খুলল না জেসপ। শুক্রবারই দমদমে এই কারখানার সব কর্মীর কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে গেল কম করেও ৬ মাস। কর্মীদের অবশ্য আশঙ্কা, এটা পিছোল অনির্দিষ্ট কালের জন্য। পবন রুইয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বকেয়া বেতন মেটানোর। তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা। পুজোর আগে জেসপের দরজা ফের খুলে দিয়ে রাজ্য সরকার প্রমাণ করতে চেয়েছিল, বন্ধ কারখানা চালু করার ব্যাপারে তারা আন্তরিক। কিন্তু এক মাসের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়ল রাজ্য সরকারের সেই উদ্যোগ।
শুক্রবার জেসপ কর্তৃপক্ষ এবং তাদের কারখানার ইউনিয়নগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। জেসপ কর্তৃপক্ষ শ্রমমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন যে, তাঁদের দুর্গাপুরের কারখানা থেকে ‘স্ক্র্যাপ’ বিক্রি করতে বাধা দিয়েছে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক কর্মী। ওই ‘স্ক্র্যাপ’ বিক্রি করেই কর্মীদের বকেয়া বেতন দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। বিক্রির জন্য তিনটি ট্রাকে ওই ‘স্ক্র্যাপ’ তোলাও হয়। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ট্রাকগুলি দুর্গাপুরের কারখানা থেকে বারই করতে দেয়নি। এ কারণে কর্মীদের বকেয়া বেতনের ব্যবস্থা করতে পারেননি জেসপ কর্তৃপক্ষ। মলয়বাবুর অবশ্য বক্তব্য, “জেসপ খোলার সময় কর্মীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের যে চুক্তি হয়েছে, তাতে ‘স্ক্র্যাপ’ বিক্রি করে বকেয়া বেতন দেওয়া হবে, এমন কথার উল্লেখ ছিল না।” জেসপের তরফে আজ যাঁরা বৈঠকে এসেছিলেন, তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় শ্রমমন্ত্রী এ দিন তাঁদের বলেছেন, সংস্থার মালিক পবন রুইয়া যেন আগামী বুধবারের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর আগে জেসপের দরজা খুলে রাজ্যের শিল্প-চিত্র উজ্জ্বল করতে চেয়েছিলেন। সেই মতো শিল্পমন্ত্রী এবং শ্রমমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গত ৯ অগস্ট বন্ধ জেসপের দরজা পুনরায় খোলে। কথা ছিল কারখানার মোট ৬৫০ জন কর্মীকে পর্যায়ক্রমে কাজে নেওয়া হবে। সব কর্মী কাজে যোগ দেবেন ১০ অক্টোবর। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা আগেই জেসপ কর্তৃপক্ষ রাজ্য শ্রম-কমিশনারকে জানিয়ে দেন যে, যে-হেতু কারখানা ঝাড়াই-মোছাই করে উৎপাদনের উপযুক্ত করে তোলা এখনও সম্ভব হয়নি, তাই সমস্ত কর্মীকে আগামী ৬ মাসের আগে কাজে নেওয়া সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষ ওই কথা বললেও জেসপের সব কর্মীই এ দিন কারখানায় ঢুকে পড়েন। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ৬ মাসে ঝাড়াই-মোছাই শেষ করে কারখানাকে উৎপাদনের উপযুক্ত করে তোলা হবে। এ কথা উল্লেখ করে কারখানার সিটু অনুমোদিত জেসপ মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অসিত সেন বলেন, “দু’মাসে সেই কাজ আদৌ এগোয়নি। সেপ্টেম্বরে আরও এক মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ছিল। তা-ও দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় আমরা কর্তৃপক্ষের উপর আর আস্থা রাখতে পারছি না। তাই চুক্তি মেনে আমরা সকলে আজই কাজে যোগ দিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy