Advertisement
E-Paper

টাকা উধাও প্রাক্তন মন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে

জালিয়াতি চক্রের ফাঁদে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। অশোকবাবুর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার তাঁর মোবাইলে ফোন করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলে, নিরাপত্তার কারণে প্রাক্তন মন্ত্রীর এটিএম কার্ড ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন পিন নম্বর দেওয়া হচ্ছে। তবে সে জন্য কার্ড নম্বর আর পুরনো পিন নম্বর দরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪৯
মোবাইলে টাকা তুলে নেওয়ার এসএমএস দেখাচ্ছেন অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

মোবাইলে টাকা তুলে নেওয়ার এসএমএস দেখাচ্ছেন অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

জালিয়াতি চক্রের ফাঁদে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য।

অশোকবাবুর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার তাঁর মোবাইলে ফোন করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলে, নিরাপত্তার কারণে প্রাক্তন মন্ত্রীর এটিএম কার্ড ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন পিন নম্বর দেওয়া হচ্ছে। তবে সে জন্য কার্ড নম্বর আর পুরনো পিন নম্বর দরকার। ফোনে ওই নম্বরগুলি জানাতেই পরপর ছ’দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ২৭,৯৭৮ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ করেছেন অশোকবাবু। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এটিএম কার্ডটি আপাতত ‘ব্লক’ করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “তদন্তে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এ রকম পুরনো কয়েকটি অভিযোগের সঙ্গে এই অভিযোগের কিছু যোগাযোগ পাওয়া গিয়েছে।” ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, অ্যাকাউন্ট থেকে কী ভাবে টাকা তোলা হয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে।

ব্যাঙ্ক এবং পুলিশ-কর্তাদের বক্তব্য, এটিএমের পিন-নম্বর অত্যন্ত গোপনীয় বলে গ্রাহকদের তা কাউকে না জানাতে পরামর্শ দেওয়া হয়। বিভিন্ন এটিএম-কিয়স্কে বা ব্যাঙ্কের ভিতরে এ ব্যাপারে পোস্টার লাগানো হয়। গ্রাহকদের এসএমএস-ও পাঠানো হয়। এক পুলিশ-কর্তা বলেন, “জনতাকে সচেতনের জন্য প্রচার চালানো হয়। অশোকবাবুর মতো প্রাক্তন মন্ত্রীরই যদি এমন ভুল হয়, তা হলে সাধারণ গ্রাহকদের কী-ই বা বলা যায়!”

ঠিক কী হয়েছিল এ দিন? অশোকবাবুর বক্তব্য, এ দিন দুপুরে পার্টি-অফিস থেকে তিনি বাড়ি ফেরার পরেই মোবাইলে ফোন করে এক অপরিচিত। তিনি বলেন, “নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সে লোকটা এটিএম কার্ড ব্লক করা হয়েছে দাবি করে পুরনো পিন নম্বর এবং এটিএম কার্ডের নম্বর জানতে চাওয়ায় অল্পবিস্তর সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু যে ভাবে লোকটি কথা বলছিল এবং চাপ দিচ্ছিল তাতে বিভ্রান্ত হয়ে কার্ড নম্বর দিয়ে ফেলি। পুরনো পিন নম্বর না দিলে নতুন নম্বর দেবে না বলে লোকটা পিন নম্বরও জেনে নেয়।” পিন নম্বর দেওয়ার কিছু পরেই অশোকবাবুর মোবাইলে টাকা কাটার এসএমএস আসতে থাকে।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের একটি মোবাইল নম্বর থেকে অশোকবাবুর কাছে ফোন এসেছিল। পরে দিল্লি ও বেঙ্গালুরু থেকে অন-লাইনে অশোকবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে কেনাকাটা করা হয়।

তদন্তকারীরা বলছেন, ব্যাঙ্কের লোক সেজে ফোন করে গ্রাহককে তাঁর কার্ডের পিন ‘ব্লক’ হওয়া বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ হয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে কার্ডের গোপন তথ্য জেনে নিচ্ছে জালিয়াতেরা। তারপরে স্মার্ট ফোন মারফত মুহূর্তে সেই অ্যাকাউন্টের টাকা সরিয়ে ফেলছে অন্য অ্যাকাউন্টে। কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই ‘ঝাড়খণ্ড গ্যাং’ নামে এ ধরনের এক চক্রের সাত জনকে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করেছে।

সিআইডি-র ডিআইজি (অপরাশেনস) দিলীপ আদক বলেন, “গ্রাহকদের সবার আগে সচেতন হতে হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড সম্পর্কিত তথ্য কখনওই ফোনের মাধ্যমে অজ্ঞাতপরিচয়কে দেওয়া উচিত না। ফোনে যদি কেউ অ্যাকাউন্ট বা এটিএম কার্ড ব্লকড হয়েছে বলে জানায়, তা হলে সরাসরি নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করা উচিত।”

ashok bhattacharya shiliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy