Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোরপান-হত্যা ধামাচাপা দিতেই কি সিট, ধন্দ তুঙ্গে

বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের পরে এক পক্ষকাল কেটে গিয়েছে। তবু কোরপান শা-হত্যাকাণ্ডে নতুন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি কলকাতা গোয়েন্দা-পুলিশ। লালবাজারের খবর, এনআরএসের ছাত্রাবাসে ওই খুনের ঘটনায় দশ জন আবাসিকের ভূমিকার কথা সিট জানতে পারলেও উপরমহলের অনুমতি না-মেলায় তাঁদের এক জনকেও গ্রেফতার করা যায়নি। এমতাবস্থায় লালবাজারের অন্দরেই এখন মাথাচাড়া দিচ্ছে প্রশ্ন অভিযুক্ত হবু ডাক্তারদের আড়াল করতে আর তদন্ত ধামাচাপা দিতেই কি সিট গড়ার সিদ্ধান্ত?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৫
Share: Save:

বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের পরে এক পক্ষকাল কেটে গিয়েছে। তবু কোরপান শা-হত্যাকাণ্ডে নতুন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি কলকাতা গোয়েন্দা-পুলিশ। লালবাজারের খবর, এনআরএসের ছাত্রাবাসে ওই খুনের ঘটনায় দশ জন আবাসিকের ভূমিকার কথা সিট জানতে পারলেও উপরমহলের অনুমতি না-মেলায় তাঁদের এক জনকেও গ্রেফতার করা যায়নি। এমতাবস্থায় লালবাজারের অন্দরেই এখন মাথাচাড়া দিচ্ছে প্রশ্ন অভিযুক্ত হবু ডাক্তারদের আড়াল করতে আর তদন্ত ধামাচাপা দিতেই কি সিট গড়ার সিদ্ধান্ত?

বস্তুত উলুবেড়িয়ায় কোরপানের বাড়ির লোকও এই মুহূর্তে একই সংশয়ে ভুগছেন। কোরপানের ভাই রওশন রবিবার বলেন, “এন্টালি থানা তবু তিন জনকে ধরেছিল। সিট তো কিছুই করছে না!” কোরপানের আত্মীয়-বন্ধুদের অনেকের দাবি, লোক দেখানো তদন্ত বন্ধ হোক। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে রিপোর্ট তলবের ব্যাপারটাকেও তাঁরা ফাঁকিবাজি হিসেবে অভিহিত করেছেন। “পুলিশ ধামাচাপা দিতে পারে বুঝতে পেরেই আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।” মন্তব্য এক পরিজনের।

১৬ নভেম্বর ভোরে এনআরএসের বয়েজ হস্টেলে মানসিক ভারসাম্যহীন কোরপানকে পিটিয়ে মারা হয়। অভিযোগ, জড়িতদের অধিকাংশ শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে তাঁদের গ্রেফতার করতে পুলিশের কর্তা-ব্যক্তিরা গোড়া থেকেই গড়িমসি করছিলেন। এন্টালি থানা ও লালবাজার নিজের নিজের মতো করে তদন্ত চালাচ্ছিল। এক মাসের মাথায় এক ছাত্র ও দুই ক্যান্টিন-কর্মীকে এন্টালি থানা গ্রেফতার করে। তার পরে লালবাজারের উঁচু মহলের নির্দেশে তড়িঘড়ি সিট গড়া হয় বলে সূত্রের ইঙ্গিত। কিন্তু ধৃত দুই ক্যান্টিন-কর্মীকে জেরায় বাকিদের নাম বেরিয়ে এলেও ওই দশ হবু ডাক্তারকে ধরা হচ্ছে না কেন?

সিটের এক তদন্তকারী অফিসারের ব্যাখ্যা, “অভিযুক্তদের বেশ ক’জন হলেন ছাত্র নেতা। শীর্ষ কর্তারাই ঠিক করবেন, ওঁদের ধরা হবে কি না।” যদিও পুলিশমহলের একাংশের মতে, এতে বাহিনীর নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। কলকাতা পুলিশের এক সিনিয়র অফিসারের কথায়, “শহরে ছোটখাটো খুনের তদন্তভারও প্রথমেই লালবাজারের হোমিসাইড শাখার হাতে তুলে দেওয়া হয়। দেহ উদ্ধারের খবর মিলতেই পুলিশ-কুকুর, ফরেন্সিক দল পাঠানো হয়। আশপাশের লোকজনকে জেরায় জেরায় অতিষ্ঠ করে তোলা হয়। অথচ এনআরএস-কাণ্ডে কিছুই হয়নি!” বরং ঘটনাস্থল অরক্ষিত রেখে পরোক্ষে প্রমাণ লোপাটেরই সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

লালবাজার কর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ। “এ সব আশঙ্কা অমূলক। সময় হলেই বাকিরা ধরা পড়বে। তা ছাড়া অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা তো নেই।” বলছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক অফিসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

korpan shah murder junior doctor nrs sit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE