Advertisement
E-Paper

ঘোষণাই সার, রমজানে রেশনে অমিল বাড়তি বরাদ্দ

প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু পূরণ হয়নি বরাদ্দের ছিটেফোঁটাও। রোজার মাসে, রেশনে মাথা পিছু বরাদ্দের চেয়ে বেশিই মিলবে চিনি, ভোজ্য তেল। বাড়তি আশ্বাস ছিল ছোলা এবং ময়দা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও জেলাতেই, বাড়তি বরাদ্দ দূর অস্ত্, বছরের অন্য সময়ে রেশন দোকানগুলিতে যে পরিমাণ তেল-চিনির জোগান থাকে খাদ্য দফতর এখন তাও সরবরাহ করতে পারছে না বলে অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০২:৫১

প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু পূরণ হয়নি বরাদ্দের ছিটেফোঁটাও।

রোজার মাসে, রেশনে মাথা পিছু বরাদ্দের চেয়ে বেশিই মিলবে চিনি, ভোজ্য তেল। বাড়তি আশ্বাস ছিল ছোলা এবং ময়দা।

কিন্তু কার্যক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও জেলাতেই, বাড়তি বরাদ্দ দূর অস্ত্, বছরের অন্য সময়ে রেশন দোকানগুলিতে যে পরিমাণ তেল-চিনির জোগান থাকে খাদ্য দফতর এখন তাও সরবরাহ করতে পারছে না বলে অভিযোগ।

যা শুনে, ঈদের তিন দিন আগে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পুনরাশ্বাস, “সব জেলায় এক সঙ্গে বাড়তি বরাদ্দ পাঠানো সম্ভব হয়নি।” তাঁর দাবি, রোজার মাস শুরু হওয়ার পরে প্রথম পনেরো দিন কয়েকটি জেলায় বরাদ্দ পাঠানো হয়েছিল। পরের দু-সপ্তাহে চিনি, ছোলা, ময়দার সরবরাহ হবে বাকি জেলাগুলিতে। কিন্তু তা কবে?

মালদহ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, রাজ্যের কোনও জেলা থেকেই, শুক্রবারও প্রতিশ্রুত বরাদ্দের খবর মেলেনি।

রেশন দোকান-মালিকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর অভিযোগ, “সরকারের আশ্বাস ছিল একরকম, আর বরাদ্দ মিলেছে অন্যরকম। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে।” তিনি জানান, সাধারণ গ্রাহকেরা প্রতিশ্রুতি মতো চিনি-ময়দা না পেয়ে ‘চোটপাট’ করছেন রেশন দোকানের মালিকদের উপরে। এই পরিস্থিতিতে ফের ‘রেশন-রোষের’ আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কেন?

খাদ্য দফতরের ঘোষণা ছিল, প্রতি সপ্তাহে মাথা পিছু ১২৫ গ্রামের বদলে রোজার মাসে বিপিএল এবং অন্ত্যোদয় তালিকাভূক্ত গ্রাহকরা ২৬ টাকা কেজি দরে ৪০০ গ্রাম করে চিনি পাবেন। পরিবার পিছু ভোজ্য তেলের বরাদ্দও এক লিটার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২ লিটার। ময়দা এবং ছোলা রেশনে মেলে না। ঈদের আগে যথাক্রমে ৩৪ টাকা এবং ১৯ টাকা কেজি দরে মাথা পিছু ২০০ গ্রাম করে ছোলা এবং ময়দা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল খাদ্য দফতর।

ফেডারেশন সূত্রে দাবি, বাড়তি বরাদ্দের আশ্বাসই সার। খাদ্য দফতর যে পরিমাণ চিনি পাঠাচ্ছে তাতে মাথাপিছু বড়জোর ১০০ থেকে ১১৫ গ্রামের বেশি চিনি দেওয়া সম্ভব নয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং এলাকায় গ্রাহকদের মিলছে আরও কম, সাকুল্যে ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম চিনি। মুর্শিদাবাদে ঘাটতির পরিমাণ আরও বেশি। সেখানে অধিকাংশ জায়গায় ২৫ থেকে বড়জোর ৪০ গ্রাম চিনি মিলছে। তাও মাত্র দু’সপ্তাহ। ওই দুই জেলাতেই ময়দা বা ছোলার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন গ্রামবাসীরা। ক্যানিংয়ের এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল সাঁপুই বলেন, “মহকুমায় ১২ লক্ষ গ্রাহক। সরকারি ঘোষণা মেনে চিনি দিতে গেলে ১০ শতাংশ গ্রাহককেও তা দেওয়া যাবে না।” খাদ্য দফতরের সিআই সমীর ইন্দু স্বীকার করে নিয়েছেন, “আমাদের কাছে পর্যাপ্ত চিনি-ময়দা-ছোলার জোগান নেই।

তাই সরকারি প্রতিশ্রুতি মতো বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।” মুর্শিদাবাদের এমআর ডিলারদের সংগঠনের সভাপতি সরিৎ চৌধুরীর প্রশ্ন, “রোজার মাসে সরকার তো বাড়তি বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেই দায় সেরেছে। কিন্তু সরবরাহ কোথায়?”

বীরভূম জুড়েও একই চিত্র। চিনি, ছোলা, তেল, ময়দাসরকারের ঘোষিত বরাদ্দের ছিটেফোঁটাও বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার কিংবা মালদহেও সরকারি প্রতিশ্রতি ‘মুখের কথা’ই থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় রেশন ডিলারেরা। মালদহের রেশন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রমোদচন্দ্র ঘোষের আক্ষেপ, “সরকার তো ঘোষণা করেই খালাস। সাধারণ রেশন গ্রাহক তো আমাদের রেয়াত করবেন না। তাঁরা ভাববেন আমরা চোর!”

এ অবস্থায় রাজ্য সরকার কী ভাবছে?

rationing system ramjan ALL INDIA FAIR PRICE SHOP DEALERS' FEDERATION
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy