Advertisement
E-Paper

দেহরক্ষী ফেরালেন অধীর, প্রহরী কমলো হুমায়ুনের

তাঁর ‘দাদা’র পুরনো ‘আস্থাভাজন’ দুই দেহরক্ষীকে আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বুধবার কলকাতা থেকে ফিরে তিনি দেখেন বিনা নোটিসেই তাঁর নিজের বাড়িতে নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। ‘দাদা’ অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক অবশ্য তলানিতে এসে ঠেকেছে। কিন্তু বছর দুয়েক আগেও কংগ্রেস ছেড়ে শাসকদল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে অধীরই ছিলেন তাঁর দাদা, রাজনৈতিক ‘গুরু’। অধীরও তাঁকে ‘ভাই’ বলেই মনে করতেন। ঘটনাচক্রে সেই ‘দাদা-ভাই’, অধীর এবং মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীরের রক্ষী নিয়েই এখন বিতর্ক তুঙ্গে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০৩:২৭

তাঁর ‘দাদা’র পুরনো ‘আস্থাভাজন’ দুই দেহরক্ষীকে আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

বুধবার কলকাতা থেকে ফিরে তিনি দেখেন বিনা নোটিসেই তাঁর নিজের বাড়িতে নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ।

‘দাদা’ অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক অবশ্য তলানিতে এসে ঠেকেছে। কিন্তু বছর দুয়েক আগেও কংগ্রেস ছেড়ে শাসকদল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে অধীরই ছিলেন তাঁর দাদা, রাজনৈতিক ‘গুরু’। অধীরও তাঁকে ‘ভাই’ বলেই মনে করতেন।

ঘটনাচক্রে সেই ‘দাদা-ভাই’, অধীর এবং মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীরের রক্ষী নিয়েই এখন বিতর্ক তুঙ্গে।

হুমায়ুন অবশ্য তাঁর নিরাপত্তা বলয় থেকে তিন পুলিশ কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে বিশেষ তোপ দাগেননি। কিছুটা স্বভাববিরুদ্ধ ভাবেই তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা বলছেন, “এ ব্যাপারে আমি আর কী বলব। সরকার মনে করেছিল বলেই বাড়িতে চার-পাঁচ জন নিরাপত্তারক্ষী দিয়েছিল। এখন মনে করছে প্রয়োজন নেই। তাই তুলে নিয়েছে।’’ তবে ঘনিষ্ঠদের কাছে হুমায়ুন অবশ্য এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই আমার বাড়িতে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছিল। কেন তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হল তা জানতে সংশ্লিষ্ট মহলেই প্রশ্ন রাখব।”

এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের যুক্তি, “ভোটের সময় যে আধা সেনারা এসেছিল, তাঁরা ফিরে গিয়েছেন। পুলিশকর্মীর অভাব আছে বলেই প্রাক্তন মন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষীদের দু’জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ওঁর বাড়িতে এখনও তো কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। সবাইকে তো সরানো হয়নি।”

তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে ‘অভিযুক্ত’ জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুনের সম্পর্ক যে ভাল নয় তা সর্বজনবিধিত। রাজ্যের শাসকদলের হয়ে ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগে ভোটের আগেই পাঁচ পুলিশ সুপারকে বদলি করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকায় হুমায়ুন কবীরও ছিলেন। ভোট মিটতেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে অবশ্য পুনর্বহাল করা হয়।

পুরনো পদে ফিরেই হুমায়ুন প্রথমেই অধীরের দুই পুরনো নিরাপত্তারক্ষীকে বদলি করে দেন। অধীর সে সময়ে দিল্লিতে ছিলেন। ক্ষুব্ধ অধীর অভিযোগ করেছিলেন, ওই দুই নিরাপত্তারক্ষী গত আট বছর ধরে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। হঠাৎ তাঁদের সরিয়ে নেওয়ার পিছনে পুলিশ সুপার তথা খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ‘ঘোর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। অধীর বলেন, “আমাকে খুনের চক্রান্ত করা হচ্ছে। তাই না বলে কয়েই পুরনো দুই রক্ষীকে সরানো হল।”

বৃহস্পতিবার জেলায় ফেরার পরে অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির জন্য অন্য দুই নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে চেয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। অধীর তাঁদের নিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় আমি বাঁচতে চাই না। তাঁর দেওয়া নিরাপত্তা আমার প্রয়োজন নেই। আমার নিরাপত্তার বিষয়টি আমি লোকসভার স্পিকারকে জানাব।”

মন্ত্রী থাকাকালীন জেলা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন হুমায়ুন কবীরও। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিরোধী কংগ্রেসের হয়ে ‘তাঁবেদারি’ করছেন পুলিশ সুপার। সেই বাগ-বিতণ্ডা ক্রমে থিতিয়ে এলেও এ দিন তাঁর মানিক্যহার গ্রামের নিরাপত্তা রক্ষী কমিয়ে দিয়ে সেই বিতর্কই ফের উস্কে দিলেন ওই পুলিশ কর্তা।

adhir chowdhury humayun kabir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy