Advertisement
E-Paper

জেলের মন্দির টুনিতে সাজাবেন মদন

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিষ্ণুপুরে একটি মন্দির সংস্কারে সারদার টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। এখন জেলের মধ্যে মন্দির সংস্কারে মন দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র! আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কর্তারা জানিয়েছেন, মন্দির ওয়ার্ডটি বেশ পছন্দ হয়েছে মন্ত্রীর। জেল কর্তৃপক্ষকে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ওখানে রাধামাধবের মন্দিরটি সংস্কার করে টুনি বাল্ব দিয়ে সাজিয়ে দেবেন তিনি। বন্দিরা আরও সুন্দর পরিবেশে ভগবানের নামগান করতে পারবেন।

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০০

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিষ্ণুপুরে একটি মন্দির সংস্কারে সারদার টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। এখন জেলের মধ্যে মন্দির সংস্কারে মন দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র! আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কর্তারা জানিয়েছেন, মন্দির ওয়ার্ডটি বেশ পছন্দ হয়েছে মন্ত্রীর। জেল কর্তৃপক্ষকে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ওখানে রাধামাধবের মন্দিরটি সংস্কার করে টুনি বাল্ব দিয়ে সাজিয়ে দেবেন তিনি। বন্দিরা আরও সুন্দর পরিবেশে ভগবানের নামগান করতে পারবেন।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি আলিপুর জেলে মন্দির, মসজিদ এবং গির্জা রয়েছে। বন্দিরা সেখানে প্রার্থনাও করেন। ছ’নম্বর ওয়ার্ডে রাধাকৃষ্ণের মন্দির থাকায় সেটি মন্দির ওয়ার্ড হিসেবেই পরিচিত। তবে অনেক দিন ধরেই সেটি ফাঁকাই পড়ে ছিল। এল্প দিনের মধ্যেই কিছু ভিআইপি বন্দি আসতে পারেন বুঝে জেল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ওয়ার্ডটির সংস্কারে উদ্যোগী হন। ওই ওয়ার্ডের একটি অংশ ভাল করে মেরামত করে সেখানেই রাখা হয়েছে মন্ত্রীকে। ওয়ার্ডের মধ্যে ‘ফাইবারের পার্টিশন’-এ তৈরি করা হয়েছে মন্ত্রীর জন্য পৃথক সেল। শৌচাগারে বসেছে কমোড। জেল সূত্রের খবর, মদনের সঙ্গে এখন ওই ওয়ার্ডে রয়েছেন ১১ জন বন্দি। তার মধ্যে দু’জন সাজাপ্রাপ্ত। বাকিরা বিচারাধীন।

জেলের কর্তারা জানিয়েছেন, অন্য বন্দিদের সঙ্গে খোশগল্প করে দিন কাটাচ্ছেন মন্ত্রী। কখনও-সখনও বইপত্র পড়ছেন। বেশির ভাগটাই ব্যোমকেশ বা ফেলুদা। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই গত ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করেছে মদনকে। ১৯ ডিসেম্বর আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত তাঁকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠায়। কিন্তু ১৯ তারিখ জেলে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে পাঠানো হয় এসএসকেএম-এ। সারদা মামলায় বাকি বন্দিদের জেলে রাখা বলেও মন্ত্রী মদনকে কেন হাসপাতালে আয়েসে থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হচ্ছে এ নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়। অনেক টানাপড়েনের পরে ২৭ ডিসেম্বর এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন মদনকে আর হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন নেই। পর দিন ভোরে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে জেল হাসপাতালে এক রাত কাটানোর পরে মন্দির ওয়ার্ড হয়েছে মন্ত্রীর ঠিকানা।

জেলের এক কর্তার কথায়, “প্রথম ক’টা দিন মন্ত্রী খানিকটা মনমরা ছিলেন। এখন অনেকটা মানিয়ে নিয়েছেন। প্রথম দিকে খেতেই চাইছিলেন না। এখন খাবার-দাবার খাচ্ছেন।” এক জেল-কর্তা বললেন, “সেল থেকে বিশেষ বেরোতে চাইছেন না মন্ত্রী। জেলে তিনি বাড়তি সুযোগ পাচ্ছেন, সিবিআই এই অভিযোগ তোলার পরে, এখন তিনি অনেক সাবধানী।”

তবে জেলে খানিকটা ধাতস্থ হওয়ার পরেই সেখানকার ভালমন্দের খোঁজ নিতে শুরু করেছেন মদন। জেলের কর্মীদের জানিয়েছেন, রাধাকৃষ্ণের মন্দিরটি তিনি ভাল করে সাজিয়ে দিতে চান। জেলের এক কর্মীর কথায়, “মন্ত্রী বলেছেন, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি ছ’নম্বর ওয়ার্ডের মন্দির সংস্কার করে ভাল ভাবে সাজিয়ে দেবেন।”

কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সঙ্গে মদনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ দীর্ঘদিন ধরেই। ভবানীপুর-কালীঘাট ও নিজের বিধানসভা কেন্দ্র কামারহাটির ডজনখানেক দুর্গাপুজো কমিটির সভাপতিও তিনি। এমনকী, ধর্মতলায় নিজের অফিস চত্বরেও তিনি রামকৃষ্ণ-সারদা এবং কালীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন। মদন-ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “মন্দির সংস্কারে এগিয়ে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন মদনদা। কিন্তু সামাজিক কাজে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় তবুও পিছপা নন তিনি। জেলে মন্দির সংস্কারের ভাবনায় তারই প্রতিফলন।”

madan mitra alipore jail saradha scam atri mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy