Advertisement
E-Paper

কমলা থাবা বসিয়েছে আবিরের সবুজ বাজারেও, লালের টান কম

বড়বাজারের চিনাপট্টির আবিরের দোকানে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। থরে থরে সাজানো সবুজ আবিরের বস্তার পাশাপাশি দেখা মিলছে কমলা আবিরেরও। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এত দিন সবুজের সঙ্গে ছিল লালের টক্কর। এ বার কিন্তু ছবিটা অনেকটাই আলাদা। যে সব জায়গা থেকে কমলার কোনও চাহিদাই ছিল না, সেখান থেকেও এ বার কমলা আবিরের কিছু কিছু চাহিদা আসা শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ভোটের মরসুমে চাহিদা একদমই কম থাকায় তাঁরা এ বার দোকানে লাল আবির তুলেছেন খুব কম।

আর্যভট্ট খান ও দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০২:৫৫
আবিরের পসরায় উৎসবের প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার, শহরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

আবিরের পসরায় উৎসবের প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার, শহরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

বড়বাজারের চিনাপট্টির আবিরের দোকানে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। থরে থরে সাজানো সবুজ আবিরের বস্তার পাশাপাশি দেখা মিলছে কমলা আবিরেরও। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এত দিন সবুজের সঙ্গে ছিল লালের টক্কর। এ বার কিন্তু ছবিটা অনেকটাই আলাদা। যে সব জায়গা থেকে কমলার কোনও চাহিদাই ছিল না, সেখান থেকেও এ বার কমলা আবিরের কিছু কিছু চাহিদা আসা শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ভোটের মরসুমে চাহিদা একদমই কম থাকায় তাঁরা এ বার দোকানে লাল আবির তুলেছেন খুব কম।

শ্রীরামপুর থেকে এসেছেন একদল যুবক। তাঁদের চাই কমলা আবির। বড়বাজারের আবির বিক্রেতা দীপঙ্কর পাল দোকানের গুদাম থেকে এক বস্তা বার করে আনলেন। দীপঙ্করবাবু বলেন, “গত বার বিধানসভা নির্বাচনে ভোট গণনার আগে কমলা আবিরের সে রকম চাহিদা ছিল না বললেই চলে। এ বার এ রকম চাহিদা জানলে আরও কমলা আবির স্টকে রাখতাম।”

বিক্রেতারা জানালেন, গত বার বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগের কয়েক দিন চাহিদায় ছিল তৃণমূলের সবুজ আবির আর বামফ্রন্টের লাল আবির। বিজেপির কমলা আবির নিয়ে আগ্রহ ছিল না বললেই চলে। শহরাঞ্চলে হাতে গোনা কয়েক বস্তা কমলা আবির বিক্রি হত। এ বার কিন্তু শুধু কলকাতা শহর বা শহরতলিই নয়, বিজেপির কমলা আবির কিছু কিছু যাচ্ছে জেলা শহরেও। তবে জেলার দিকে কমলা আবিরের তুলনায় সবুজ আবিরের চাহিদা অনেক বেশি। সবুজ বনাম কমলা আবিরের লড়াইটা বরং খাস কলকাতা বা শহরতলিতেই।

আবির বিক্রেতা সমীরণ পালের দোকান থেকে মূলত জেলা শহরগুলোতেই বেশি বিক্রি হয়। তিনি বলেন, “কমলা আবিরের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে।”

কী রকম চাহিদা কমলা আবিরের? এক বিক্রেতা জানালেন, জেলার কয়েকটি শহর যেমন আসানসোল, শ্রীরামপুর, বালুরঘাট, কৃষ্ণনগর থেকে কমলা আবিরের চাহিদা রয়েছে। আর এক বিক্রেতা জানান, দু’দিন আগেই আসানসোলের পাইকারি ক্রেতারা ১০ বস্তা সবুজ আবির কিনেছেন। তবে তার সঙ্গেই নিয়ে গিয়েছেন ৪ বস্তা কমলা আবিরও। আগে যা কখনও হয়নি। নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা গত বুধবার ছোট ট্রাকে করে নিয়ে যান ১২ বস্তা সবুজ আবির। তাঁরাও নিয়েছেন ৫ বস্তা কমলা আবির। উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, হাওড়া, দমদম থেকেও আবির নিয়ে গিয়েছে ক্রেতারা। কলকাতায় বরং ১০ বস্তা সবুজ আবির বিক্রি হলে কমলা বিক্রি হয়েছে ৬ বস্তা। আর এক বিক্রেতা জয়ন্ত পাল বলেন, “ফল বেরোনোর আগের দিন আমাদের সব রকম আবিরের স্টক শেষ। কয়েকটা মাত্র দোকানে আবির পড়ে রয়েছে।”

স্টক ফুরিয়ে গিয়েছে, তা মানতে চাইছিলেন না দমদম থেকে আসা এক ক্রেতা অনিমেষ ঘোষ। দমদমের নাগেরবাজার এলাকায় আবির বিক্রি করেন তিনি। বললেন, “যে দল জিতবে, সেই দলের রঙের আবিরের চাহিদা প্রচুর বেড়ে যাবে। তখন জোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে আবির বিক্রি হবে। তাই এখন থেকে বেশি করে সবুজ আর কমলা আবির কিনে রাখতে চাইছিলাম।”

বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজারে এক বস্তা আবিরের দাম ছিল ৩৬০ টাকা। মহেশতলার তৃণমূল সমর্থক তপন জানা, শেখ বাবলি, রনি মোল্লারা দশ কিলো সবুজ আবির কিনলেন। তাঁরাই জানান, সন্ধে নাগাদ ওই এলাকা থেকে আরও সমর্থকেরা আসবেন আবির কিনতে। জেতার ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী তপনবাবুরা। সবুজ আর কমলার পাশাপাশি লাল আবিরের কেমন চাহিদা? দীনবন্ধু পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “গত বার বিধানসভা ভোটেও লাল আবিরের চাহিদা ছিল সবুজ আবিরের কাছাকাছি। এ বার লোকসভা ভোটে লাল রং অনেকটাই ফিকে।”

অন্য দিকে মল্লিকঘাট ফুল ব্যবসায়ীরা জানালেন, বিজেপি প্রার্থীরা জিতলে একে অপরকে পদ্ম দিয়ে অভিনন্দন জানাতে পারেন। তাই শুক্রবার ফল ঘোষণার দিনে মল্লিকঘাটে পদ্মের জোগান একটু বেশিই রাখবেন বলে জানিয়েছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “পদ্মের ফোটা শুরু হয়েছে। এই সময়ে তেমন পুজো নেই বলে পদ্মের চাহিদাও সে রকম নেই। তবে এ বারের লোকসভা ভোটে বিজেপি হাওয়ার কথা মাথায় রেখে ফুলবাজারগুলোতে কিছু অতিরিক্ত পদ্মের জোগান থাকবে।”

Abeer aryabhatta khan debashis das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy