর মহকুমার এগ্জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত দাস। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

tmc congress adhir mannan berhampore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy