Advertisement
E-Paper

কুয়াশা-বৃষ্টিতে উড়ান বেহাল বাগডোগরায়

শীতের শেষ প্রহরেও কুয়াশা এবং তার দোসর অকালবৃষ্টিতে বারবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে বিমান চলাচল। বুধবার কুয়াশার দাপটে বাগডোগরায় বিপাকে পড়ে গিয়েছিল বিমান। খারাপ আবহাওয়ার জেরে বৃহস্পতিবারেও সারা দিন কোনও বিমান নামতে পারেনি বাগডোগরা বিমানবন্দরে। এ দিন সব মিলিয়ে ১০টি উড়ান বাতিল করতে হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৩

শীতের শেষ প্রহরেও কুয়াশা এবং তার দোসর অকালবৃষ্টিতে বারবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে বিমান চলাচল। বুধবার কুয়াশার দাপটে বাগডোগরায় বিপাকে পড়ে গিয়েছিল বিমান। খারাপ আবহাওয়ার জেরে বৃহস্পতিবারেও সারা দিন কোনও বিমান নামতে পারেনি বাগডোগরা বিমানবন্দরে। এ দিন সব মিলিয়ে ১০টি উড়ান বাতিল করতে হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেকে গিয়েছিল গাঢ় কুয়াশায়। তার উপরে রাতে এবং ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হাল্কা বৃষ্টি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। ভোর থেকেই বাগডোগরা বিমানবন্দর এবং লাগোয়া এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল। বিভিন্ন উড়ানকে সমস্যায় ফেলে ক্রমেই কমে যেতে থাকে দৃশ্যমানতা। তার জেরে ব্যাপক ভাবে বিঘ্নিত হয় বিমান পরিষেবা।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বাগডোগরায় অবতরণের জন্য কম করে ২১০০ মিটার দৃশ্যমানতার দরকার হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা নেমে যায় ১০০০ মিটারে। বিকেল পর্যন্ত সেই পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি।

এ দিন বাগডোগরায় যে-দশটি বিমানের নামার কথা ছিল, তার মধ্যে কলকাতা থেকে আসা উড়ান ছিল পাঁচটি। আর ছিল দিল্লির চারটি উড়ান এবং গুয়াহাটির একটি। সকালের দিকে উড়ে যাওয়া বিমানগুলি মাঝরাস্তা থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যায়। দিল্লি থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান নামতে না-পেরে চলে আসে কলকাতায়। পরে সেটি আর বাগডোগরার পথ না-ধরে দিল্লিতেই ফিরে যায়। এ দিন শেষ পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, গো এয়ার এবং জেট এয়ারওয়েজের দু’টি করে আর স্পাইসজেটের একটি উড়ান বাতিল করতে হয়।

পরপর উড়ান বাতিল হওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েন হাজার দেড়েক বিমানযাত্রী। তাঁদের সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বসে থাকতে হয় বিমানবন্দরে। এ বার শীতের মরসুমে ছোটখাটো অন্যান্য বিভ্রাট ছাড়াও ডিসেম্বরে এক দিন বাগডোগরা থেকে পাঁচটি এবং অন্য এক দিন ন’টি উড়ান বাতিল হয়েছিল। সেই তালিকায় যোগ হল বৃহস্পতিবারের বিপত্তি। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘কম দৃশ্যমানতার জন্যই এ দিন কোনও বিমান নামতে পারেনি। যাত্রীদের সমস্যার জন্য আমরা দুঃখিত।” তবে ওই বিমানবন্দরে ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) থাকলে সমস্যা হত না বলে এএআই-র অফিসারেরা জানান। ঘোর কুয়াশার মধ্যেও ওই যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিমান নামতে পারে অনায়াসে। তাই বাগডোগরাতেও ওই ব্যবস্থা চালু করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ।

উড়ানের সমস্যায় এ দিন সকাল থেকেই বিমানবন্দর-চত্বরে ছিল উদ্বিগ্ন যাত্রীর ভিড়। কখন কুয়াশা কাটবে এবং বিমান উড়বে, তার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে বাধ্য হন তাঁরা। একের পর এক উড়ান বাতিল হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভও বাড়তে থাকে। দীর্ঘ ক্ষণ বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে করতে সেখানকার পরিকাঠামো নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন অনেকে। সঞ্চালী রায় নামের এক যাত্রী বলেন, “ছেলে চাকরিতে যোগ দিতে যাচ্ছিল। বিমান বাতিল হওয়ায় এখন রাতের ট্রেনে কলকাতা যেতে হচ্ছে।” সঞ্চালীদেবীর ছেলের মতো বহু যাত্রীই উড়ানের টিকিট বাতিল করে ট্রেন বা বাস ধরে রওনা হন।

বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শীতের মরসুমে এই অঞ্চলে পর্যটকের সংখ্যা কমই থাকে। কুয়াশা, বৃষ্টি ও বিমান-বিভ্রাটে এ দিন অবশ্য দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে কিছু পর্যটককেও। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “সিকিম, দার্জিলিং ফেরত বেশ কিছু পর্যটক উড়ানের যাত্রী ছিলেন। তাঁদের হোটেলে রেখে শুক্রবার অন্য বিমানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

winter fog bagdogra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy